ঢাকা: আধুনিক যন্ত্রপাতির বদৌলতে শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে শীতকালীন সবজি চাষের মহোৎসব। ভোর হলেই কৃষি সরঞ্জাম নিয়ে দলে দলে মাঠে ছুটে যাচ্ছেন কৃষকরা।
চাঁদপুর জেলার হাইমচর এলাকার বাংলাবাজার গ্রামে ঘুরে দেখা যায়, ভোরে ঘন কুয়াশার মধ্যে গরু টানা লাঙ্গল ও মই দিয়ে একজন কৃষক জমি চাষ করছেন। বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতির ব্যবহারে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে সনাতনী এই চাষ পদ্ধতি।
আশির দশক থেকে দেশে পাওয়ার টিলার ও ট্রাক্টর ব্যবহার শুরু হয়। এর মাধ্যমে কৃষিতে বিপ্লব ঘটেছে দেশের কিছু কিছু এলাকায়। কিন্তু ঐতিহ্যবাহী কাঠের লাঙল দিয়েই এখনও চাষাবাদ করেন দেশের বেশিরভাগ কৃষক। তবে যান্ত্রিক লাঙল দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে সারা দেশে। এর মাধ্যমে অতি সহজে কম সময়ে জমি চাষ করা যায়।
শনিবার (১২ ডিসেম্বর) হাইমচরের কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ভোর থেকে কৃষকরা মাঠে নানা রকম সবজি চাষ করার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। লাল শাক, মূলা শাক, পালং শাক, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মূলাসহ বিভিন্ন রকমের শাকসবজি চাষে দিনভর কাজ করে যাচ্ছেন কৃষকরা।
হাইমচরে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ক্ষেত থেকে টাটকা সবজি সংগ্রহ করতে অনেকেই ক্ষেতে আসছেন। আবার অনেকেই সকালে হাঁটতে বের হয়েছেন। কেউ কেউ আবার হাঁটতে বের হয়ে ক্ষেত থেকে টাটকা সবজি কিনছেন।
হাইমচরের কৃষক খলিল মিয়া। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ক্ষেতে ফসল ফলাচ্ছেন। বাংলানিউজকে খলিল বলেন, প্রতিদিন তিনি তার স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে সারাদিন মাঠে কাজ করেন। শীত এলেই তারা দু’জনে মিলে চাষাবাদ করেন। এতে যা টাকা উপার্জন হয় তা দিয়ে কোনো মতে তাদের সংসার চলে।
তিনি বলেন, তার কৃষি জমিতে বছরের কয়েক মাস বর্ষার পানি জমে থাকার কারণে চাষাবাদ করতে পারেন না তিনি। বিশেষ করে শীত মৌসুমে জমি শুষ্ক থাকায় চাষাবাদ করতে সুবিধা হয়। এ সময় চাষাবাদ করে যা উপার্জন হয় তা দিয়েই সারাবছর সংসার চলে এ দম্পতির।
খলিল মিয়ার মতো আরও অনেকেই হাইমচরের বিভিন্ন জমিতে চাষাবাদ করেন। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে কয়েক মাস পানিতে জমি তলিয়ে যাওয়ার কারণে সেখানে তারা চাষাবাদ করতে পারে না। বর্ষা চলে যাওয়ার পরে আবার জমি উর্বর হওয়ায় সেখানে শীতকালীন সবজির ভালো ফলান হয় বলেও জানান কৃষক খলিল।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২০
আরআইএস