নাটোর: নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চুরির হওয়ার সাতদিন পর দুই মাসের শিশু তাইয়িবাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৩১ সোমবার) ভোর রাতে অভিযান চালিয়ে বড়াইগ্রাম উপজেলার তিরোইল গ্রাম থেকে শিশুটি উদ্ধার করা হয়।
একই সঙ্গে উদ্ধার করা শিশুটিকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ চুরির ঘটনায় শাকিলা বেগম (৩০) নামে এক নারীকে আটক করা হয়েছে। আটক শাকিলা বেগম বড়াইগ্রাম উপজেলার তিরোইল গ্রামের মো. সাইদুল ইসলামের স্ত্রী। ২৩ ডিসেম্বর দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে গেলে এ শিশু চুরির ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় পুলিশ ভিডিও ফুটেজে এক নারীকে ওই শিশুটিকে নিয়ে যেতে দেখে। চুরি যাওয়া শিশু তাইয়িবার মা সীমা বেগম উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের মাছপাড়া এলাকার মো. তৌফিজ মোল্লার স্ত্রী। দুপুরে গুরুদাসপুর থানায় এক প্রেস বিফ্রিংয়ের মাধ্যমে এসব তথ্য জানান নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা।
তিনি বলেন, গত ২৩ ডিসেম্বর সকালে শিশুকন্যাকে নিয়ে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে যান সীমা। এসময় তার শিশুকন্যা চুরির ঘটনা ঘটে। পরে হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ থেকে পাওয়া তথ্য এবং আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে পুলিশ, ডিএসবি, ডিবি এবং পুলিশের স্পেশাল টিমের সমন্বয়ে গত সাতদিন ধরে পাবনা, সিরাজগঞ্জ এবং নাটোর জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয়। একপর্যায়ে বড়াইগ্রাম উপজেলার কালিকাপুর এলাকা থেকে শাকিলাকে আটক করতে সক্ষম হয় নাটোর পুলিশ। এসময় শিশু তাইয়িবাকে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেয় পুলিশ।
শাকিলার উদ্বৃতি দিয়ে পুলিশ সুপার লিটন বলেন, শাকিলার দ্বিতীয় স্বামী ট্রাকচালক সাইদুল। মাস দুয়েক আগে তারও একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। সেসময় স্বামী তাকে ভরণপোষণ না দেওয়ায় অভাবি শাকিলা নিঃসন্তান একটি এনজিও কর্মীকে শিশুটিকে দত্তক দেন। কিছুদিন পরে স্বামী সাইদুল দত্তক দেওয়া সন্তানকে ফিরে পেতে তার ওপর নির্যাতন শুরু করেন। এ কারণে তিনি যে কোনোভাবেই একটি শিশু সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে কৌশলে শিশু তাইয়্যিবাকে চুরি করেন শাকিলা।
গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুর রাজ্জাক বাংলানিউজকে বলেন, উপজেলার মশিন্দা মাঝপাড়ার তফিজ উদ্দিনের স্ত্রী সীমা বেগমের দুই মাসের শিশু তাইয়িব্যা ২৩ ডিসেম্বর হাসপাতাল থেকে চুরি হয়। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা তফিজ উদ্দিন মোল্লা থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ সাতদিন পর বৃহস্পতিবার শিশুটিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। অভিযুক্ত শাকিলাকে আদালতের মাধ্যমে নাটোর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
শিশুর মা সীমা বেগম বলেন, আমার তিন ছেলে-মেয়ে। দুই মাস আগে তাইয়িবার জন্ম হয়। ২৩ ডিসেম্বর ঠান্ডা জনিত রোগের চিকিৎসা নিতে মেয়েকে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাই। চিকিৎসা নেওয়ার পর হাসপাতালের বাইরে এলে বাথরুম চাপে। সেসময় বাথরুমের বাইরে এক নারী আমার কাছ থেকে মেয়েকে নিয়ে বাথরুমে যেতে বলেন। পাঁচ মিনিটের মধ্যে ফিরে এসে ওই নারীকে আর কোথাও খুঁজে পাইনি।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২০
এসআই