ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অফবিট

পাখির গানে বিবর্তনের সূত্র!

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৬
পাখির গানে বিবর্তনের সূত্র!

বিজ্ঞানীরা ডাইনোসরের সময়কালে পৃথিবীতে বাস করতো এমন একটি বিলুপ্ত পাখির স্বরযন্ত্র পুনর্নির্মাণ করেছেন।

ধারণা করা হতো ‘ভেগাভাইস লাই’ নামে পাখিটি ৬৬ থেকে ৬৮ মিলিয়ন বছর আগে অ্যান্টার্কটিকায় বাস করতো।

এটি রাজহাঁস প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত। তারা হাঁস বা রাজহংসীর মতো প্যাঁক প্যাঁক করে ডাকতো অথবা শিস দিতো।

পাখিটির স্বরযন্ত্র তার বুকের গভীরে পাওয়া যায়। ওই স্বরযন্ত্রের প্রাচীনতম জীবাশ্ম নিয়ে বিজ্ঞানীরা গবেষণা শুরু করেন পাখিরা কিভাবে গান গায়।

অস্টিনের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের জুলিয়া ক্লার্ক বলেন, ‘পাখির ধ্বনি সৃষ্টি ও এর বিবর্তনের অনন্য উপায় নিয়ে তেমন কোনো কাজ হয়নি’।

তিনি বলেন, ‘আমরা পাখির ডানার বিবর্তনের বিষয়ে অনেক গবেষণা করেছি। যদিও পাখির বেঁচে থাকার সবচেয়ে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হলো তাদের গান, কিন্তু আমরা এ মূলবিন্দুতে খুব অল্পই আলো ফেলেছি’।

অধ্যাপক ক্লার্ক ও তার দল এক্সরে স্ক্যানিং কৌশল মাইক্রো-সিটির সাহায্যে হাসপাতালে জীবাশ্ম নমুনাটির একটি ছোট স্কেলে সিটি স্ক্যান করেছেন।

তারা স্বরযন্ত্রের সুর বা পাখির গানের একটি থ্রি-ডি চলচ্চিত্র উপস্থাপন করেন। তারপর আরেক ধরনের যে ছোট জীবাশ্মের প্রতিবিম্ব ব্যবহার করেন, যাতে নরম টিস্যু সম্পর্কিত তথ্য ও ১২টি জীবন্ত পাখির সঙ্গে তুলনা করা হয়।

এটি তাদেরকে ছোট অস্থিময় অঙ্গ স্বরযন্ত্রের বিবর্তন বা পুনর্গঠনের অনুমোদন দিয়েছে।

‘আমরা স্পষ্টভাবে মনে করি, এই স্বরযন্ত্র রাজহংসীর মতো শব্দ করতে বা বাঁশি বাজাতে সক্ষম’- বলেন অধ্যাপক ক্লার্ক।

‘কিন্তু আমরা আরো সঠিকভাবে ফ্রিকোয়েন্সির পরিসীমা বা শব্দগুলোর বিভিন্নতা বুঝতে চাই। সেজন্য আমাদের মডেল তৈরি করতে হবে এবং পাতিহাঁসের বসবাস, জীবনযাপন ও কণ্ঠে উৎপাদিত শব্দের ব্যপ্তি সম্পর্কে আরও তথ্য পেতে হবে’।

গবেষকরা মনে করেন, এই গবেষণা বিবর্তনের ধারায় পাখির দেরিতে উড়তে শেখার কারণ সম্পর্কে ভালো ফলাফল বয়ে আনতে পারে।

গবেষণার ওপর মন্তব্য করতে গিয়ে ওহিও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্যাট্রিক কোনর বলেন, ‘সাইরিংস উড়তে পারে না, এমন অ-পাখি ডাইনোসরের প্রাপ্তি সম্পর্কে কোনো প্রমাণ দেয়নি। এর মানে দাঁড়ায়, সাইরিংস পাখি প্রজাতির অপেক্ষাকৃত দেরিতে আগমনের প্রমাণ হতে পারে এবং পাখির বৈচিত্র্যের পেছনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে’।

‘তাদের আশ্চর্যজনক এ বৈচিত্র্যকে ষরযন্ত্র সাইরিংস বা শব্দ উৎপাদন ও সামাজিক মিথস্ক্রিয়া সৃষ্টি সম্পর্কিত মস্তিষ্কের যেকোনো অঞ্চলের বিবর্তনের সঙ্গেও তুলনা করা যেতে পারে।

এ বছরের শুরুর দিকে প্রফেসর ক্লার্কের দল ধারণা করেন, কিছু অ-পাখি ডাইনোসর গভীর গুড়ুম গুড়ুম শব্দ তৈরি করতে পারতো। এ শব্দও ডাইনোসরের সময়কালের পৃথিবীর একটি একটি শব্দ আড়াআড়ি পূর্ণাঙ্গ ভূ-চিত্রাবলী দৃশ্যায়নে সক্ষম হবে।

‘অ-পাখি ডাইনোসরের মতো সবচেয়ে বড় আকারের প্রাণীদের নিম্ন ফ্রিকোয়েন্সির শব্দ শোনা যাচ্ছিলো’- বলেন প্রফেসর ক্লার্ক।

‘কিন্তু তারপর যখন আমরা পাখিসহ এই ছোট আকারের ডাইনোসরের উৎপত্তি সম্পর্কে জানলাম, তখন মনে করলাম, রাজহাঁস, রাজহংসী বা কাকের উৎপাদিত ছোট মাত্রার কিছুটা বেখাপ্পা শব্দ বা কণ্ঠস্বর পেতে যাচ্ছি আমরা’।

সাইরিংসের প্রাচীনতম জীবাশ্ম সম্পর্কে এ গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে ‘নেচার’ জার্নালে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৬
এএসআর/এটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।