ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মাঠে পাকিস্তানের পতাকা ওড়ানো পরিকল্পিত: মেনন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০২১
মাঠে পাকিস্তানের পতাকা ওড়ানো পরিকল্পিত: মেনন

ঢাকা: স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের সময় মাঠে পাকিস্তানের পতাকা ওড়ানোর ঘটনা পরিকল্পিত বলে দাবি করেছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।  

বিএনপির সংসদ সদস্য পাকিস্তানি পতাকার ওড়ানোর পক্ষে যুক্তি দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছিলেন বলেও তিনি জানান।

স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও বিএনপি পাকিস্তান প্রেম দেখিয়েই যাচ্ছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

রোববার (২৮ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে রাশেদ খান মেনন এসব কথা বলেন।

মেনন বলেন, ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে বিএনপির সাংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ যে বক্তব্য দিয়েছিলেন, সেটা কেবল অসত্যই নয়, বক্তব্যে চালাকির সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ১৯৭৪ সালের জাতিসংঘের বক্তব্যকেও টেনে এনেছিলেন তিনি। এটা গুরুত্বপূর্ণ এই যে, গণমাধ্যমে এসেছে তিনি পাকিস্তানি ক্রিকেট দল নিয়ে কথা বলায় সংসদে হইচই হয়েছে। বরং তিনি যেটা করতে চেয়েছিলেন, সেটা হচ্ছে পাকিস্তানি পতাকা ওড়ানোর পক্ষে যৌক্তিকতা দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছিলেন।

গত শনিবার সংসদে বিএনপির সাংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ ক্রিকেট মাঠে পাকিস্তানের পতাকা ওড়ানো সমর্থন করে বক্তব্য দেন।

এ প্রসঙ্গে রাশেদ খান মেনন বলেন, এরকম ঘটনা এখন শুধু নয়, বাংলাদেশ সৃষ্টির পরেও হয়েছিলো। ১৯৭৪ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোর সফর ঘিরে পরিকল্পিত ঘটনা ঘটানো হয়েছিলো বলে জানান তিনি।  

মেনন বলেন, আজকে আবার ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানের পতাকা ওড়ানোর চেষ্টা হয়েছে। আমাদের দুর্ভাগ্য, আজকে স্বাধীনতার ৫০ বছর পার করছি। কিন্তু আজ পর্যন্ত বিএনপি, তাদের পাকিস্তানি প্রেম দেখিয়েই যাচ্ছে। আজকেও বক্তৃতায় পাকিস্তানপ্রেম দেখলাম। বেগম জিয়া অসুস্থ তাকে নিয়ে কথা বলতে চায় না। পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তা জানজুয়ার মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শোক প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন। এটা তিনি পারেন না।

রাশেদ খান মেনন বলেন, পরিকল্পিতভাবে আমাদের গৌরব অধ্যায়কে ধ্বংস করার জন্য যে চক্রান্ত চলছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের এক হতে হবে। বিএনপিকে বলবো এখনো সময় আছে, আপনাদের পাকি প্রেমটা দূরে রাখুন।  

তিনি বলেন, আমি আমার সুবর্ণজয়ন্তীর বক্তব্যে বলেছিলাম পাকিস্তানের পতাকা উড়ানোর ঘটনা পরিকল্পিত কিনা আমি জানি না। আজকে দেখছি এটা পরিকল্পিত। গত পরশুদিন ভারতের মুম্বাইয়ের সন্ত্রাসী হামলার বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রধান অতিথি ছিলেন। তার সামনে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেছিলেন মাঠে যে পাকিস্তানি পতাকা ওড়ানোর ঘটনা তার সঙ্গে পাকিস্তান হাইকমিশন জড়িত। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জঙ্গি উত্থান নিয়ে বলেছিলেন, পাকিস্তানি গোয়েন্দারা জঙ্গি দমন নিয়ে আমাদের বিব্রত করেছে। দেশে বর্তমানে যে জঙ্গি উত্থান রয়েছে, তাঁর সঙ্গে পাকিস্তানের গোয়েন্দারা জড়িত রয়েছে কিনা আমরা জানি না। ক্রিকেট প্রেম একজিনিস, জাতীয় প্রেম, গৌরব ও পতাকা আরেক জিনিস। খেলার মাঠে তাদের সমর্থন করতে পারি। কিন্তু তারজন্য তরুণরা পাকিস্তানের পতাকা নিয়ে মাঠে যাবে, তাদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। এটা পরিকল্পিতভাবে করা হচ্ছে।

রাশেদ খান মেনন বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য হচ্ছে, পাকিস্তান হাই কমিশনে যে অনুষ্ঠান হয়, সেখানে আমাদের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো স্পন্সর করে। তাদের সেই কার্ডের মধ্যে প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম আপনারা দেখতে পারেন। আমরা দেখেছিলাম যুদ্ধাপরাধী সাকা চৌধুরীর বিচারের সময় সাফাই গাওয়ার জন্য লোক দাঁড়িয়ে গিয়েছিলো। বহু কষ্টে তা ঠেকানো গিয়েছিলো। এগুলোতো ইতিহাস।

বাংলাদেশে সময়: ২১২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০২১
এসকে/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।