পাথরঘাটা(বরগুনা): ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের আট দিন পার হয়ে গেছে, এখনো সন্ধান মেলেনি বরগুনার পাথরঘাটার ফজিলা আক্তার পপির। এতে পপির স্বজনরা উদ্বেগ–উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
নিখোঁজ ফজিলা আক্তার পপি (২৫) বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার চরদুয়ানী ইউনিয়নের ছোট টেংরা গ্রামের আফজাল হোসেনের মেয়ে। স্বজনরা দুর্ঘটনার পর এমভি অভিযান-১০ লঞ্চসহ ঝালকাঠি ও বরগুনা সদর হাসপাতালের মর্গে এবং বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে খোঁজখবর নিয়েও তার সন্ধান পাননি।
পপি বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) ঢাকা থেকে পাথরঘাটায় অভিযান-১০ লঞ্চে রওনা হন। একমাত্র মেয়ে লামিয়াকে (১৩) বাবার বাড়ি থেকে নিজ কর্মস্থল ঢাকার সাভারে বিদ্যালয়ে ভর্তি করানোর জন্য নিতে আসছিলেন তিনি। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস পপির ইচ্ছেটা পূরণ হলো না।
পপির বৃদ্ধ বাবা আফজাল হোসেন বলেন, ‘একমাত্র মাইয়াডারে হারাইলাম। এহন ক্যামনে থাকমু। জামাই মাইয়াডারে ৭ বছর আগে তালাক দিয়া যায়। জীবন বাঁচাইতে ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি করতো। মাইয়াডার লাশটা পাইলেও কবরডা দেখতাম। ’
পপির ১৩ বছরের একমাত্র মেয়ে লামিয়া বলে, ‘মায় কইছিল, বাড়িতে আইয়া মোরে ঢাকায় নিয়া ভালো একটা স্কুলে ভর্তি করাইবে। এহনো মায় আয় নাই। হুনছি যে লঞ্চে আগুন লাগছে হেই লঞ্চেই মোর মায় আছিল¬। এহন মোরে মা কইয়া কেডা বোলাইবে। মোর মায় কি আইবে?
এর আগে গত শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে ঝালকাঠি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বরগুনার ৩৬টি মরদেহ গ্রহণ করেন বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান। পরে তিনি ওই মরদেহ বরগুনা জেলা প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করেন। পরদিন শনিবার পাথরঘাটার ওই চারজনের জানাজায় তিনি অংশ নেন। এছাড়াও জাতীয় সংসদের ৩১৫ মহিলা আসনের সংসদ সদস্য সুলতানা নাদিরা ঝালকাঠি ও বরিশাল অগ্নিদগ্ধদের চিকিৎসায় আর্থিক সহায়তা করেন।
এ পর্যন্ত সুগন্ধা নদীতে লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বরগুনার পাথরঘাটায় ৪ জনের মরদেহ দাফন করা হয়েছে। পপিসহ এখনো অনেক মানুষ নিখোঁজ রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০২১
আরএ