ঢাকা: বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রক্তের বন্ধনে আবদ্ধ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী। করোনার ভ্যাকসিন ভারত সরকার যখন পাবে তখন বাংলাদেশকেও পেতে সহযোগিতা করবে বলেও তিনি জানান।
বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় পরিদর্শন ও দলটির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়ে একথা বলেন তিনি।
দোরাইস্বামী বলেন, আজকের এই সুসম্পর্কের সূচনা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এরই ধারাবাহিকতায় দু’দেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়েছে, যা ভবিষ্যতে আরো জোরদার হবে।
এসময় তিনি করোনায় নিহত আওয়ামী লীগের নেতাদের স্মরণ করেন।
হাইকমিশনার বলেন, করোনার ভ্যাকসিন ভারত সরকার যখন পাবে তখন বাংলাদেশকেও পেতে সহযোগিতা করবে।
এসময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক রক্তের রাখিবন্ধনে আবদ্ধ। সীমান্তে সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অভিন্ন দৃষ্টি ভঙ্গি রয়েছে। কাউকে সীমান্তে বাংলায় মাটি ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।
তিনি আরো বলেন, তিস্তার পানি বণ্টন অচিরেই হতে পারে। এ নিয়ে সবুজ সংকেত পাওয়া গেছে। সীমান্তে হত্যার বিষয়ে দু’দেশের মধ্যে বৈঠক চলছে। সীমান্তে হত্যাকাণ্ড জিরোতে আনার বিষয়ে সফল হবো বলে আশা করছি। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে রাজনৈতিক দল হিসেবেও শীর্ষ পর্যায়ে পিপল টু পিপল আলোচনা হবে অচিরেই হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় এখন অধিকতর উষ্ণ, সৌহার্দ্যপূর্ণ এবং উন্নয়নমুখী। ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং ৭১ এর রক্তের রাখিবন্ধনে আবদ্ধ। দু’দেশের সম্পর্কের সেতুবন্ধ সময়ের পরিক্রমায় দিন-দিন নবতর মাত্রায় উন্নীত হচ্ছে।
সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে দু’দেশের দীর্ঘদিনের সীমান্ত সমস্যা ছিটমহল বিনিময় হয়েছে। বাংলাদেশের সমুদ্র জয়ের মামলায় ভারত আপিল না করে বন্ধুসুলভ যে আচরণ করেছে তা সম্পর্কের সূত্রকে আরও সুদৃঢ় করেছে। বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে আস্থা ও বিশ্বাসের যে সেতুবন্ধন তৈরি হয়েছে তার মাধ্যমে তিস্তা সমস্যা এবং অন্যান্য নদীর পানি বণ্টনের আলোচনায় ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। তিস্তা পানি বণ্টন অচিরেই হতে পারে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার ও ভারতের নরেন্দ্র মোদী সরকারের সম্পর্ক সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে ভালো বোঝাপড়া থাকলে অনেক অমীমাংসিত ইস্যু সহজেই সমাধান সম্ভব, যার প্রমাণ বাংলাদেশ ও ভারত। দীর্ঘদিনের সীমান্ত সমস্যা শান্তিপূর্ণভাবে ছিটমহল বিনিময় সমাধান দু’দেশের পারস্পরিক আস্থা আরো বাড়িয়ে তুলেছে।
হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেন, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগে যদি কোনো বন্ধু না থাকে তাহলে বাংলাদেশে আমাদের কোনো বন্ধু নেই।
করোনা ভ্যাকসিনের ব্যাপারে ভারত সরকার বাংলাদেশকে সব ধরনের সহযোগিতা করবে জানিয়ে তিনি বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের আজকের যে সম্পর্ক, এই সম্পর্কের জন্য আওয়ামী লীগের অনেক অবদান রয়েছে। করোনা ভাইরাসের কারণে আওয়ামী লীগ অনেক নেতা-কর্মী হারিয়েছে।
তিনি এসব নেতা-কর্মীদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে এসে জীবন উৎসর্গকারী অর্ধশতাধিক ভারতীয় সৈনিকের আত্মত্যাগের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে দোরাইস্বামী বলেন, আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন পাইলট হিসেবে। তাই আমি খুব গর্বিত। বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী চিরঞ্জীব হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হচ্ছেন বাংলাদেশের স্পিরিট। বাংলাদেশের জন্য তার আত্মত্যাগ এদেশের জনগণ ভুলতে পারবে না। এদেশ স্বাধীন হয়েছে ত্রিশ লাখ শহীদ, নারীর সম্ভ্রম ও ত্যাগের বিনিময়ে।
***আওয়ামী লীগ কার্যালয় পরিদর্শন করলেন দোরাইস্বামী
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২০
এসকে/এএ