ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

অসাম্প্রদায়িকতার বীজ বপন করেছিলেন বঙ্গবন্ধু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২১
অসাম্প্রদায়িকতার বীজ বপন করেছিলেন বঙ্গবন্ধু

ঢাকা: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তঃধর্মীয় চেতনা বিকাশের পাশাপাশি অসাম্প্রদায়িকতার বীজ বপন করেছিলেন বলে অভিমত দিয়েছেন বিশিষ্টজনরা। তারা বলেন, দেশের সব মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা দান এবং ধর্ম পালনের অধিকার নিশ্চিতে সারাজীবন কাজ করেছেন।

তিনি সর্বদা দেশমাতৃকার অবস্থানকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরে গোটা দেশে অসাম্প্রদায়িক ও আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতির এক অনুপম পরিবেশ গড়ার আমৃত্যু নিরন্তর প্রয়াস চালিয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর পিস অ্যান্ড লিবার্টি এবং সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড রিসার্চ ইন আর্টস অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সসের (কারাস) উদ্যোগে সোমবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাবির প্রশাসনিক ভবনস্থ অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চ্যুয়াল ক্লাসরুমে আয়োজিত বঙ্গবন্ধু বক্তৃতামালার অষ্টম পর্বে তারা এসব কথা বলেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর পিস অ্যান্ড লিবার্টির পরিচালক ও ইউজিসি অধ্যাপক ড. ফকরুল আলমের সভাপতিত্বে এবং রিসার্চ ফেলো হাসান নিটোলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ড. মো. মুশফিকুর রহমান। এতে ‘বঙ্গবন্ধুর ধর্মীয় ও আন্তঃধর্মীয় চেতনা’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাবি ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন। প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশ নেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জাকির হোসেন ও কারাসের পরিচালক অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুশফিকুর রহমান বঙ্গবন্ধুর ওপর ধর্মীয় চেতনা ও আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি বিষয়ক গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর পিস অ্যান্ড লিবার্টির সঙ্গে ইসলামিক ফাউন্ডেশন একযোগে কাজ করবে বলে তিনি আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সব সময় ইসলাম বিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। এছাড়া তিনি শরিয়ত বিরোধী বিভিন্ন বিষয় তথা ঘুষ, চোরাকারবারী, মজুতদারি, জুলুম-নির্যাতন, সন্ত্রাস এসব কিছুর বিরুদ্ধে সারাজীবন সোচ্চার ছিলেন। স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিদ্ধস্ত বাংলাদেশকে স্বল্প সময়ের মধ্যে পুনর্গঠন করেছিলেন। এর মধ্যে ইসলামের খেদমতে অনেক কাজ করেছেন। এছাড়া অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের অধিকারের বিষয়ে তিনি সোচ্চার ছিলেন। দেশের সব মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা দান এবং ধর্ম পালনের অধিকার নিশ্চিতে সারাজীবন কাজ করেছেন।

মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক বাহাউদ্দিন বলেন, বঙ্গবন্ধু কথায়-কাজে, আচার-আচরণে ও মনে-প্রাণে একজন ধর্মপ্রাণ খাটি মানুষ ছিলেন। নিজ ধর্মের প্রতি আনুগত্য আর অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন ছিল ধর্মীয় ক্ষেত্রে তার অনুসৃত মূলনীতি, যা তিনি সর্বাবস্থায় আমৃত্যু অকপটে ধারণ করেছেন। তার কীর্তিময় জীবন, অবিসংবাদিত নেতৃত্ব আর জনগণের ওপর অবিশ্বাস্য প্রভাবের বিশ্লেষণ, পর্যবেক্ষণ ও গবেষণায় এটি প্রমাণিত যে, মাত্র সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে আন্তঃধর্মীয় চেতনা বিকাশের পাশাপাশি ধর্মীয় ও সামাজিক ক্ষেত্রে তিনি যে অসাম্প্রদায়িক ও মানবিকতার বীজ বপন করেছিলেন, তা রাষ্ট্র-কাঠামো পরিচালনায় সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য এক অত্যুজ্জ্বল নিদর্শন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার কীর্তিময় জীবন ও কর্মে, চিন্তা ও দর্শনে এবং প্রায়োগিক সব অর্থে ধর্মীয় চেতনার বাস্তব প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। ব্যক্তি জীবনে তিনি অসাম্প্রদায়িক ছিলেন, মানবতাবাদী আদর্শ ধারণ ও লালন করেছেন, প্রাত্যহিক কর্মকাণ্ডে ধর্মীয় সম্প্রীতির বিষয়টি তুলে এনেছেন এবং তার সংগ্রামী জীবনেও তা চিত্রিত করেছেন। বঙ্গবন্ধু অসাম্প্রদায়িক এক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন এবং সর্বদা দেশমাতৃকার অবস্থানকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরে গোটা দেশে অসাম্প্রদায়িক ও আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতির এক অনুপম পরিবেশ গড়ার আমৃত্যু নিরন্তর প্রয়াস চালিয়েছেন।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ফকরুল আলম বলেন, বঙ্গবন্ধুর ধর্মনিরপেক্ষতার বিষয়ে যে চিন্তা করতেন, সে বিষয়ে আমাদের জানা ও বিশ্লেষণ দরকার।

বাংলাদেশ সময়: ২২৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২১
এইচএমএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।