ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সৌর বিদ্যুৎতের আলোয় আলোকিত রাঙামাটির পাহাড়ি সড়ক

মঈন উদ্দীন বাপ্পী, ডিস্ট্রিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০২০
সৌর বিদ্যুৎতের আলোয় আলোকিত রাঙামাটির পাহাড়ি সড়ক

রাঙামাটি: অপরূপ পাহাড়ি অরণ্যের জেলা রাঙামাটি। এ জেলার সৌন্দর্যের প্রেমে পড়েনি এমন লোকের সংখ্যা খুব কম রয়েছে।

সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ হলেও পুরো জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনো পূর্ণতা পায়নি। বিশাল পাহাড়ের কারণে চারদিক দুর্গম। দেশের অন্যান্য স্থানের সঙ্গে এই জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পাহাড় কেটে সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে।

পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে নির্মিত সড়কগুলো আঁকাবাঁকা হওয়ায় অত্যন্ত বিপদজনক এবং ঝুঁর্কিপূর্ণ। বিশেষ করে জেলার বাইরে থেকে বেড়াতে আসা ট্যুরিস্ট পরিবহনগুলোর জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বলা চলে।

এ সড়কে তাদের গাড়ি চালানোর জন্য কোনো অভিজ্ঞতা না থাকায় প্রায় সময় তারা সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। দিনের আলোতে চলাচলে তেমন কোনো বেগ পেতে না হলেও রাতের আঁধার নামলে সড়কগুলো বিপদজনক হয়ে ওঠে। এক প্রান্ত থেকে গাড়ি এলে অন্য প্রান্ত থেকে দেখা যায় না। যে কারণে হরহামেশা ঘটে সড়ক দুর্ঘটনা।

এছাড়াও সড়কগুলোতে আরও সমস্যা রয়েছে। রাত নামার সঙ্গে সঙ্গে অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা সড়ক অবরোধ করে ডাকাতি করে। যে কারণে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীরও তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়।

তাই সচেতন মহলসহ স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবি ছিলো- জেলা সদরের রাঙামাটি-চট্টগ্রাম আঁকাবাঁকা সড়কগুলোতে যদি লাইটিং ব্যবস্থা এবং নিরাপত্তা জোরদার করা যায় তাহলে সড়ক দুর্ঘটনা যেমন অনেকাংশে কমে আসবে তেমনি ডাকাতির ভয়ও থাকবে না। জোরদার হবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

এমন দাবিতে রাঙামাটি সদর উপজেলা পরিষদ এইবার বিপদজনক এবং ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকা সড়কগুলোতে সৌর শক্তি দ্বারা পরিচালিত সোলার স্ট্রিট লাইটের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। বর্তমানে লাইটগুলো যেমন রাতের অন্ধকারে আলো দিচ্ছে তেমনি বাঁকা সড়কে বাড়িয়েছে আলাদা সৌন্দর্য। এমন আলো দেখে তাই ট্যুরিস্টরা বেজায় খুশি।
বর্তমানে লাইটের আলোর ফলে যানবাহন ও মানুষের চলাচল অনেক নিরাপদ হয়ে উঠেছে। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জ্বলে ওঠে সৌরবাতি। লোড শেডিংয়ের ঝামেলা না থাকায় এসব সড়ক বাতিগুলো আলো দেয় সারারাত। আবার সকালে আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বাতিগুলো।

জেলা সদরের মানিকছড়ি এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমান সরকার রাঙামাটির ঝুঁকিপূর্ণ সড়কে লাইটের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। এখন থেকে সড়ক দুর্ঘটনা যেমন কমে আসবে তেমনি নিরাপত্তাও জোরদার হবে।
 
রাঙামাটি উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়, নয় লাখ টাকারও বেশি টাকা ব্যয়ে জেলা সদরের রাঙামাটি-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ১৩ কিলোমিটার এলাকার ১৬টি পয়েন্টের ঝুঁকিপূর্ণ সড়কে সোলার স্ট্রিট লাইট স্থাপন করা হয়েছে।

রাঙামাটি সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শহীদুজ্জামান মহসিন রোমান বাংলানিউজকে বলেন, স্থানীয় বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণের লক্ষ্যে রাঙামাটি আসনের সংসদ সদস্য ও খাদ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার রাঙামাটি -চট্টগ্রাম মহাসড়কে সড়ক বাতি স্থাপনে বিশেষ উদ্যোগ নেন।

চেয়ারম্যান আরও বলেন, পর্যটন শহর রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের ১৩ কিলোমিটার পাহাড়ি এলাকায় যেখানে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক রয়েছে এবং যেখানে যানবাহন ও মানুষের চলাচল রয়েছে সেই সব স্থানে সৌর প্যানেলের মাধ্যমে আলোর ব্যবস্থা পৌঁছানো হয়েছে। রাতের আঁধারে সৌর বিদ্যুতের আলোয় নিরাপদে যানবাহন ও মানুষ চলাচল করার জন্য উপজেলা প্রশাসন এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

স্থানীয়রা বলছে, মহাসড়কে সৌরবিদ্যুৎ স্থাপন বিষয়টি সময়োপযোগী পদক্ষেপ। সৌর লাইটের আলোর কারণে রাতের আঁধারে মহাসড়কে এখন যানবাহন ও পথচারীদের চলাচলে স্বস্তি ফিরে এসেছে। এই সোলার লাইটের কারণে গ্রামীণ মানুষের জীবনযাত্রার মানও উন্নয়ন হয়েছে। সড়কে লাইটের সংখ্যা আরও বাড়ানোর দাবি করেন তারা।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০২০
আরএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।