ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

যমুনা নদী থেকে ৩ জুয়াড়ির মৃতদেহ উদ্ধার, দুই পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার 

ডিসট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০২০
যমুনা নদী থেকে ৩ জুয়াড়ির মৃতদেহ উদ্ধার, দুই পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার  নিখোঁজ জুয়ারির মৃতদেহ উদ্ধার করছে পুলিশ (বামে), জুয়া কেলেঙ্কারির ঘটনায় প্রত্যাহারকৃত দুই পুলিশ সদস্য (ডানে)/ছবি: বাংলানিউজ

জামালপুর: জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চলে অর্ধকোটি টাকার জুয়ার আসরে সংঘর্ষের ঘটনায় যমুনা নদীতে নিখোঁজ তিন জুয়াড়ির ভাসমান মৃতদেহ পাওয়া গেছে।

রোববার (২৯ নভেম্বর) বিকেলে ঘটনাস্থল থেকে দুইজন ও ৩০ কি.মি. দূরে অপরজনের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

উদ্ধারকৃতরা হলেন- সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের পাখিমারা গ্রামের শামছুল হকের ছেলে ছানোয়ার হোসেন ছানু (৪০), টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার শাখারিয়া গ্রামের মৃত জমসের খাঁনের ছেলে হাফিজুর রহমান খাঁন (৪৫) ও ভুয়াপুর উপজেলার গোবিন্দাসী গ্রামের ফজল মিয়া (৪০)।

এর মধ্যে ছানোয়ার হোসেন ও ফজল মিয়ার মৃতদেহ সংঘর্ষের ঘটনাস্থল সরিষাবাড়ী উপজেলার বাশুরিয়া চরাঞ্চল থেকে রোববার বিকেল ৫টার দিকে এবং হাফিজুর রহমানকে প্রায় ৩০ কি.মি. দূরে টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার বাসিদখল চরের যমুনা নদীর তীর থেকে দুপুর ১টার দিকে মৃত অবস্থায় অবস্থায় দেখতে পায় স্থানীয়রা।

পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহগুলো উদ্ধার করে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মৃতদেহ উদ্ধারের পর সরিষাবাড়ী থানা পুলিশ সরিষাবাড়ীর সীমানায় পাওয়া দুইজনের মৃতদেহ মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ আবু মো. ফজলুল করীম জানান, গোপালপুর সীমানায় পাওয়া লাশটি গোপালপুর থানার পুলিশ উদ্ধার ও ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করবে। তিনি বলেন, দু’টি মৃতদেহ আমরা উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করছি।

এদিকে নিয়মিত জুয়ার আসর বসানোকে কেন্দ্র করে দুই পুলিশকে ক্লোজড করেছে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়। শনিবার সন্ধ্যায় তারাকান্দি পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক ইউনুস আলী ও কনস্টেবল মনির উদ্দিনকে জামালপুর পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এসআই ইউনুস আলী ও কনস্টেবল মনির উদ্দিনের মধ্যস্থতায় তারাকান্দি তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ মুহাম্মদ তরিকুল ইসলাম প্রতিদিন মোটা অঙ্কের টাকা মাসোহারা নিয়ে উপজেলার পিংনা ইউনিয়নে চর বাশুরিয়া এলাকার যমুনায় জেগে ওঠা চরে দীর্ঘদিন ধরে জুয়ার আসর চালাতে দিতেন। এখানে প্রতিদিন দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত জামালপুর, সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইলের বিভিন্ন গ্রাম থেকে ৪০-৫০ জন জুয়াড়িরা প্রতিদিন দুপুর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত প্রায় অর্ধকোটি টাকার জুয়া খেলা চলতো।

জুয়ার আসরে আধিপত্য বিস্তার ও টাকার ভাগ-বাটোয়ারাকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জুয়াড়িদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে প্রায় ১০ জন আহত হন। ঘটনাস্থলেই তিন জুয়াড়ি গভীর যমুনায় নিখোঁজ হয়ে যান।

এ ব্যাপারে জামালপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শিবলী সাদিক বলেন, ‘জুয়ার আসর চালানো নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় তদন্ত ও অভিযুক্তদের আটকের চেষ্টা চলছে। ’ এদিকে দুই পুলিশ সদস্য প্রত্যাহারের সঙ্গে জুয়ার সম্পর্ক থাকার বিষয়টি তিনি স্বীকার না করলেও 'কর্মস্থল পরিবর্তন পুলিশের বিভাগীয় কার্যক্রমেরই অংশ’- বলে মন্তব্য করেন।

বাংলাদেশ সময়: ২২৫১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০২০
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।