খাগড়াছড়ি: ‘বহুল প্রতীক্ষিত ইলেকট্রনিক্স পাসপোর্ট বা ই-পাসপোর্ট সেবার আওতায় এসেছে বাংলাদেশ। সবশেষ খাগড়াছড়িসহ দেশের ছয়টি জেলার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে ই-পাসপোর্ট সেবা সম্প্রসারণ করার মাধ্যমে পুরো দেশ এ সেবার আওতায় আনা হয়।
বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে খাগড়াছড়ি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ছয়টি জেলায় এ সেবার উদ্বোধনকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এসব কথা বলেন।
জেলাগুলো হলো- খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, বান্দরবান, কক্সবাজার, নারায়ণগঞ্জ ও চাঁদপুর। এ সময় জেলাগুলো ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিল।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, খাগড়াছড়িসহ ছয়টি জেলার আঞ্চলিক অফিসে ই-পাসপোর্ট সেবা কার্যক্রম চালু করার মাধ্যম বাংলাদেশ ই-পাসপোর্ট সেবার আওতায় এসেছে। দেশের ৭২টি আঞ্চলিক কেন্দ্রে এখন থেকে এ সেবা পাওয়া যাবে। এরইমধ্যে দেশের এক লাখ ১০ হাজার গ্রাহক ই-পাসপোর্ট পেয়েছে। আরও দুই লাখ গ্রাহককে ই-পাসপোর্ট দেওয়া হবে।
ই-পাসপোর্ট সেবার আওতাভুক্ত দেশ হিসেবে বিশ্বে বাংলাদেশ ১১৯তম দেশ জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা ই-পাসপোর্ট সেবায় দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম। প্রতিবেশী অনেক দেশে এ সেবা চালু নেই। বিশ্বমানের ই-পাসপোর্ট তৈরির জন্য আমরা জার্মানির প্রতিষ্ঠান ভেরিডসের সঙ্গে চুক্তি করেছি। ই-পাসপোর্ট গ্রাহকের ভোগান্তি কমাবে। বাসায় বসে সহজে অনলাইনে আবেদন করা যাবে। ই-পাসপোর্টের কারণে অনেক দেশে অন এরাইভাল ভিসা পাওয়া যাবে।
এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- শরণার্থী পুনর্বাসন বিষয়ক টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, সংরক্ষিত আসনের নারী সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (সুরক্ষা ও সেবা) মো. শহিদুজ্জামান, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আইয়ূব চৌধুরী, ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুর রহমান।
এছাড়া অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- গুইমারা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহরিয়ার জামান, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চেীধুরী অপু, খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস, পুলিশ সুপার আব্দুল আজিজ, সিভিল সার্জন ডা. নূপুর কান্তি দাশ প্রমুখ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ ৪-আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বক্তব্য রাখেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে স্বপ্ন দেখেছেন আমরা সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটাচ্ছি। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম ই-পাসপোর্ট সেবা জনগণের দৌড়গোড়ায় পৌঁছে দিয়েছে। করোনা মহামারির কারণে বিশ্বের ৮০টি মিশনে এ কার্যক্রম চালুতে ধীরগতি হচ্ছে। আশা করি, করোনা পরিস্থিতি উন্নতি হলে আমরা মিশনগুলোতে এ সেবা চালু করতে পারবো। ধীরে ধীরে দেশের সব ক্ষেত্রে ডিজিটাল কার্যক্রমের আওতায় আনা হবে। তিনি সবাইকে ই-পাসপোর্ট সেবা নেওয়ার আহ্বান জানান।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ই-পাসপোর্ট দেওয়ার ঘোষণা দেন। পরবর্তীতে চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ই-পাসপোর্ট সেবার উদ্বোধন করেন। এজন্য জার্মানির প্রতিষ্ঠান ভেরিডসের সঙ্গে চুক্তি করে বহির্গমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় চার হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা। চুক্তি অনুসারে তিন কোটি ই–পাসপোর্ট সরবরাহ করবে প্রতিষ্ঠানটি।
সাধারণ পাসপোর্ট থেকে ই-পাসপোর্টের পার্থক্য হলো, এতে মোবাইল ফোনের সিমের মতো ছোট ও পাতলা আকারের চিপ থাকে। ৩৮ ধরনের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য থাকবে, যার অনেক বৈশিষ্ট্য থাকবে লুকানো অবস্থায়।
এদিকে খাগড়াছড়িতে সফররত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত বিশেষ আইনশৃঙ্খলা সভায় যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০২০
এডি/আরবি