ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মুক্তিপণের টাকাসহ অপহরণ চক্রের তিন সদস্য আটক, অপহৃত উদ্ধার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২০
মুক্তিপণের টাকাসহ অপহরণ চক্রের তিন সদস্য আটক, অপহৃত উদ্ধার প্রতীকী ছবি

মেহেরপুর: মুক্তিপণের ১ লাখ ২০ হাজার টাকাসহ অপহরণ চক্রের তিন সদস্যকে আটকের পর অভিযান চালিয়ে অপহৃত উজ্জ্বল হোসেনকে (১৮) উদ্ধার করেছে গাংনী থানা পুলিশ।  

উজ্জ্বল হোসেন গাংনী উপজেলার সীমান্তবর্তী তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামের বর্ডারপাড়া এলাকার মাফিজুর রহমানের ছেলে।

অপহরণকারী সন্দেহে আটকরা হলেন- গাংনী শহরের বিনয় জুয়েলার্সের মালিক বিনয় কুমার, বিকাশ এজেন্ট গাংনী থানাপাড়া এলাকার সাফায়াত হোসেন ও মেহেরপুর সদর উপজেলার ষোলমারী গ্রামের খালেদ।

এ ঘটনায় ভিকটিম উজ্জ্বল হোসেনের বাবা হাফিজুর রহমান বাদী হয়ে গাংনী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে এটি অপহরণ নাকি মাদক সংক্রান্ত বিরোধ ক্ষতিয়ে দেখার জন্য পুলিশ অপহৃত উজ্জ্বল হোসেন, বিনয় কুমার, সাফায়াত হোসেন ও খালেদ হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।  

গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বজলুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে গাংনী উপজেলার তেরাইল গ্রাম থেকে উজ্জ্বল হোসেনকে উদ্ধার করে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।

উজ্জলের বাবা মাফিজুর রহমান বলেন, বুধবার (২২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার সময় উজ্জ্বলকে তেরাইল গ্রামের জয় নামে একজন মোটরসাইকেলে করে তুলে নিয়ে যায়।

পরে রাত ৯টার সময় ০১৭০৩-২৪৫১২৬ নম্বর থেকে প্রতিবেশী নাজিম উদ্দীনের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে ভারতের মুরুঠিয়া থানার পাকশী গ্রামের হাফিজ পরিচয় দিয়ে আমার সঙ্গে কথা বলে। হাফিজ ভারতীয় ভু-খন্ডে রয়েছে দাবি করে জানায় উজ্জ্বলকে অপহরণ করে ভারতে আনা হয়েছে। উজ্জ্বল তাদের কাছে জিম্মি রয়েছে। তাকে বাঁচাতে হলে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে। মুক্তিপণ না দিলে তাকে হত্যা করা হবে। পরে মুক্তিপণ হিসেবে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দিতে চাইলে বিকাশ নম্বর দেন। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়।

গাংনী থানার তদন্ত কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর মুক্তিপণের টাকা বিকাশে দিয়ে পুলিশের একটি দল গাংনী শহরের সাফায়াতের বিকাশের দোকানে অপেক্ষা করতে থাকে। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে বিকাশ থেকে স্বর্ণ ব্যবসায়ী বিনয় কুমার টাকা তুলতে গেলে তাকে হাতে নাতে আটক করা হয়। এ ঘটনায় বিকাশ এজেন্ট সাফায়াত হোসেনকেও আটক করা হয়। এদিকে বিনয় কুমারের কাছে মুক্তিপণের টাকা নিতে আসা খালেদ হোসেনকেও আটক করা হয়।

স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, তেঁতুলবাড়িয়া সীমান্তে দুই মাস আগে পরিত্যক্ত অবস্থায় ৩২০ বোতল ফেনসিডিল জব্দ করে বিজিবি। ওই ফেনসিডিলগুলোর মালিক ছিলো ভারতের পাকশী গ্রামের হাফিজ। ফেনসিডিল জব্দের ঘটনায় উজ্জ্বল হোসেনকে দোষী করে আসছিলো সে। ফেনসিডিলের টাকা ওঠাতেই এই অপহরণের ঘটনা।

মেহেরপুরের পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলী জানান, ঘটনাটি মাদক ব্যবসা সংক্রান্ত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব যাচ্ছে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।