ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি অনেক বড় অর্জন: প্রধানমন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০২১
উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি অনেক বড় অর্জন: প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা: মুজিব জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি অনেক বড় ও বিরল অর্জন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, পরিকল্পিতভাবে সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করায় এ সাফল্য অর্জন সম্ভব হয়েছে।

যে গতি নিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এ গতি কেউ রোধ করতে পারবে না।

রোববার (২৮ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদের সমাপনী ভাষণে এসব কথা বলেন। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছিলাম। তা আমরা বাস্তবায়ন করেছি, আমরা বিভিন্ন কাজ করেছি খুব পরিকল্পিতভাবে। এর ফলে স্বল্পন্নোত দেশে থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হতে পেরেছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এগিয়ে যাবে এ গতি যেন আর কেউ রোধ করতে না পারে। আছে অনেক রকমের চক্রান্ত তো থাকবেই সেগুলো মাথাই নিয়ে আমাদের চলতে হবে। আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যে মর্যাদা পেয়েছি এটা বাংলাদেশের জনগণেরই অবদান। আমি তাদের প্রতি আবারও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

এ সময় তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, আওয়ামী লীগ আমার অবর্তমানে আমাকে সভাপতি নির্বাচন করে। আমি জানি এদেশে খুনিরা মুক্ত, যুদ্ধাপরাধীরা মুক্ত তারাই রাজত্ব চালাচ্ছে। যেখানে আমার ছোট ১০ বছরের ভাইকেও ছাড়েনি। সেখানে আমিও রেহাই পাবো না। আমারও হয়তো যে কোনো সময় মৃত্যু হতে পারে। কিন্তু সেটা জেনেও শুধু দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করার নিয়ত নিয়ে আমার ছোট বাচ্চা ১০ বছরের ছেলে জয় এবং আট বছরের মেয়ে তাদের আমার বোনের কাছে দিয়ে আমি বাংলার মাটিতে ফিরে এসেছিলাম। একটা লক্ষ্য নিয়ে, স্বপ্ন নিয়ে আমার বাবা এ দেশ স্বাধীন করেছেন, সারাটা জীবন উৎসর্গ করেছে সে স্বপ্নটা অধরা রয়ে গেছে সেই স্বপ্ন যেন পূরণ করতে পারি সেই লক্ষ্যটা নিয়েই কিন্তু কাজ করে যাচ্ছি। বার বার আঘাত এসেছে কিন্তু জানি না আল্লাহ তালা আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন এবং আমার দলের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন সময় আমাকে রক্ষা করেছেন। আল্লাহ আমাকে একটু সুযোগ দিয়েছেন মানুষের সেবা করার আজকে একটা মর্যাদায় বাংলাদেশকে উন্নীত করতে সক্ষমত হয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, অনেক রকম চক্রান্ত ষড়যন্ত্র থাকবে। সেইগুলো মাথায় নিয়ে আমাদের চলতে হবে। যতই সমালোচনা হোক দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে আমরা কাজ করে যাচ্ছি এবং করে যাবো। সব বাধা বিপত্তি ও ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এগিয়ে যাবে।

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে গ্রাজুয়েশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়নের জন্য এটি সম্ভব হয়েছে। জনগণের সার্বিক উন্নয়নে আমরা প্রচেষ্টা চালিয়েছি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে এ অর্জন আমাদের জন্য অনেক গৌরবের। এটি বাঙালি জাতির বিরল সম্মান ও অনন্য অর্জন। সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে পরিকল্পিতভাবে এগিয়েছি বলেই আমরা অর্জন করতে পেরেছি। অনেক সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়েছে। সমালোচনায় আমরা কান না দিয়ে অভীষ্ট লক্ষ্য নিয়ে এগিয়েছি। সঠিক দিক নির্দেশনা নিয়েই রাষ্ট্র পরিচালনা করি। জনগণ প্রতিটি নির্বাচনে বিজয়ী করার কারণে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছি। এজন্য জনগণকে কৃতজ্ঞতা জানাই। এ কাজ আমরা সহজভাবে করতে পেরেছি কিন্তু তা নয়। এ যাত্রাপথ কখনো সুগম ছিল না। আমাদের অনেক প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করতে হয়েছে। অনেক সমালোচনা শুনতে হয়েছে। আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা, গাড়িতে আগুন, অগ্নি সন্ত্রাস, হরতাল, অবরোধ- সেই অবরোধ বিএনপি এখনো প্রত্যাহার করেনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টির জন্য নানা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হয়েছে। এরপরে এ কোভিড-১৯ ও আমাদের মোকাবিলা করতে হয়েছে। বিশ্বের অর্থনীতির চাকা যখন স্থবির তখন আমরা চাকা সহজ রেখেছি। এর ফলাফল দেশের অর্থনীতি গতিশীল রেখে সামনে এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালে উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করা। এজন্য আমরা পরিকল্পনা করেছি। এটা বাস্তবায়ন করতে পারলে দেশের মানুষ সুন্দর জীবন পাবে। জাতির পিতাকে হত্যার পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল জেনারেল জিয়া, জেনারেল এরশাদ বা খালেদা জিয়া তারা তো কেউ দেশকে উন্নত করতে চাননি। ক্ষমতা তাদের কাছে ছিল ভোগের বস্তু ও বিলাসবহুল জীবন। আর তারা ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে দলে টেনে একটি শ্রেণি তৈরি করলো। সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কেউ এগিয়ে আসেনি।

তিনি বলেন, উন্নয়নশীল দেশে যাওয়ার কারণে আমরা সুবিধা যেমন পাবো তবে, স্বল্পোন্নত দেশের সব সুযোগগুলো পাবো না। অবশ্য আমরা ২০২৬ সাল পর্যন্ত সময় চেয়ে নিয়েছি করোনাকালের সময়ের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার জন্য। এটা সারা বিশ্বে বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিং করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশের এ গতি যেন আর কেউ রোধ করতে না পারে। অনেক রকম চক্রান্ত ষড়যন্ত্র থাকবে। সেইগুলো মাথায় নিয়ে আমাদের চলতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০২১
এসকে/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।