ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কারখানায় শ্রমিককে অজ্ঞান করে ধর্ষণ, কর্মকর্তা গ্রেফতার

সাভার করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০২১
কারখানায় শ্রমিককে অজ্ঞান করে ধর্ষণ, কর্মকর্তা গ্রেফতার

সাভার (ঢাকা): সাভারের আশুলিয়ায় ইয়াগি বাংলাদেশ গার্মেন্টসে নারী শ্রমিককে রক্ত নেওয়ার কথা বলে ঘুমের ইনজেকশন পুশ করে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় জাহাঙ্গীর আলম নামে ওই কারখানার প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জামাল সিকদার মামলা ও একজনকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে ভুক্তভোগী নারী ওই কর্মকর্তাসহ অজ্ঞাতনামা আরও দুই জনকে আসামি করে মামলা করেন।

গ্রেফতার জাহাঙ্গীর আলম (৩২) কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ থানার সাকতলা গ্রামের ইয়াকুব আলী পাটোয়ারীর ছেলে। তিনি আশুলিয়ার বেরন ছয়তলা এলাকার নুরুজ্জামানের বাড়ির ভাড়াটিয়া এবং স্থানীয় ইয়াগি বাংলাদেশ গার্মেন্টস লিমিটেডে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেব চাকরি করেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ ডিসেম্বর ওই নারী আশুলিয়ার উত্তর বেরন এলাকার ইয়াগি বাংলাদেশ গার্মেন্টসে হেলপার হিসেবে চাকরি নেন। গত ২১ ডিসেম্বর রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করার জন্য ওই কারখানায় কর্মরত এক নারী তার রক্ত নেয়। এরপর ২৩ ডিসেম্বর দুপুরের খাবারের জন্য বিরতি দিলে অন্যান্য শ্রমিকের পাশাপাশি ভুক্তভোগী নিজেও খেতে যাওয়ার সময় কারখানার এক নারী এসে আবার রক্ত লাগবে বলে তাকে নিচ তলার একটি কক্ষে নিয়ে যায়। কক্ষে আগে থেকেই কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমসহ আরও দুই পুরুষ ছিলেন। এসময় রক্ত নেওয়ার নাম করে ইনজেকশনের সিরিঞ্জের মাধ্যমে কৌশলে অজ্ঞান করার ওষুধ পুশ করে ওই নারী। পরে ভিকটিম অজ্ঞান হয়ে পড়লে সেখানে অবস্থানরত জাহাঙ্গীর আলমসহ অজ্ঞাতনামা আরও এক পুরুষ তাকে ধর্ষণ করে কার্টুনের উপর ফেলে রেখে চলে যায়।

প্রায় দুই ঘণ্টা পর জ্ঞান ফিরে আসলে ভিকটিম বাসা চলে যান এবং বাবা-মাকে বিষয়টি খুলে বলেন। পরে বাবা-মাকে নিয়ে কারখানায় গেলে নিরাপত্তাকর্মী ও জাহাঙ্গীর আলম তাদের ভেতরে ঢুকতে না দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে তাড়িয়ে দেয়।

এদিকে, মঙ্গলবার সকালে বিষয়টি কারখানার অন্যান্য শ্রমিকদের মধ্যে জানাজানি হলে তারা কাজ বন্ধ করে দিয়ে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করে। একপর্যায়ে কারখানা ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। পরে বুধবার সকালে ভিকটিম নারী আশুলিয়া থানায় কারখানার প্রশাসনিক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও দুই জনকে আসামি করে একটি ধর্ষণ মামলা করেন।   আজও সেই বিক্ষোভ চলমান রয়েছে।

এব্যাপারে বক্তব্য নিতে ইয়াগি বাংলাদেশ গার্মেন্টস লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর বাবর এর মুঠোফোনে বার বার কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

আশুলিয়ার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জামাল সিকদার বলেন, মঙ্গলবার রাতে ভিকটিমের অভিযোগটি আমলে নিয়ে মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় আটক জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেফতার দেখিয়ে বুধবার সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ভিকটিমকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের (ঢামেক) ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০২১
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।