নিউইয়র্ক: জাতিসংঘের ‘সাউথ-সাউথ কো-অপারেশন ভিশনারি অ্যাওয়ার্ড’ এ ভূষিত হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে ‘গ্লোবাল সাউথ সাউথ ডেভেলপমেন্ট এক্সপো (জিএসএসডি এক্সপো) এর সমাপনী উৎসবে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে এ অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেছেন তার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ও ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়।
স্থানীয় সময় ২১ নভেম্বর শুক্রবার সকালে এ অ্যাওয়ার্ড হাতে নিয়ে তাৎক্ষণিক সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়ায় সজীব ওয়াজেদ জয় সাংবাদিকদের বলেন, সীমিত সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে শেখ হাসিনা প্রশাসনের নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশ যে এগিয়ে যাচ্ছে এই অ্যাওয়ার্ড তারই স্বীকৃতি।
সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও প্রেসিডেন্ট, হাই লেভেল কমিটি অন সাউথ-সাউথ কো-অপারেশন ড. একে আব্দুল মোমেন। পুরষ্কার প্রদান অনুষ্ঠানে গ্লোবাল সাউথ-সাউথ ডেভেলপমেন্ট এক্সপো ২০১৪-এ অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের সরকারি, বেসরকারি এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধি; বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা এবং স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের উপ-প্রধান মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত।
ডিজিটাল ব্যবস্থায় বাংলাদেশকে অগ্রগতির পথে এগিয়ে নেওয়া এবং শিক্ষার প্রসারে বৈপ্লবিক ধ্যান-ধারণার সমন্বয়ের জন্য শেখ হাসিনাকে এ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। এবার মানবতার কল্যাণে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্যে আরও ছয় ব্যক্তি ও রাষ্ট্রকে অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, কাতার, অর্গানাইজেশন অব আমেরিকান স্টেটস, গ্রুপ চীপ এক্সিকিউটিভ এডেক ইনোভেশন, ল্যাটিন আমেরিকান সাউথ-সাউথ কান্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন এ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে।
মেধা ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে বিশ্বকে এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয়ে শতাধিক দেশের মন্ত্রী, কূটনীতিক, নীতি-নির্ধারক, শীর্ষস্থানীয় এনজিও ব্যক্তিত্ব, সমাজ সংগঠক, শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়ী, অর্থনীতিবিদ, জাতিসংঘের সব সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তাসহ পাঁচ শতাধিক প্রতিনিধির অংশগ্রহণে ওয়াশিংটন ডিসিতে ১৭ নভেম্বর সোমবার ‘গ্লোবাল সাউথ- সাউথ ডেভেলপমেন্ট এক্সপো’ শুরু হয়ে ২১ নভেম্বর শেষ হয়েছে।
জাতিসংঘের ‘গ্লোবাল সাউথ সাউথ ডেভেলপমেন্ট এক্সপো তার ঘোষণায় বলেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশাসনের সময় বাংলাদেশে তৃণমূলে তথ্য প্রযুক্তি প্রসার, সর্বজনীন শিক্ষাব্যবস্থার প্রবর্তন, সর্ব সাধারণের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর মাধ্যমে সমাজে অবহেলিত মানুষের জীবনধারার মানোন্নয়ন ও দারিদ্র বিমোচনে অগ্রগতি এবং সীমিত সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে বিশ্ব দরবারে রোল মডেল হিসেবে উপস্থাপনের জন্য এ ‘ভিশনারি অ্যাওয়ার্ড’ পাবার যোগ্যতা অর্জন করেন শেখ হাসিনা।
দারিদ্র বিমোচন, খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য এবং জনসংখ্যার সুব্যবস্থাপনা, শিক্ষার প্রসার, লিঙ্গ সমতা এবং নারী ক্ষমতায়ন, জ্বালানি, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, শিল্পায়ন এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন নিয়ে স্ব স্ব ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতাসম্পন্নরা বিভিন্ন ফোরামে আলোচনা করেছেন এ এক্সপোতে।
‘২০১৫ পরবর্তী বিশ্বকে কীভাবে দেখতে চাই’ সে আলোকে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন সেক্টরের কর্মকর্তারাও মতামত ব্যক্ত করেছেন। ‘অর্গানাইজেশন অব আমেরিকান স্টেটস’ (ওএএস) এবং জাতিসংঘের ‘সাউথ-সাউথ কো-অপারেশন’ অফিস যৌথভাবে বার্ষিক এ এক্সপোর আয়োজন করে।
২০০৮ সাল থেকে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বার্ষিক এ সমাবেশ হয়ে আসছে। এবারের আয়োজনটি ছিলো সপ্তম এক্সপো।
রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পরিবেশ এবং প্রযুক্তিগতভাবে দক্ষিণের দেশগুলোর সামগ্রিক উন্নয়নে পারস্পরিক সহযোগিতা দিগন্ত বিস্তৃত করার লক্ষ্যে ২০০৮ সালে জাতিসংঘে সাউথ-সাউথ কো-অপারেশন গঠিত হয়।
প্রতি বছরের সমাবেশে উন্নত বিশ্বের উন্নয়ন পরিক্রমার অভিজ্ঞতা অবহিত হয়ে উন্নয়নশীল বিশ্বে সেই ধারা প্রবাহিত করার ক্ষেত্রে এই সম্মেলনের গুরুত্ব অপরিসীম।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৪