ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

জেলা প্রশাসকের কাছে কম্বল চেয়ে পেলেন ঘর!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২১
জেলা প্রশাসকের কাছে কম্বল চেয়ে পেলেন ঘর!

ঠাকুরগাঁও: আম্বিয়া খাতুন (৬০)। অন্যের জমিতে খড় কুটো দিয়ে কোনো রকম ঘর করে থাকতেন তিনি।

গত বুধবার জেলা প্রশাসকের এক ব্যতিক্রমী আয়োজিত গণশুনানির আম্বিয়া খাতুন শীতের কম্বল চাইতে এসে, পেলেন সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর। সরকারের বরাদ্দকৃত ঘর প্রদান করে নজির স্থাপন করলেন ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান।  

গণশুনানিতে অংশ নেয়া ২৫টি অসহায় ও ভূমিহীন পরিবারকে আনুষ্ঠানকিভাবে ঘরের চাবি তুলেন দেন তিনি। শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের কান্দরপাড়া গ্রামে আনুষ্ঠানিকভাবে ২৫ জন ভূমিহীন পরিবারকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের চাবি তুলে দেন।

অসহায় দরিদ্র পরিবারের মানুষেরা জেলা প্রশাসকের নিয়মিত গণশুনানিতে অংশ নিয়ে নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন। তবে ব্যতিক্রম ছিল কয়েক দিন আগের গণশুনানি। শীত বাড়তে থাকায় হতদরিদ্র পরিবারগুলো গণশুনানিতে অংশ নিয়ে বস্ত্রের জন্য আহ্বান জানালে জেলা প্রশাসক নিজের আগ্রহে তাদের বাসস্থানের খবর জানতে চান। তাদের মধ্যে ভূমিহীন পরিবারদের আশ্রয়ণ প্রকল্পের সরকারি ঘর বরাদ্দ দেওয়ার কথা জানালে আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠেন তারা। এবং তাদের মধ্য থেকে তালিকা করে হয়।

বসতভিটা ও ভূমিহীন পরিবারগুলো ঘর বরাদ্দ পেয়ে বেশ খুশি। পরে প্রত্যেক পরিবারের মধ্যে শীতবস্ত্র দেন জেলা প্রশাসক।

ঘর পাওয়া পরিবারগুলো জানান, আমরা গণশুনানিতে অংশ নিয়ে শীতবস্ত্রের কথা জানালে ডিসি স্যার আমাদের বাড়ি আছে কি না তার খোঁজ খবর নেন। যাদের ঘরবাড়ি নেই ভূমিহীন তাদের ঘর দেয়ার আশ্বাস দেয়ার পর আজ ঘরের চাবি তুলে দেন।  

ঘর পেয়ে আম্বিয়া খাতুন বলেন, ‘পরের জায়গায়ত কষ্ট করি ঘর বেধে ছিলাম। বৃষ্টির সময় খুব কষ্ট করে দিন কাটাতে হয়। শীতকালেও কষ্ট করে দিন কাটাতে হয়। তাই ডিসি স্যারের কাছে গেছিনু কম্বল চাহিবা পানু ঘর আল্লাহর কাছে দোআ ডিসি স্যারে জন্য। স্যার মোর কথা শুনিয়া এখান ঘর দিতে চাইল কিন্তু আমি বিশ্বাস করি নাই। অবশেষে সত্যিকারে ঘর পাইলাম এরকম ভাল ডিসি স্যার কখনো দেখোনি গেছিনু কম্বল চাহিবা, পানু একখান পাকা ঘর। আমরা সবাই কৃতজ্ঞ ডিসি স্যারে কাছে। ’

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু তাহের মো. সামসুজ্জামান জানান, ডিসি স্যার ভূমিহীনদের কথা শোনার পর আজ ঘরের চাবি তুলে দিয়ে ব্যতিক্রমী কাজ করেছেন।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান জানান, ভূমিহীনরা মাথা গোজার ঠাঁই পেল। পরিবারগুলো তাদের সন্তানদের নিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করবে- এমন চিন্তা থেকেই তাদের আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ঘোষণা দিয়েছেন। আমরা সেটা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি। গণশুনানিতে আসা অনেকের মুখে যখন শুনলাম তাদের থাকার মতো নিজস্ব ঘর নেই। প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর বরাদ্দ থেকে ভূমিহীন অসহায় পরিবারেরকে ঘর দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসকের তথ্য মতে, জেলায় দুটি ধাপে চার হাজার ৩০০ ঘর নির্মাণ সম্পূর্ণ হয়েছে। আর তৃতীয় ধাপে ৯০০ এর বেশি ঘরের কাজ চলমান রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।