ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

অভাবের সংসারে হতাশার কোনো জায়গা নেই: আছপিয়া

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০২১
অভাবের সংসারে হতাশার কোনো জায়গা নেই: আছপিয়া

বরিশাল: চাকরি না হলেও হতাশ হতে চাননা আছপিয়া ইসলাম কাজল। তবে জমির কারণে চাকরি না হলে তার থেকে কষ্টের আর কিছু নেই বলেও জানান তিনি।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমি আমার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি, করে যাচ্ছি। হতাশ হলে চলবে না, কারণ অভাবের সংসারে হতাশার কোনো জায়গা নেই। তবে চাকরি না হলে খুবই খারাপ লাগবে। কারণ নিজের যোগ্যতায় এতোদূর আসার পরেও জমি না থাকার কারণে চাকরি না হলে এর থেকে বড় কষ্ট কিছু হতে পারে না। এক কথায় বিষয়টি গরীব বলে চাকরিটা হচ্ছে না এমন পর্যায়ে চলে এসেছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আমাদের দিকে নজর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন আমাদের একটি ঘর বা আশ্রয়স্থলের ব্যবস্থা করে দিবেন।

ভূমিহীন হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, হিজলায় আমাদের কোনো জমি নেই। বাবা আমাদের জন্য কিছু রেখে যেতে পারেননি। আর যদি রেখেও গিয়ে থাকেন আমাদের বলতে পারেননি। আমাদের পূর্ব পুরুষদের বাড়ি ভোলা সেখানে কারও সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ নেই। ফলে সেখানে কিছু আমাদের আছে কিনা তাও জানা নেই। আর সেখানকার কোনো সম্পত্তি আমাদের ভোগদখলেও নেই।

আর আমাদের সামর্থ্য নেই যে জমি কিনবো। কিন্তু স্থায়ী হতে হলে জমি লাগবে। দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে আমরা হিজলাতে থাকছি। আমি ছোটবেলা থেকেই এখানে বেড়ে উঠেছি। আমার বাবা ২০১৯ সালে আকস্মিক মৃত্যুবরণ করেন। এরপর আমার ভাই তিনবোনের পড়াশুনা চালাতে হচ্ছে। কিন্তু ওর নিজের ও আমাদের সংসার চালাতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। তবে কষ্ট হলেও আমার মা ও ভাই সবাইকে পড়াশুনা করিয়েছেন।

তিনি বলেন, প্রশাসন থেকে আমার খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। তারা সমবেদনাও জানিয়েছেন এবং জেলা প্রশাসক মহোদয় আমাদের আশ্রায়ন প্রকল্পে একটি ঘর দেয়ার জন্য ইউএনও স্যারকে আদেশ দিয়েছেন। তবে ঘর পেলে চাকরি পাবেন কি না এ বিষয়ে তিনি এখনও নিশ্চিত নন।

তার মা ঝরনা বেগম বলেন, ওর বাবার কি ছিল বা কি না ছিল তা বলতে পারেনি। তিনি হঠাৎ করে মারা যাওয়ায় খুব কষ্ট করেই সংসার চালাতে হচ্ছে। ছেলে সংসার চালাচ্ছে, আমিও টুকিটাকি কাজ করছি। এখন যদি সরকার মুখ তুলে তাকায় তাহলে ভালো আর না তাকালে কিছু বলার নেই। প্রশাসন থেকে আশ্বাস দিয়েছে তারা আমাদের একটি ঘর দিবো।

এদিকে জমি ও ঘর পেলেও চাকুরির বিষয়ে নিশ্চিত করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছুই বলা হয়নি। কারণ হিসেবে পুলিশ কর্তারা বলছেন, নিয়োগ প্রক্রিয়ার কার্যক্রম এখনো শেষ না হওয়ায় এ বিষয়ে কিছু বলা সমীচীন হবে না।

বরিশাল জেলা পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ কমিটির সভাপতি জেলা পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, আছপিয়ার চাকরি হবে না, এটা কখনও বলা হয়নি। আর নিয়মের মধ্যে থেকে করণীয় সম্পর্কে ভাবা হচ্ছে।

এদিকে বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার আছপিয়াকে জমিসহ ঘর দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ইতোমধ্যে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যেখানে ঘর দেয়া যেতে পারে সেসব জায়গা ভিজিট করেছেন।

>>> ছোট‌বেলা থে‌কেই পু‌লি‌শ হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন আছপিয়া

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০২১
এমএস/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।