ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ফেনীর রাজাঝির দিঘির পাড়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২১
ফেনীর রাজাঝির দিঘির পাড়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

ফেনী: ফেনী শহরের রাজারঝি দিঘির তিন পাড়ে অবৈধভাবে গড়ে উঠা সাড়ে তিন শতাধিক অবৈধ দোকান উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে জেলা প্রশাসন। গত কয়েক বছরে দফায় দফায় এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালানো করা হলেও উচ্ছেদের পরপরই আবার শুরু হয় অবৈধ দখলদারিত্ব।

 

খুঁটির জোরে এখানকার ব্যবসায়ীরা জেলা প্রশাসন ও পৌরসভার নির্দেশ অমান্য করে বারবার স্থাপনা তৈরি করে, এ নিয়ে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

স্থানীয়রা বলছেন, একটি প্রভাবশালী মহল এখানকার ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণ করেন। তাদের ছত্রছায়াতেই ব্যবসায়ীরা এখানে ব্যবসা চালিয়ে আসছেন।

তবে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, তাদের কেউ নিয়ন্ত্রণ করেন না। তারা কাউকে ভাড়াও দেন না।

মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টা থেকে শুরু হয় এ উচ্ছেদ অভিযান।  

ফেনী সদর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ভূঞা এবং জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এম এন আবদুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে পরিচালিত  ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এ অভিযান চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।

এর আগে গত দু’দিন ধরে ফেনী পৌরসভা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সেখান থেকে দোকান সরিয়ে নিতে মাইকিং করা হলেও তাতে কর্নপাত করেনি দোকানীরা।  

তবে ব্যবসায়ীদের দাবি নির্ধারিত সময়ের একদিন আগেই আজ হঠাৎই এ অভিযানে বিপাকে পড়েছেন তারা।  

বিকল্প কর্মের ব্যবস্থা না করে উচ্ছেদে ক্ষোভ জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। গত দুই বছর আগেও এমন অভিযান চললেও কিছু দিনপরই আবারও সেখানে এসব দোকান তৈরি করা হয়। ফলে কোটি টাকা ব্যয়ে দিঘির পাড় জুড়ে ওয়াকওয়েসহ সৌন্দর্যবর্ধণের সুবিধা থেকে সাধারণ মানুষকে বঞ্চিত হতে হয়েছে।

এদিকে জেলা প্রশাসনের দাবি এবার আর সে সুযোগ দেওয়া হবে না এসব অবৈধ দোকান মালিকদের।

প্রাপ্ততথ্য মতে এর আগে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর, ২০১৭ সালের এপ্রিল ও ২০১৯ সালের মার্চে অবৈধ দখলদারিত্ব মুক্ত করেছিল ফেনী জেলা প্রশাসন ও ফেনী পৌরসভা। এছাড়া প্রতি বছরই রাজাঝির দিঘির পাড়ের একুশে বইমেলা উপলক্ষে প্রতি বছরই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়।  

ফেনী সদর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ভূঞা বলেন, ফেনীর রাজাঝির দিঘির পাড় একটা ঐতিহ্যবাহী স্থান। এখানে দর্শনার্থীরা ঘুরতে আসেন। তাদের নিরাপত্তা ও ঐতিহ্যের কথা চিন্তা করে এখানকার অবৈধ দখল উচ্ছেদ করতে জেলা আইন-শৃঙ্খলা ও জেলা উন্নয়ন সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সে সিদ্ধান্ত মোতাবেক জেলা প্রশাসন, পৌরসভার উদ্যোগে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে।  

বার বার উচ্ছেদ অভিযানের পরও আবার স্থাপনা তৈরির ব্যাপারে তিনি বলেন, অবৈধ স্থাপনা  উচ্ছেদের পর আবার গড়ার কোনো সুযোগ নেই। জেলা প্রশাসনের ব্যস্ততার সুযোগ নিয়ে তারা স্থাপনা গড়ে ফেলে কিন্তু এবার সে সুযোগ দেওয়া হবে না। নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হবে।  

রাজাঝির দিঘির পাড় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধি দেলোয়ার হোসেন বলেন, এখানে প্রায় সাড়ে তিনশ’ দোকান রয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত দুই হাজারেরও বেশি মানুষ। এখানে ব্যবসা করতে না পারলে এসব পরিবারের মানুষগুলোর না খেয়ে মরার দশা হবে।  

দেলোয়ারের দাবি জেলা প্রশাসন ও পৌরসভা যদি একটি হকার্স মার্কেট তৈরি করে দেয় তাহলে তাদের পুনর্বাসন হতো।  

মো. হেলাল নামে এক ব্যবসায়ী জানান, ৩৫ বছর আগ থেকে সে এখানে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন।

তিনি জানান, ব্যবসা করার জন্য তিনি দুই লাখ টাকা ঋণ নিয়েছেন। এখন তার দোকান নেই- দেউলিয়া হওয়া ছাড়া তার আর কোনো উপায় নেই।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২১
এসএইচডি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।