ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

র‌্যাব মানবাধিকার লঙ্ঘন করে না, নিরাপত্তা দেয়: ডিজি

  উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২১
র‌্যাব মানবাধিকার লঙ্ঘন করে না, নিরাপত্তা দেয়: ডিজি

পাথরঘাটা (বরগুনা): র‌্যাব কখনই মানবাধিকার লঙ্ঘন করেনি, করবেও না। র‌্যাব জনগণের নিরাপত্তা দেয়।

এরই ধারাবাহিকতায় উপকূলের জীবন-জীবিকার নিরাপত্তায় র‌্যাব সব সময় ছিল। এ কারণে আজ সুন্দরবন দস্যু মুক্ত, জেলেরা নির্বিঘ্নে মাছ শিকার করতে পারেন।

রোববার (১২ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে পাথরঘাটা নতুন বাজার ঘাটে উপকূলীয় মৎস্যজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে র‌্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন এ কথা বলেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, র‌্যাব মানবাধিকার লঙ্ঘন করেনি। সারাদেশের মানুষকে নিরলস পরিশ্রম করে নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছে। সে হিসেবে বঙ্গোপসাগরের দস্যুতা আজ নেই। র‌্যাব সব সময়ই কঠোর অবস্থানে ছিল এখনো আছে।  

র‌্যাবের ঘাঁটির বিষয় তিনি বলেন, ঘাঁটির বিষয় অনেক আইনি প্রক্রিয়া আছে আমরা চেষ্টা করবো। আমাদের পরিকল্পনা আছে। তবে আমাদের নিয়মিত টহল আছে চলবে। আমরা সব সময় মৎস্যজীবীদের পাশে ছিলাম থাকবো।

দস্যুদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা কথার কথা বলতে আসিনি। আমি এখন কি বলছি তা আপনারা শুনেছেন। আপনাদের কঠোরভাবে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই, আপনারা এ পেশা ছেড়ে দেন। এ পেশা না ছাড়লে আমাদের হাত রেখে রেহাই পাবেন না। আগের মতো অবস্থাই হবে আপনাদের। আপনাদের পূর্বসূরিদের অবস্থা যেমন দেখছেন আপনাদেরও একই পথের পথিক হতে হবে।  

ইতোপূর্বে যে সব দস্যুরা আত্মসমর্পণ করেছে তাদের র‌্যাব কর্মসংস্থান দিয়েছে। এ পর্যন্ত ৩২৬ জনকে কর্মসংস্থানের আওতায় আনা হয়েছে। আপনারাও (দস্যু) আত্মসমর্পণ করেন অন্ধকার পথ থেকে ফিরে আসেন আপনাদেরও কর্মসংস্থানের সুযোগ দেওয়া হবে।

এ সময় বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, পাথরঘাটায় র‌্যাবের স্থায়ী ঘাঁটি দিতে হবে। এছাড়াও অন্তত সপ্তাহে একবার হেলিকপ্টার টহল দিলে দস্যুরা আর দস্যুতা করতে সাহস পাবেনা।
 
দস্যু অধ্যুষিত এলাকা বলে পরিচিত উপকূলীয় উপজেলা পাথরঘাটায় র‌্যাবের স্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন উপকূলবাসীর দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে। এ দাবি এখন প্রাণের দাবি। এ দাবির পাশাপাশি দস্যুদের গ্রেফতার বা আটক নয়, তারা দস্যুদের বন্দুকযুদ্ধের মাধ্যমে বিচার চান উপকূলের জেলেরা।

এছাড়াও বক্তব্য দেন, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো. সাইফুল হাসান বাদল, র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) কর্নেল খান মোহাম্মদ (কেএম) আজাদ এবং বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি এস এম আক্তারুজ্জামান। শেষে দস্যুদের গুলিতে নিহত মুসার পরিবারকে ১ লাখ টাকার একটি চেক দেওয়া হয়। এছাড়াও দস্যুদের হামলায় আহত ও মুক্তিপণ দেয়া জেলেকে নগদ চেক দেওয়া হয়।

এদিকে র‍্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের জীবন-জীবিকার নিরাপত্তা এবং দস্যুতা নির্মূল করতে এই অঞ্চলের স্থানীয়দের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে মতবিনিময় করবে বাহিনীটি। রোববার (১২ ডিসেম্বর) সকালে র‍্যাব-৮ এর তত্ত্বাবধানে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা কমপ্লেক্স এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে।

র‍্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বাংলানিউজকে জানান, সুন্দরবন দস্যুমুক্ত করা হয়েছে। এবার বরগুনা, পিরোজপুর ও পটুয়াখালী সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে দস্যুতা বন্ধে অভিযান শুরু করেছে র‌্যাব। পাশাপাশি জলদস্যুদের আত্মসমর্পণেরও সুযোগ দেওয়া হবে।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, সম্প্রতি আমরা দেখছি সুন্দরবন দস্যুমুক্ত হওয়ার পর কিছু দস্যু পালিয়ে এসে বরিশাল, বরগুনা, পাথরঘাটা এলাকায় দস্যুতা করছে। তাদের মাধ্যমে কেউ ভুক্তভোগী হলে র‌্যাবকে জানাতে আহ্বান করা হচ্ছে। পাশাপাশি স্থানীয়দের মধ্যে সচেতনতা তৈরিতে আমরা কাজ শুরু করেছি। এর আগে সম্প্রতি র‌্যাবের অভিযানে সমুদ্র উপকূলীয় এলাকার জেলেদের অপহরণ সংক্রান্ত মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে ইলিয়াস হোসেন মৃধা নামে একজনকে গ্রেফতার করে বাহিনীটি। সে নারায়ণগঞ্জে বসে এক দস্যু নেতার মাধ্যমে মুক্তিপণের অর্থ সংগ্রহের কাজ করতো।

>>> দস্যুতা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুন: র‌্যাব ডিজি

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।