ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সিলেটে শুরু বইপড়া উৎসব

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০২১
সিলেটে শুরু বইপড়া উৎসব

সিলেট: ‘জ্ঞানের আলোয় অবাক সূর্যোদয়!/ এসো পাঠ করি/ বিকৃতির তমসা থেকে/ আবিষ্কার করি স্বাধীনতার ইতিহাস’ এই স্লোগানে ২০০৬ সাল থেকে ইনোভেটর বইপড়া উৎসবের আয়োজন করে যাচ্ছে। গত দুটি আসর থেকে এ উৎসবকে পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছে সিলেট জেলা পরিষদ।


 
মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে প্রায় সহস্র শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে ‘জেলা পরিষদ-ইনোভেটর’ বইপড়া উৎসব শুরু হয়।
 
উৎসবে নিবন্ধিত শিক্ষার্থীদের হাতে এ বছরের নির্বাচিত গ্রন্থ, স্কুল শাখায় মুনতাসীর মামুন এর উপন্যাস ' জয়বাংলা' এবং কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শাখায় শওকত আলীর' উপন্যাস 'যাত্রা' তুলে দেওয়া হয়।
 
এবারের আসরে বই পড়ায় অংশ নিয়েছেন ৯৯১ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে স্কুল ও সমমানের মাদ্রাসা পর্যায়ের ৫৩৫ জন এবং কলেজ, স্নাতক ও সমমান মাদরাসার ৪৫৬ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। সিলেট মহানগর ছাড়াও বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকেও শিক্ষার্থীরা এ বছর বইপড়া উৎসব এ যোগ দিয়েছে।
 
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ড. মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন, সিলেট জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দেবজিৎ সিংহ, আরটিএম আল কবির টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. আহমদ আল কবির, বীর মুক্তিযোদ্ধা যাদব কেউট ও সামচান চাষা।
 
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা একটি দেশ এনে দিয়েছেন, সেই দেশকে এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব আমাদের সবার। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস যারা অনুশীলন করে তারা দেশের সবচেয়ে অগ্রসর মানুষ। তাদের হাতেই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ।
 
বক্তারা বঙ্গবন্ধু আর মুক্তিযুদ্ধকে অবমাননার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য বস্তুনিষ্ঠ ইতিহাস চর্চায় তারুণ্যকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ইনোভেটর সেই জ্যোতির্ময় আগামীর মানসজগত গঠনে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করছে। পাঠ্যবইয়ের বাইরে জ্ঞানের বিপুল জগতকে ছুঁয়ে দেখার সুযোগ করে দিচ্ছে এ বইপড়া উৎসব।
 
বক্তারা আরও বলেন, বিজয়ে সূবর্ণ আঙিনায় দাঁড়িয়ে বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থে 'বিশ্বের বিস্ময়' এ পরিণত করার জন্য বই নির্ভর সমাজের বিকল্প নেই, তাই স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অঙ্গীকারকে বাস্তবে রূপ দিতে পারে বইপড়ুয়ারা। বই চির অমলিন, বইয়ের ক্ষমতা কখনো হারায় না। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষে দেখা 'উন্নত বাংলাদেশ' এর স্বপ্নকে সার্থক করে তুলতে যে প্রজ্ঞাদীপ্ত প্রজন্মের প্রয়োজন ইনোভেটর সেই প্রজন্মকে নির্মাণ করছে। বর্তমান সময়ের প্রধানতম সমস্যা-ধর্মীয় উগ্রবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, তথ্য-প্রযুক্তির অপব্যবহার প্রভৃতি থেকে মুক্তি পেতে প্রয়োজন মননশীলতার বিকাশ। ইনোভেটর তরুণদের হাতে বই তুলে দিয়ে সেই সৃজনশীল সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
 
বই পড়া অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইনোভেটর এর মুখ্য সঞ্চালক, সিসিক কাউন্সিলর রেজওয়ান আহমদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইনোভেটর এর নির্বাহী সঞ্চালক প্রণবকান্তি দেব। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইনোভেটর এর যুগ্ম সমন্বয়ক ঈশিতা ঘোষ চৌধুরী এবং সদস্য সৈয়দা আছিয়া খাতুন।
 
বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী অনিমেষ বিজয় চৌধুরী, প্রতীক এন্দ টনি এবং ইনোভেটর এর সমন্বয়ক আশরাফুল ইসলাম অনির পরিচালনায় জাতীয় সংগীত এর মধ্য দিয়ে শুরু হয় বইপড়া উৎসব এর আয়োজন।
 
এর আগেই দুপুর ২টা থেকে অনুষ্ঠানস্থলে সিলেটের বিভিন্ন জায়গা থেকে জড়ো হতে থাকে শিক্ষার্থীরা। এসেই উৎসবের নিয়ম অনুযায়ী রিপোর্টিং করতে হয় তাদের। এ সময় শিক্ষার্থীদের হাতে একটি করে জাতীয় পতাকা তুলে দেন দায়িত্বে থাকা ইনোভেটর এর সদস্যরা। ইনোভেটর এর প্রধান সমন্বয়ক প্রভাষক সুমন রায় এবং যুগ্ম সমন্বয়ক প্লপা চৌধুরীর তত্ত্বাবধানেএকদল স্বেচ্ছাসেবক রিপোর্টিংয়ের দায়িত্ব পালন করেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৮৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০২১
এনইউ/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।