ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অফবিট

খেলাচ্ছলে শিক্ষা বেশি কাজের

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৬
খেলাচ্ছলে শিক্ষা বেশি কাজের

আমরা অন্যদের চেয়ে আলাদা। শিক্ষা নিতেও তাই যার যার বুদ্ধিমত্তা ও মানসিক চেতনাশক্তিকে কাজে লাগাতে হয়।

নিজ নিজ পছন্দসই শিখনশৈলী শেখা ও শেখানোকে সহজ করে।

গবেষকরা বলছেন, আমাদের মস্তিষ্কে বিচ্ছিন্নতা কাজ করে না। আমরা যখন কঠিন কিছু শুনি, তখন সামনে থাকা নমুনাগুলো শেখাতে সহায়তা করে। তাই নমুনা দেখিয়ে, বিভিন্ন শিখন সরঞ্জামের সাহায্যে খেলাচ্ছলে শেখানোটা তুলনামূলকভাবে সহজ।    
 
‘আপনি যখন নতুন কোনো কাজ করতে চেষ্টা করছেন বা কারও কাছ থেকে নতুন কিছু শিখছেন, সামনে তার একটি নকশা থাকলে তা খুব সহজেই হয়ে যায়। যখন কেউ কোনো কিছুর কাজের পদ্ধতি দেখাতে চান, তখন এ সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তরও পেয়ে যাবেন সেটির কাজের প্রকৃতি চাক্ষুষ প্রত্যক্ষ করার মাধ্যমে।

২০১৪ সালে ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পল হাওয়ার্ড জোনস পাঁচটি দেশের নির্বাচিত শিক্ষকদের নিয়ে গবেষণা করে দেখিয়েছেন, নিজস্ব শিখনশৈলীকে পছন্দ করছেন যে শিক্ষকরা, তাদের কাছ থেকে সহজেই শিখছে শিক্ষার্থীরা। এটি তত্ত্বীয় জ্ঞান অর্জন থেকে অনেক সহজ হচ্ছে। অনুশীলনের চেয়ে প্রমাণ সহকারে শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এই গবেষক।

জোনসের গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, চীন ও তুরস্কে ৯৭ শতাংশ শিক্ষার্থীদের পছন্দের শেখার শৈলী অনুযায়ী পড়ানো হয়, যুক্তরাজ্যে এ হার ৯৩ শতাংশ।

বছরের পর বছর ধরে শিখনশৈলীর শ্রেণী বিভাজন ও বিভিন্নভাবে তার উন্নয়ন করা হয়েছে, জনসম্পৃক্ততা বাড়ানো হয়েছে। তাত্ত্বিক বনাম বিমূর্ত, চিন্তাবিদ বনাম ভাবুক, সংগঠক বনাম সংস্কারক তুলনা এবং অনেক, অনেক বেশি পর্যালোচনা করে ৩০টির বেশি প্রমাণ পাওয়া গেছে পছন্দের শেখার পদ্ধতির মূল্যায়ন করা হলে সহজেই শিখতে পারে শিক্ষার্থীরা।

যেসব স্কুলে বিভিন্ন মূল্যায়ন সরঞ্জাম কয়েক ডজন কেনা এবং চোখে দেখে শেখার সুযোগ দেওয়া হয় সেসব স্কুলের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় বেশি আগ্রহী ও সেরা হয়েছে।   বিশ্বজুড়ে বিদ্যালয়গুলো তাই হাজার হাজার শিক্ষার্থীর পছন্দের শেখার শৈলী নির্ধারণ ও গ্রহণ করেছে এবং তারপর যেখানে সম্ভব তাদের শৈলী অনুযায়ী শিক্ষাদান করে সফলতা পেয়েছে।

‘এই ধারণা ও অনুমাণ এটাও বলছে যে, যদি আপনার নিজস্ব পছন্দের সঙ্গে শিখন শৈলীর সমন্বয়ে শেখানো হয়, তাহলে আপনি সহজেই শিখতে ও আরও ভালো করতে পারবেন। এটা স্কুলে বিশালভাবে জনপ্রিয় হয়েছে এবং শিক্ষকরাও এ বিষয়ে একমত। শ্রেণিকক্ষে শিশুদের পছন্দের শৈলী দিয়ে শেখানো শিক্ষকরা জনপ্রিয় হন’- বলছেন গবেষকরা।

‘একটি বই দেখে রান্নার চেয়ে রান্নাঘরে বসে নিজেই চাক্ষুষ প্রমাণের সহায়তায় রান্না সহজ ও খাবার উপাদেয় হয়। একটি যান সম্পূর্ণভাবে চালাতে শেখার ক্ষেত্রেও হাতে-কলমে শেখার কোনো বিকল্প নেই। কোনো কোনো শিক্ষাগ্রহণে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে। তবে ভালো একটি নির্দিষ্ট শেখার শৈলীকে অগ্রাধিকার দিলে সময়ও কমে যায়’।

ছবির সাহায্যে শেখা মৌখিক নির্দেশাবলীর চেয়ে বেশি কার্যকর বলে উল্লেখ করা হয়েছে একটি পাক্ষিক রিভিউ জার্নালের গবেষণায়।

শেখার শৈলীর ওপর ১৬ মাসের একটি গবেষণার প্রধান পর্যালোচনা প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। গবেষকরা ৭১টি বিভিন্ন বিভিন্ন মডেল চিহ্নিত এবং ১৩টির বিষদ বিশ্লেষণ করেন। তারা এ সিদ্ধান্তে আসেন যে, শেখার শৈলী পরিমাপই শিক্ষা দেওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায়।  

গবেষকরা তাত্ত্বিক ও চাক্ষুষ শিখন পদ্ধতির ওপর তুলনামূলক গবেষণা করে বলেছেন, প্রথমটি কঠোর পদ্ধতি এবং দ্বিতীয়টি ইতিবাচক ফলাফল বয়ে আনছে। তারপর তারা জোর দিয়ে বলছেন, নিজ নিজ পছন্দ অনুযায়ী খেলাচ্ছলে শিক্ষাই সহজ ও প্রকৃত শিক্ষা।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৬
এএসআর/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।