ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

স্বাধীনতার ৫০ বছরেও পিছিয়ে নারীরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০২১
স্বাধীনতার ৫০ বছরেও পিছিয়ে নারীরা

ঢাকা: বাংলাদেশ ৫০ বছরে উত্তরণ হয়েছে, কিন্তু নারীদের অবস্থান আজ কোথায়? এটি একটি মৌলিক প্রশ্ন এখন। কেননা এটা স্বাভাবিকভাবেই দেখা যায় যে, স্বাধীনতার ৫০ বছরে দেশ অনেক এগিয়ে গেলেও দেশের নারীরা এখনো অনেক পিছিয়ে আছে বলে মন্তব্য করেছেন কর্মজীবী নারীর সভাপতি ও সংসদ সদস্য শিরীন আখতার।

সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর সিরডাপে অনুষ্ঠিত নারী অভিবাসীদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় করণীয় বিষয়ক জাতীয় পর্যায়ের মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

শিরীন আখতার বলেন, একজন নারীর জন্য যে কোনো কাজ, ঘরে বা বাইরে, দেশে বা বিদেশে, তার কাজের প্রধান সমস্যা হলো- সে নারী। কিন্তু তাকে যদি আমরা তার কর্ম দিয়ে বিবেচনা করি, তাকে যদি আমরা মর্যাদা দেই, তবেই তার প্রতি আমাদের মূল্যায়ন করা হবে। সংবিধান নারীকে সমান অধিকার দিয়েছে। কিন্তু আমরা কী এগোতে পেরেছি? নারী বলে এখনো আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। আমাদের সবার দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। একজন নারী অনেক মর্যাদা নিয়ে কাজে যাচ্ছেন সব সময়। তাই আমাদের নিজেদেরও নারীদের সঠিকভাবে তৈরি করতে হবে।

তিনি বলেন, বিশ্বে অভিবাসী শ্রমিক প্রেরণে বাংলাদেশের অবস্থান ষষ্ঠ। কিন্তু একজন নারী যখন বিদেশে যান, বা বিদেশ থেকে ফিরে আসতে হয়, তখন তারা ঋণে আবদ্ধ হয়ে যায়। এ ঋণগ্রস্থতা কমাতে আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে। একজন একজন করে না কেঁদে নারীদের নেতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে। সংগঠনের মাধ্যমে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। এক্ষেত্রে আমাদের সরকারের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করতে হবে। নারীর উন্নয়নে বাজেটে বরাদ্দ আরও বাড়াতে হবে।

এ সময় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- কর্মজীবী নারীর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সানজিদা সুলতানা, সবুজের অভিযান ফাউন্ডেশনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মাহমুদা বেগম, ওয়্যারবী ডেভলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুল হক, কর্মজীবী নারীর রিসার্চ কো-অর্ডিনেটর ফারহানা আফরিন তিথি প্রমুখ।

এ সময় বক্তারা বলেন, শিক্ষা ও ক্ষমতায়নের অভাব, অদক্ষতা, অসচেতনতা অভিবাসী নারী শ্রমিকদের অনেক পিছিয়ে রেখেছে। নারীরা বেশির ভাগ সময় পরিবারের বাইরে অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বিদেশ যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বিদেশে কর্মসংস্থান সংক্রান্ত তথ্যের জন্য দালালের ওপর নির্ভরশীল থাকেন নারী অভিবাসীরা। আমাদের দেশের বেশিরভাগ সম্ভাব্য নারী অভিবাসীর বিদেশে যাওয়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে সচেতনতার ঘাটতি রয়েছে। দালাল বা পরিবারের সদস্যরাই বিশেষ করে পুরুষ সদস্যরা অভিবাসন প্রক্রিয়ার সিংহভাগ কাজ সম্পন্ন করে দেন। যেখানে যেতে বলা হয় নারীরা সেখানে যান, যেখানে তাদের স্বাক্ষর করতে বলা হয় তারা সেখানে স্বাক্ষর করেন। এমনকি অনেক সময় তাদের কাছে চুক্তিপত্র সম্পর্কে কোনো ধারণা থাকে না। অনানুষ্ঠানিক নিয়োগ পদ্ধতির কারণে নারী অভিবাসীরা প্রায়ই বিদেশে প্রতারণা ও হয়রানির সম্মুখীন হন। নারী অভিবাসী শ্রমিকরা ভাষাগত পার্থক্যের কারণে হয়রানির শিকার হন। বিদেশ যাবার আগে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করলেও তা অপ্রতুল। বিদেশের অপরিচিত পরিবেশে খাপ খাইয়ে নিতে সহায়তার ঘাটতিও দেখা যায়। এগুলো নিরসনে সরকারসহ আমাদের সবাইকে আরও কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০২১
এইচএমএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।