ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ট্রাকে পিষ্ট দুই বন্ধু

সিলেটে ঘাতক ট্রাকচালক আটকের পর যান চলাচল শুরু

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫০৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২১
সিলেটে ঘাতক ট্রাকচালক আটকের পর যান চলাচল শুরু

সিলেট: সিলেটে ট্রাক চাপায় লুৎফুর রহমান (২৪) ও সজীব মিয়া (২০) নামে মোটরসাইকেল আরোহী দুই বন্ধু নিহতের ঘটনায় ঘাতক ট্রাকচালক জাহিদ মিয়াকে (৪৮) আটক করেছে পুলিশ।

সোমবার (১১ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১২টার দিকে নগরের জালালাবাদ এলাকা থেকে চালককে আটক করা হয়।

আটক জাহিদ বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ কিচকি গ্রামের মৃত মোজাহার মিয়ার ছেলে। এরপর রাত ১টার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এর আগে রাত ১০টার দিকে  সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে নগরের ফাজিলচিশত এলাকায় ট্রাক চাপায় নিহত হন লুৎফুর ও সজীব। ঘটনার সময় তারা রাস্তার পাশে মোটরসাইকেল দাঁড় করিয়ে খোশ গল্প করছিলেন দুই বন্ধু। এমন সময় নগরের আম্বরখানা থেকে মদীনা মার্কেটগামী বেপরোয়া গতির ট্রাক তাদের পিষ্ট করে।

নিহত লুৎফুর নগরের ফাজিলচিশত এলাকার বাসিন্দা, তার গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় এবং সজীব বনকলা পাড়া এলাকার বাসিন্দা। নিহতরা দু’জনে ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ জনতা ঘাতক ট্রাকসহ ৭টি ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দেন এবং মালবাহী ট্রাকসহ অসংখ্য যানবাহন ভাঙচুর করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয়রা জানান, ঘটনার সময় পালসার মোটরসাইকেল (সিলেট-ল-১১-১০৩৪) নিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে খোশগল্পে ছিলেন দুই বন্ধু লুৎফুর ও সজীব। এমন সময় নগরের আম্বরখানা থেকে মদীনা মার্কেটগামী একটি ট্রাক (ঢাকা মেট্টো-গ-১৮-৪৫০১) ঘটনাস্থলে রাস্তার পাশে দাঁড়ানো মোটরসাইকেলটিকে সজোরে ধাক্কা দিলে দুই আরোহী ট্রাকের নিচে পিষ্ট হন।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছার আগেই বিক্ষুব্ধ জনতা ঘাতক ট্রাকে (নং ঢাকা মেট্রো-ট ১৮-৪৫০১) আগুন ধরিয়ে দেয়। এসময় আরো ৬টি ট্রাক পোড়ানো হয়। এছাড়া ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়লে আটকে যাওয়া মালবাহী ট্রাকসহ অসংখ্য যানবাহন ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে দমকল বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌছে গাড়িগুলো ভস্মীভূত হওয়া থেকে রক্ষা করে।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (মিডিয়া) বিএম আশরাফ উল্লাহ তাহের বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দুর্ঘটনার পর চালক-হেলপার পালিয়ে গেলেও মধ্যরাতে ট্রাক চালককে আটক করা হয়। দুর্ঘটনার পর রাত ১১টার দিকে নিহতদের মরদেহ ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।  

এদিকে, মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর ট্রাক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পরিবহণ শ্রমিকরা সিলেটের প্রবেশদ্বার চন্ডিপুল এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। রাত সোয়া দেড় টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলছিল।

দুর্ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ জনতা দাবি তুলে বলেন, নগরের অভ্যন্তরে দিয়ে রাতের আধারে ট্রাক বেপরোয়া চলাচল করে। নগরে ট্রাক বন্ধে তারা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৫০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২১
এনইউ/এমকেআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।