ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

তীব্র শীত-ঘন কুয়াশায় স্থবির গাইবান্ধা জেলা

মোমেনুর রশিদ সাগর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬১৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২১
তীব্র শীত-ঘন কুয়াশায় স্থবির গাইবান্ধা জেলা

গাইবান্ধা: ক'দিন ধরে গাইবান্ধায় বৃদ্ধি পেয়েছে শীতের তীব্রতা। সেই সঙ্গে ঘন কুয়াশায় স্থবির হয়ে পড়েছে পুরো গাইবান্ধা জেলা।

 

শনিবার (২৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যার পর থেকে বাড়তে থাকে কুয়াশা। রাত ৯টার পর থেকেই ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে পুরো গাইবান্ধা জেলা। সেই সঙ্গে অনুভূত হচ্ছে তীব্র শীত।

সরেজমিন শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রাত ১০টার মধ্যেই জনশূন্য হয়ে পড়েছে শহরের ব্যস্ত মোড়সমূহ-সহ শহরের বিভিন্ন অলিগলি। মধ্যরাত পর্যন্ত যেসব দোকানপাট খোলা থাকে তার অধিকাংশই বন্ধ। চারদিকে নিশ্চুপ-নিরবতা। কোথাও কোনো সাড়াশব্দ নেই। ঘরের চালে বৃষ্টির ফোটার মত শব্দ শুনতে পাচ্ছেন শুধু তারাই যাদের মাথার ওপর রয়েছে কনক্রিটের ছাদের বদলে টিনের চালা।  
 
শহরের মধ্যপাড়ার মুদি দোকানী পরেশ বাংলানিউজকে জানান, অন্য সময় রাত ১২টা পর্যন্ত দোকান খোলা থাকে। সবসময় দোকানে কাস্টমার আসেন। আজ তীব্র শীত আর কুয়াশার পরিমাণ এত বেশী, রাস্তা-ঘাট জনমানব শূন্য। তাই রাত ৯টার আগেই দোকান বন্ধ করে বাসায় অবস্থান করছি।  

শহরের পৌরপার্ক মোড়ের বাসিন্দা ঠিকাদারি ব্যবসায়ী আব্দুল আহাদ বাংলানিউজকে জানান, হাতে কিছু কাজ থাকলেও তীব্র শীত আর কুয়াশার কারণে ঘরের বাইরে থাকার কোনো উপায় নেই। তাই রাত ৮টার আগেই বাসায় ফিরে পরিবারের সদস্যদের সময় দিচ্ছি।  

এদিকে, একই চিত্র রংপুর-ঢাকা মহাসড়ক সংলগ্ন জেলার গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়ী উপজেলায়। মহাসড়ক সংলগ্ন হওয়ায় দিন-রাত ২৪ ঘন্টা মানুষের আনাগোনা চলতে থাকে। শহরের মোড়ে মোড়ে কিছু হোটেল, কনফেকশনারী, পানের দোকান, ফলের দোকান সারারাত খোলা থাকলেও  বর্তমানের চিত্র একদমই আলাদা। এ যেন অপরিচিত কোনো শহর। কোনো মিল নেই ক’দিন আগের সঙ্গে।  

যে মহাসড়কে বাস-ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহনের ব্যস্ততায় গভীর রাত পর্যন্ত মহাসড়ক পার হতে বেশ সময়-সাবধানতা অবলম্বন করতে হতো, সে মহাসড়ক দেখে মন হচ্ছিল যেন হরতাল চলছে। দীর্ঘসময় পরপর চলছে গাড়ী। যাত্রী থাকায় সারারাত বাসস্টান্ড-সড়কগুলোতে  রিক্সা- ভ্যান চলাচল করলেও এখনকার চিত্র উল্টো। দিনের চিত্র ভিন্ন হলেও সারাদিন দেখা মিলছে না সূর্যের।  

অপরদিকে, গরম কাপড়ের স্বল্পতায় দুর্ভোগে পড়েছে জেলার নদ-নদীর অববাহিকার ১৬৫টি চরাঞ্চলে বসবাসকারী অতিদরিদ্র মানুষজন। শীতের তীব্রতায় স্বাভাবিক কাজ কর্ম করতে পারছেন না তারা। এছাড়া ঘন কুয়াশা ও শৈত্য প্রবাহের কারণে চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে কৃষকরা জমিতে স্বাভাবিক কাজ করতে পারছেন না।  

গাইবান্ধা জেলা বিএমএ'র যুগ্ম সম্পাদক ও সাদুল্যাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শাহিনুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, শীতের তীব্রতায় কোল্ড ডায়রিয়া, আমাশয়সহ বিভিন্ন শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে।

বাংলাদেশ সময়: ০৬১৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২১
ইউবি 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।