নিউইয়র্ক: বিশ্ব অনেক কঠিন ও জটিল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেছেন, ধর্মের মৌলবাদী ব্যবহার ‘সন্ত্রাস’ এর পরিণতি ডেকে আনছে। অথচ ধর্মে এর কোনো স্থানই নেই।
বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, যদিও পৃথিবীতে এর আগেও এমন ঘটেছে। ৩০০ বছর আগে ইউরোপের যুদ্ধ অথবা অন্য সময়ে প্রোটেস্টান ও ক্যাথলিকদের মধ্যে হানাহানি হয়েছে।
কিন্তু বর্তমান সময়ের সংঘাত মিডিয়ার কারণে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে উল্লেখ করে জন কেরি বলেন, মিডিয়া এখন মানুষের হাতের নাগালে। মানুষ তাৎক্ষণিকভাবে প্রতি মুহূর্তের খবর পেতে মনোযোগী। আর স্বাভাবিকভাবেই যারা বিষয়টির সঙ্গে সম্পৃক্ত তারা এই পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঈদুল আযহা’র চেতনায় নিষ্ঠা ও ত্যাগের মাধ্যমে জীবনকে সমৃদ্ধ ও সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান।
এদিন সন্ধ্যায় ওয়াশিংটনে স্টেট ডিপার্টমেন্টে মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সম্মানে আয়োজিত এক সংবর্ধনা সভায় জন কেরি এ আহ্বান জানান।
মুসলিম কমিউনিটি বিষয়ক স্টেট ডিপার্টমেন্টের স্পেশাল রিপ্রেজেনেটেটিভ সারিক জাফর সভায় সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন।
সভায় জন কেরি আরো বলেন, আমরা এমন এক সময়ে বসবাস করছি, যখন আধুনিকতম বিশ্বকে দেখে তরুণরা একই জীবনমানের দাবি জানাচ্ছে।
তিনি বলেন, কে সরকারে আছে, কী ধরনের সরকার আছে, আমার কাছে তা মোটেও বিবেচ্য হবে না। তরুণদের এ প্রয়োজন ও দাবির মুখোমুখি আমাদের হতেই হবে।
‘দক্ষিণ মধ্য এশিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার উত্তরের দেশগুলিতে ৬৫ ভাগ জনগোষ্ঠীর বয়স ৩৫ এর নীচে। ৩০ বছরের নীচে ৬০ ভাগ এবং ৫০ ভাগই ২৫ বছরের নীচে। এ ক্ষেত্রে যদি এসব অঞ্চলের দাবির প্রতি নজর না দেওয়া হয় তাহলে শাসনব্যবস্থায় সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে।
সভায় সিরিয়া ও আইএসআইএল এর প্রসঙ্গ টেনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আজকের এ সমস্যার চেয়েও বড় চ্যালেঞ্জ শান্তি প্রতিষ্ঠা। যে কোনো সময়ের চেয়ে এটা আরো জরুরি বলে তিনি মন্তব্য করেন।
জন কেরি প্যালেস্টাইন ও ইসরায়েল সমস্যার সমাধানে ‘দুই রাষ্ট্র’ প্রস্তাবনাকে সমর্থন করে বলেন, সবাইকে উপলব্ধি করতে হবে এক্ষেত্রে ‘হিউমিলিয়েশন ও এবসেন্স অব ডিগিনিটি’ বিষয়ে অনেক করণীয় রয়েছে।
ঈদুল আযহা’র শিক্ষায় অনেক রাষ্ট্র রিফিউজিদের আশ্রয় ও জরুরি খাদ্য সরবরাহে কাজ করছে উল্লেখ করে জন কেরি আরো বলেন, সময় এসেছে শুধু উপসর্গ সন্ত্রাস এবং উগ্রবাদই মোকাবেলা নয়, বরং এর অন্তঃনিহিত কারণও বের করতে হবে। দুর্নীতিরোধ করে সুশাসন ও জনগণের প্রয়োজন মেটাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি ভাগ করে নিতে শিক্ষা, কর্মসংস্থানের মতো বিষয়ে সকলের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টিতে বিশ্ব অংশীদারিত্বের উপর গুরুত্বারোপ করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, টেকসই পৃথিবী গড়ে তুলতে বিশ্ব অংশীদারিত্ব আমাদের গড়ে তুলতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৪