ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পদ্মা পাড়ের ঐতিহ্য ইলিশ আর শুকনো মরিচ ভাজা

ইমতিয়াজ আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২১
পদ্মা পাড়ের ঐতিহ্য ইলিশ আর শুকনো মরিচ ভাজা পদ্মাপাড়ে প্লেটে সাজিয়ে রাখা ইলিশ। ছবি: বাংলানিউজ

মাদারীপুর: হোটেল বালকের হাঁকডাক আর চুলায় ইলিশ ভাজার শব্দ ঘাট এলাকার এক স্বাভাবিক চিত্র। বাড়ি ফেরার আগে ক্ষুধার্ত মানুষেরা ঘাটে নেমে দুপুরের খাবার খেতে চাইলে খাবারের মেন্যুতে শতকরা নব্বই ভাগ মানুষের চাহিদায় থাকে ইলিশ ও শুকনা মরিচ ভাজা আর সঙ্গে ঘন ডাল।

পদ্মা পাড়ের ঘাট এলাকার খাবারের দোকানের এ যেন এক দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য।

ভাজার জন্য রেডি করা ইলিশ।                                          ছবি: বাংলানিউজ সরেজমিনে শিবচরের বাংলাবাজার ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাট ঘুরে দেখা গেছে, ঘাটের হোটেলগুলোতে ইলিশ মাছ কেটে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী মাছ ভেজে তারপর গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করা হচ্ছে। হোটেলগুলোতে দুপুরের ভাতের সঙ্গে অন্যান্য খাবার থাকলেও ইলিশ মাছের চাহিদাই সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে। এছাড়াও খাবার খেতে আসা অনেককেই ইলিশ মাছের পাশাপাশি ইলিশের ডিম খেতেও দেখা গেছে। তবে মাছের পিসের দামের তুলনায় ডিমের দাম বেশি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘাটের হোটেলগুলোতে 'চাটগাঁর ইলিশ' নামে পরিচিত দামে সস্তা ইলিশ সদৃশ্য মাছ বেশি পাওয়া যায়। তবে পদ্মার ইলিশের মতো ততটা স্বাদ নয় এই মাছের। দামেও প্রায় অর্ধেক কম। দরদাম করলে ৫০/৬০ টাকা করে একেকটি পিস বিক্রি করে দোকানিরা। তবে পদ্মা বা চাঁদপুরের ইলিশের 'স্লাইস' ১০০/১২০ টাকা করে বিক্রি করা হয়।  

সালাহউদ্দিন আহমেদ নামে এক যাত্রী বলেন, ঘাট দিয়ে যাওয়া-আসার সময় দুপুর হয়ে গেলে বেশির ভাগ সময়ই ইলিশ ভাজা দিয়ে ভাত খাওয়া হয়। ঘাট এলাকার হোটেলগুলোও ইলিশ মাছ কেন্দ্রিক খাবার-দাবার বেশি থাকে। সকালে ভূনা খিচুরির সঙ্গে ইলিশ ভাজা। ইলিশের মাথা ও মাছ ভর্তা এবং ইলিশের ডিম তো থাকছেই।  

ভাজা হচ্ছে ইলিশ।  ছবি: বাংলানিউজহোটেল মালিকেরা জানান, পদ্মা পাড়ে ঘাটকে কেন্দ্র করে অসংখ্য হোটেল রয়েছে। ভোর থেকে রাত পর্যন্ত এসব হোটেলে খাবার বিক্রি হয়। হোটেলগুলোতে বিক্রির তালিকায় ইলিশ মাছ শীর্ষে রয়েছে। যাত্রীরা বেশির ভাগ সময়ই ইলিশ মাছ খেয়ে থাকেন। যদিও পদ্মার ইলিশ দিয়ে সব চাহিদা মেটানো সম্ভব হয় না। চার/পাঁচ জন এক সঙ্গে খেতে আসলে আস্ত ইলিশ কেনার ব্যবস্থাও রয়েছে।

ক্রেতাদের সামনেই মাছ কেটে ভেজে দেওয়া হচ্ছে। সঙ্গে ইলিশের তেলে ভাজা শুকনা মরিচ। কয়েক যুগ ধরে এভাবেই চলছে ঘাট এলাকার হোটেল ব্যবসা।

পদ্মার ঘাট এক ব্যস্ত জায়গা। রাজধানী ঢাকায় যাওয়া-আসার সময় এই ঘাটে নেমেই যাত্রীদের একটা বড় অংশ দুপুরের খাবার খেয়ে থাকেন। আবার অনেকেই শখ করে ইলিশ ভাজা খেতে বসেন পদ্মার পাড়ের এই হোটেলগুলোতে। ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চুলার পাশেই সাজিয়ে রাখছে ইলিশের টুকরা। একেকটি হোটেলকে ঘিরেই টিকে আছে বেশ কয়েকজনের সংসার। একইসঙ্গে খাবারের ঐতিহ্য হয়ে আছে ইলিশ আর ইলিশের তেলে ভাজা শুকনা মরিচ।  

বাংলাদেশ সময়: ১০২৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।