ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

শিশু হত্যা: হয়রানিমূলক মামলা থেকে রক্ষা পেতে মানববন্ধন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২১
শিশু হত্যা: হয়রানিমূলক মামলা থেকে রক্ষা পেতে মানববন্ধন মানববন্ধন। ছবি: বাংলানিউজ

বাগেরহাট: বাগেরহাটের চিতলমারীতে একই পরিবারের দুই শিশুকে হত্যা করে প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা ও বাড়ি ঘর লুটপাটের প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।  

হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন হলেও নিরাপরাধ আসামিরা ফিরতে পারছেন না বাড়িতে।

আবারও নতুন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে মামলার বাদী আওয়ামী লীগ নেতা কাওছার তালুকদার ও তার পরিবার।

শনিবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে চিহ্নিত হত্যাকারীদের বিচার ও নিরাপরাধ ব্যক্তিদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবিতে দুই শতাধিক এলাকাবাসী এ মানববন্ধন করেন।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন- বাগেরহাটের চাঞ্চল্যকর শিশু খালিদ ও রিফাত হত্যা মামলার আসামি মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান তালুকদার বাদশা, সাইদুর রহমান, মেরিনা বেগম, সবুর তালুকদার, রহিমা বেগম, স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আইয়ুব আলী, সোবহান শেখ, মো. মিজানুর রহমান, বাবর আলী তালুকদার, শিহাব তালুকদারসহ আরও অনেকে।

বক্তারা বলেন, ২০১৯ সালে চিতলমারী উপজেলার চৌদ্দহাজারি গ্রামের কাউছার তালুকদার ও তার ভাই মান্নান তালুকদার প্রতিবেশীদের ফাঁসাতে এবং এলাকা থেকে উচ্ছেদ করতে তাদের পরিবারের দুই শিশু  খালিদ ও রিফাতকে হত্যা করে। পরবর্তীকালে খালিদ হত্যা মামলায় কাউছার তালুকদার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান তালুকদার বাদশার পরিবারের ১৯ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা হয়। রিফাত হত্যা মামলায় আরও ১৬ জনের নামে মামলা হয়। দুটি মামলায় অনেক আসামি জেল খেটেছেন। বর্তমানে আমরা বেশিরভাগ আসামি জামিনে রয়েছি। কিন্তু বাদীদের অত্যাচারে বাড়িতে ফিরতে পারছি না। সত্য কখনও চাপা থাকে না।

রিফাত হত্যা মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বাগেরহাট কার্যালয়ের প্রেস ব্রিফিংয়ে রিফাত হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচন করেন। প্রেস ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির খুলনা বিভাগীয় প্রধান বিশেষ পুলিশ সুপার আতিকুর রহমান মিয়া জানান, জমিজমা নিয়ে বিরোধ থাকায় প্রতিপক্ষকে ফাসাঁতে একই বংশের রিফাতুল তালুকদারকে হত্যা করে রিফাতের চাচাতো ভাই ইকবাল তালুকদার ও সাকিব তালুকদার। মান্নান তালুকদারের ভাইয়ের ছেলে ইকবাল, সাকিব ও আত্মীয় হাফিজুর রহমান ছোট আদালতে হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে।

বক্তারা আরও বলেন, এটা দিনের মত স্পষ্ট যে স্থানীয়দের ফাঁসাতে রিফাতকে হত্যা করেছে তার পরিবার। তারপরও রিফাত হত্যা মামলার আসামিদের মামলা থেকে অব্যাহতি দিচ্ছে না পুলিশ। আমাদের ফাঁসাতে খালিদকেও একই ভাবে হত্যা করেছে তার পরিবার। কাউছার তালুকদার ও তার ভাই শুধু তার প্রতিবেশী মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান তালুকদার বাদশার বাড়ি, ঘর লুট ও ঘের দখল করেনি, স্থানীয় অর্ধশতাধিক মানুষের বাড়ি ঘর লুট করেছেন। হত্যা মামলার আসামি দেওয়ার ভয় দেখিয়ে অনেকের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ চাঁদাও তুলেছেন। যারা চাঁদা দেয়নি তাদের মারধর করেছেন। এমনকি অনেককে মামলার আসামিও করেছেন। এক কথায় চৌদ্দ হাজারী গ্রামটিকে অশান্ত করে তুলেছে কাউছার তালুকদার ও তার ভাইয়েরা। আমরা এলাকায় শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে চাই। মূল হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় এনে নিরাপরাধ ব্যক্তিদের অব্যাহতি দিয়ে এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, পিবিআই ও সিআইডি হত্যার রহস্য উন্মোচন এবং হত্যাকারীদের চিহ্নিত করেছে। এর পরেও যারা হত্যার সঙ্গে জড়িত নয় তাদের অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে না। বরং কাউছার তালুকদার ও তার ভাইয়েরা এ হত্যাকাণ্ডকে পূঁজি করে স্থানীয়দের উপর অত্যাচার করে যাচ্ছে। লুটপাট চালাচ্ছে হরদম।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।