ঢাকা: নটর ডেম কলেজের ছাত্র নাঈম হাসানকে (১৭) ধাক্কা দেওয়ার সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ময়লাবাহী ওই গাড়িটি চালাচ্ছিলেন পরিচ্ছন্নতাকর্মী রাসেল খান।

গাড়ির প্রকৃত চালক ছিলেন মো. হারুন নামের একজন।

বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) আ. আহাদ।

তিনি বলেন, দুর্ঘটনার সময় গাড়িটি চালাচ্ছিলেন রাসেল খান, কিন্তু সে প্রকৃতপক্ষে ওই গাড়ির চালক নয়। আমরা গাড়ির কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে ও গ্রেফতার রাসেলকে জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছি গাড়িটির মূল চালক হারুন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটা বিষয় লক্ষ করা গেছে, তা হলো কেউ কেউ লিখছেন প্রকৃত চালক গাড়িটির ভেতরেই ছিলেন এবং তিনি পালিয়ে গেছেন। বিষয়টি সত্য নয়, এখন তথ্যপ্রযুক্তির যুগ। কেউ পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। গাড়িতে সে সময় প্রকৃত চালক ছিলেন না।

তিনি বলেন, সিটি করপোরেশনের বরাদ্দকৃত গাড়ির চালক হারুন। গাড়িটি চালানোর কথা হারুনের। কিন্তু সে না চালিয়ে রাসেলকে দিয়ে চালাচ্ছিলেন। ইতোমধ্যে হারুনকে গ্রেফতারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। দ্রুতই তাকে আমরা আইনের আওতায় আনব। হারুনকে গ্রেফতারের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে কেন তিনি রাসেলকে দিয়ে গাড়ি চালাচ্ছিলেন।

গ্রেফতার রাসেলের পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাসেল সিটি করপোরেশনের কেউ না। তবে সে সিটি করপোরেশনের কিছু কাজ করে। রাসেল জানিয়েছে, তার আত্মীয়-স্বজন সিটি করপোরেশনে চাকরি করে। সেই সূত্র ধরে সে সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নকর্মী হিসেবে কাজ করত।

রাসেল এর আগেও গাড়িটি চলিয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, গাড়ির চাবি রাসেলকে সিটি করপোরেশনের কেউ দেয়নি। হারুনই রাসেলকে চাবি দিয়েছিল।

ঘটনার বিবরণে মতিঝিল বিভাগের ডিসি আ. আহাদ বলেন, বুধবার (২৪ নভেম্বর) বেলা ১১টা ২০ মিনিটে গুলিস্তান বঙ্গবন্ধু স্কয়ার গোলচত্বরের দক্ষিণ পাশে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের গাড়ি (রেজি. নম্বর ঢাকা মেট্রো-শ১১-১২৪৪) ধাক্কায় প্রাণ যায় নটর ডেম কলেজের মানবিক বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র নাঈম হাসানের (১৮)।

রাস্তা পার হওয়ার সময় পূর্ব দিক থেকে আসা বেপরোয়া গতির গাড়িটি নাঈমকে ধাক্কা মেরে রাস্তায় ফেলে দেয়। এর ফলে তার মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখমপ্রাপ্ত হয়। তখন স্থানীয় জনগণ ও পুলিশ তাকে উদ্ধার করে দ্রুত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) পাঠালে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওই সময় দুর্ঘটনা ঘটিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় এলাকার টহল পুলিশ ও পথচারীরা ট্রাকের চালক রাসেল খান ও গাড়ির ভেতরে থাকা পরিচ্ছন্নতাকর্মী গোলাম রব্বানী ও বেলালকে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগের অফিসের পূর্ব প্রান্ত থেকে আটক করে।

ডিসি আ. আহাদ বলেন, সেখান থেকে পুলিশ তাদের হেফাজতে নেয় ও ময়লার গাড়ি জব্দ করে। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন ও ময়না তদন্ত শেষে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহতের বাবা শাহ আলম দেওয়ান বাদী হয়ে এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। রাসেল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নিয়োগপ্রাপ্ত ড্রাইভার না, এছাড়া সে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখাতে পারেনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০২১
পিএম/জেএইচটি