ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

টাকা দিতে দেরি হওয়ায় টিউমার পেটে রেখেই সেলাই!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০২১
টাকা দিতে দেরি হওয়ায় টিউমার পেটে রেখেই সেলাই!

মানিকগঞ্জ: টাকা দিতে দেরি হওয়ায় সিজারিয়ান অপারেশনের সময় পেটের ভেতরে পাওয়া টিউমার অপসারণ না করেই সেলাই করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে চিকিৎসক খায়রুল হাসানের বিরুদ্ধে।  

এদিকে এ ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটিকে সাত দিনের ভেতর তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলা শহরের হেলথ কেয়ার মেডিক্যাল সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে।  

তার অন্তঃসত্ত্বা মেয়েকে নিয়ে শহরের হেলথ কেয়ার মেডিক্যাল সেন্টারে ভর্তি করেন। সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে আফরোজা একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। অপারেশনের সময় পেটের ভেতরে একটি টিউমার দেখে চিকিৎসক পরে অপারেশন করতে বলেন প্রসূতির বাবাকে।  

জানা যায়, গত শুক্রবার মধ্য রাতে জেলার সাটুরিয়া উপজেলার মোহাম্মদ মাসুম মিয়া তার অন্তঃসত্ত্বা মেয়ে আফরোজার প্রসব ব্যথা শুরু হলে জেলা শহরের হেলথ কেয়ার নামের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে আসেন। রাত ২টার দিকে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয় এবং সিজারের একপর্যায়ে পেটের ভেতর টিউমার দেখতে পান চিকিৎসক। এসময় ওই চিকিৎসক রোগীর বাবাকে অতিরিক্ত আরও তিন হাজার টাকার কথা বলেন। তাৎক্ষণিকভাবে তার কাছে টাকা না থাকায় তিনি সকালে পেমেন্ট করবেন বলে চিকিৎসককে অনুরোধ করেন। কিন্তু টাকা হাতে না পাওয়ায় ভেতরে টিউমার রেখেই পেট সেলাই করে দেন ওই চিকিৎসক।  

আফরোজার বাবা মোহাম্মদ মাসুম মিয়া বলেন, ডাক্তার টাকার জন্য আমার মেয়ের টিউমার অপারেশন না করেই পেট সেলাই করে দিয়েছে। আমার কাছে সিজারের টাকা ছাড়া অতিরিক্ত আরও তিন হাজার টাকা চান তিনি, ওই সময় আমার কাছে টাকা না থাকায় বলেছিলাম সকালে দেব। কিন্তু তিনি সে কথা না শুনে আমার মেয়ের পেট সেলাই করে দেন।

হেলথ কেয়ার মেডিক্যাল সেন্টার ক্লিনিকের ম্যানেজার মো. হাবিবুর রহমান বলেন, আমাদের ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের কোনো অবহেলা নেই যদি কোনো ভুল করে থাকে সেটা চিকিৎসক করেছে।

অভিযুক্ত চিকিৎসক খাইরুল হাসান বলেন, আমি সিজারের জন্য আসছি কিন্তু সিজার করতে গিয়ে দেখি পেটের ভেতর টিউমার। পরে টিউমার অপারেশনের কথা বললে ওই পরিবারের লোকজন কোনো সিদ্ধান্ত না দেওয়ায় আমি পেট সেলাই করে দেই।

মানিকগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডাক্তার লুৎফর রহমান বলেন, ঘটনার পর তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, সাত দিনের ভেতর তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে দোষ প্রমাণিত হলে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।