ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

শিক্ষার্থীর মৃত্যু: মদ সরবরাহকারীকে খুঁজছে পুলিশ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২১
শিক্ষার্থীর মৃত্যু: মদ সরবরাহকারীকে খুঁজছে পুলিশ

ঢাকা: রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ উঠেছে। বন্ধুরা মিলে একটি রেস্তোরাঁয় মদ্যপানের পর এক বন্ধুর বাসায় গিয়ে ধর্ষণের শিকার হন ওই তরুণী।


 
পুলিশ বলছে, নিহত ওই তরুণীসহ বন্ধুরা উত্তরার একটি রেস্তোরাঁয় মদ পান করেন। তবে মদের বোতলটি তাদের মধ্যে একজন বিমানবন্দর থেকে ওই রেস্তোরাঁয় নিয়ে যান। ঘটনার পর থেকে ওই যুবক পলাতক রয়েছেন। তার নাম-পরিচয় এখনো জানতে পারেনি পুলিশ।
 
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, গত ২৯ জানুয়ারি ওই শিক্ষার্থীসহ বন্ধুরা উত্তরার একটি রেস্তোরাঁয় গিয়ে মদপান করেন। অতিরিক্ত মদ্যপানে এদের মধ্যে এক তরুণী অসুস্থ হয়ে পড়লে বাসায় চলে যান। ভুক্তভোগীও অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে নিয়ে রাইডশেয়ারিং উবারের একটি গাড়িতে করে আরও দুই বন্ধু মিলে মোহাম্মদপুরের একটি বাসায় যান।
 
একপর্যায়ে ওই তরুনী আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে তাকে ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে ভর্তি না করায় তাকে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার (৩১ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
 
ভুক্তভোগী তরুণীর বাবা খবর পেয়ে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা আসেন। তরুণীর মৃত্যুর আগে তিনি বাদী হয়ে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মোহাম্মদপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেছেন। এ ঘটনায় মূল অভিযুক্ত রায়হান ও তার আরেক বন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
 
পুলিশ জানায়, ওই বাসায় যাওয়ার পর তরুণীর সঙ্গে তার বন্ধুর শারীরিক সম্পর্ক হয়। একপর্যায়ে তরুণী বমি করতে থাকলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। যারা মদ পান করেছিলেন এদের মধ্যে আরাফাত নামে এক যুবক অসুস্থ হয়ে শনিবার (৩০ জানুয়ারি) মারা যান।
 
গ্রেফতার দু’জনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) হারুন অর রশিদ বাংলানিউজকে বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে অতিরিক্ত মদ্যপান এবং মদ পানে বিষাক্ত কিছু থাকতে পারে। দ্বিতীয়ত, মদ্যপান করিয়ে বাসায় নিয়ে ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছে, সেটাও মৃত্যুর কারণ হতে পারে। প্রাথমিকভাবে আমরা মনে করছি, তাদের অতিরিক্ত মদ পানের সঙ্গে বিষাক্ত কোনো কিছু থাকতে পারে। এটি উদ্দেশ্যমূলকভাবে করেছে কিনা আমরা খতিয়ে দেখছি। তাদের সঙ্গে একটি ছেলে ছিল যাকে আমরা পাচ্ছি না। তিনি বিমানবন্দর থেকে উত্তরার রেস্তোরাঁতে মদটা নিয়ে গিয়েছিলেন। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে, আমরা সব তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করছি। সবকিছু যাচাই-বাছাই শেষে ঘটনাটি কি ঘটেছিল।
 
তিনি বলেন, এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা বিস্তারিত তদন্ত করছি আরও যদি কেউ এতে জড়িত থাকে তাদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। মদ্যপানের সময় যদি কেউ কিছু মিশিয়ে থাকেন কিংবা ওই রেস্টুরেন্টটির লাইসেন্স আছে কি না, সবকিছু মিলিয়ে আমরা তদন্ত করে জানাতে পারবো।
 
এর আগে, গত ৭ জানুয়ারি রাজধানীর কলাবাগানে একই ধরনের একটি ঘটনায় আনুশকা নূর আমিন নামের মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। জানা যায়, ওইদিন আনুশকা তার বন্ধুর বাসায় গিয়েছিলেন। সেখানেই তাকে শারীরিক নির্যাতন করে হত্যা করা হয় বলে পরিবারের অভিযোগ। ওই ঘটনায় কলাবাগান থানায় আনুশকার বাবার দায়ের করা মামলায় আসামি ইফতেখার ফারদিন দিহানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরবর্তীতে আদালতে দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন আসামি দিহান। বর্তমানে দিহান কারাগারে রয়েছে।

আরও পড়ুন>>

** বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর মৃত্যু, দুই বন্ধু গ্রেফতার
 
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২১
পিএম/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।