ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঢাকা থেকে পায়রাবন্দর পর্যন্ত রেললাইন নিয়ে যাব: প্রধানমন্ত্রী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০২০
ঢাকা থেকে পায়রাবন্দর পর্যন্ত রেললাইন নিয়ে যাব: প্রধানমন্ত্রী

টাঙ্গাইল: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ঢাকা থেকে বরিশাল-পটুয়াখালী হয়ে পায়রাবন্দর পর্যন্ত আমরা রেললাইন নিয়ে যাব। কাজ আমরা করব।

উদ্যোগ নিয়েছি। বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের জন্য পণ্য পরিবহন ও মানুষের যোগাযোগের জন্য এটা সহজ হবে।

রোববার (২৯ নভেম্বর) সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ‘শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর নির্মাণ’ কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিমান, রেল ও সড়ক পথের সার্বিক উন্নয়নে আমরা ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। তাতে অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে। বাংলাদেশে যোগাযোগ নেটওয়ার্ক আধুনিক, উন্নত ও বহুমুখী করার দিকে নজর রেখে আমরা কাজ করছি। যাতে আর্থসামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখে।
 
তিনি বলেন, দেশটা আমাদের। আমাদের জানতে হবে, দেশের উন্নয়ন কীভাবে হবে। ৭৫’ পরবর্তী সময়ে যারা ক্ষমতায় এসেছিল তাদের দেশের প্রতি কোনো দায়িত্ববোধ ছিল না। কিন্তু আমরা যখন বিরোধী দলে ছিলাম তখনও দেশের উন্নয়নের কথা ভেবেছি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু নির্মাণ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু নির্মাণের ফলে মানুষের অনেক সুযোগ-সুবিধা বাড়বে। দেশের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের ব্যাপক উন্নতি হবে।

আরও পড়ুন...আমি আনন্দিত, আলাদা একটি রেলসেতু নির্মাণ হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী

স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাপান আমাদের অকৃত্তিম বন্ধু। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালে জাপান সফরে গিয়ে যমুনা নদীর উপর সেতু নির্মাণের জন্য জাপানের প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছিলেন। আমিও ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় থাকাকালে জাপান সফরে গিয়ে রূপসা ও পদ্মায় সেতু নির্মাণে সহায়তা দেওয়ার জন্য জাপানকে অনুরোধ করেছিলাম।

তিনি বলেন, টাঙ্গাইলে কোনো রেললাইন ছিল না। আমরাই প্রথম টাঙ্গাইলে রেল লাইন দেই। রেল পণ্য পরিবহনে বিশেষ ভূমিকা রাখছে।

বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমপ্রান্তে সিরাজগঞ্জের সায়দাবাদে আয়োজিত ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব সেলিম রেজা। বক্তব্য দেন, ঢাকাস্থ জাপান দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি। অনুষ্ঠানে রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ের ভিডিও প্রদর্শন করা হয়।

সেতুর পশ্চিমাংশের অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী, হাবিবে মিল্লাত এমপি, ডা. আব্দুল আজিজি এমপি, মমিন মণ্ডল এমপি, তানভীর ইমাম এমপি ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন।

রেলওয়ে সূত্রমতে, বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে নির্মিত হচ্ছে ডাবল লেনের ৪ দশমিক ৮০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রেল সেতু। জাপান ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই রেল সেতুটি নির্মাণ করা হবে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে জাইকা। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের মধ্যে মতান্তরে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে কাজ সমাপ্ত হবে। এই সেতু দিয়ে ১০০ কিলোমিটার বেগে একইসঙ্গে দুটি ট্রেন চলাচল করতে পারবে। পাশাপাশি সব ধরনের মালবাহী ট্রেন অনায়াসে চলাচল করতে পারবে।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন বঙ্গবন্ধু সেতু চালুর মধ্য দিয়ে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সড়ক ও রেল যোগাযোগ চালু হয়। বঙ্গবন্ধু সেতুতে লাগানো রেললাইন দিয়ে প্রথমে ব্রডগেজ ও মিটারগেজের চারটি ট্রেন দৈনিক আটবার পারাপারের পরিকল্পনা থাকলেও যাত্রী চাহিদা বাড়তে থাকায় সেতুর ওপর দিয়ে চলাচলকারী ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হয়। ২০০৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতুতে ফাটল দেখা দেওয়ায় সেতুর ওপরে চলাচলকারী ট্রেনের গতিসীমা কমিয়ে দেওয়া হয়।

বর্তমানে ৩৮টি ট্রেন নিয়মিত স্বল্প গতিতে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হলেও সময় অবচয়ের পাশাপাশি প্রায়ই সিডিউল বিপর্যয় ঘটছে, বাড়ছে যাত্রী ভোগান্তি।
ট্রেন যোগাযোগ ব্যবস্থা নির্বিঘ্ন করতে বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে নির্মাণ করা হচ্ছে দেশের সর্ববৃহৎ ডেডিকেডেট রেলসেতু। এ সেতু চালু হলে প্রতিদিন ৮৮টি ট্রেন ১০০ কিলোমিটার বেগে চলাচল করতে পারবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০২০
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।