ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অফবিট

‘এলিয়েন ডিএনএ’ নিয়ে টিকে থাকে কোটি কোটি বছর!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০১৬
‘এলিয়েন ডিএনএ’ নিয়ে টিকে থাকে কোটি কোটি বছর!

বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণবন্ত ও কষ্টসহিষ্ণু প্রাণী হিসেবে তেলাপোকার বলিষ্ঠতার খ্যাতি রয়েছে। অনেকের বিশ্বাস, কোটি কোটি বছর ধরে টিকে থাকা এ প্রাণীটি এমনকি পারমাণবিক বিস্ফোরণের মাঝেও বেঁচে থাকতে পারে।

আমরা এটাও নিশ্চিত যে, মহাশূন্যের বৈরী শূন্যতা ও অভিশপ্ত পরিবেশেও বেঁচে থাকতে পারবে জল বহনকারী ছোট ফাইলাম ও জল ভালুক।

এখন  জানা গেছে, এ ধরনের আরও অনেক প্রাণী ও উদ্ভিদ আছে, যারা প্রতিকূল পরিবেশেও টিকে আছে কোটি কোটি বছর ধরে।

যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েলোস্টোন ন্যাশনাল পার্কের অ্যাসিডযুক্ত ফুটন্ত গরম ঝরনার পানিতে বাস করছে গার্ডেরিয়া সালফারেরিয়া নামক এক ধরনের শ্যাওলা। ইতালি, রাশিয়া ও আইসল্যান্ডের আগ্নেয় এলাকায়ও টিকে আছে গার্ডেরিয়া। শ্যাত্তলাগুলো ভূ-গর্ভস্থ আর্সেনিক, জল-ব্যাটারি, অ্যাসিড হিসেবে জারক এবং ভারি ধাতু মেশানো পরিবেশে চরম অবস্থায়ও বেঁচে থাকে। এমনকি তারা চারপাশের গরম মাটির ওপরও ক্রমবর্ধমান।

এসব প্রাণঘাতী স্থানে বেঁচে থাকতে এরা একটি অপ্রত্যাশিত কৌশল ব্যবহার করছে। আর তা হচ্ছে, পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে জিন চুরি। বিজ্ঞানীরা একে বলছেন, ‘এলিয়েন ডিএনএ’।

এটা হতে পারে যে, জিন চুরি একটি মোটামুটি সাধারণ বিবর্তনীয় কৌশল। বেঁচে থাকার জন্য তাদের জন্য জিন চুরির প্রয়োজন হয়। এটি একটি যুদ্ধকৌশলও, যেটি আমাদের নিজেদের তুলনায় আরো সাধারণ।

গভীর ভূগর্ভস্থ চির হিমায়িত অঞ্চল, ফুটন্ত গরম অঞ্চল, আতিথেয়তাশূন্য স্থান এবং সমুদ্রের নিচে লুকিয়ে তারা বিলিয়ন বিলিয়ন বছর টিকে থাকছে। কোটি কোটি বছরের দীর্ঘ যাত্রাপথে কোটি কোটি নতুন নতুন জিন তাদেরকে সবকিছুর সঙ্গে মানিয়ে নিতে সাহায্য করেছে, যা মূলত চুরি করা।

সবুজ গার্ডেনিয়া বিরল ইউক্যারিয়োটস থেকে অনুভূমিক জিন স্থানান্তর করে আইসল্যান্ডের আগ্নেয়গিরি এলাকায় বাঁচে।

বৃক্ষ তার জীবনচক্রে হলুদ সালফার জমা করে এবং মাঝে মাঝে এর জিন এক শাখা থেকে অন্য শাখায় ঝাঁপ দেয়।

রাজকীয় প্রজাপতি ওয়াসপস্‌ থেকে খাঁজ কাটা জিন চুরি করেছে। উজ্জ্বল সবুজ সমুদ্র স্লাগ্ এলিসিয়া ক্লোরোটিকা সূর্যালোক থেকে শক্তি ব্যবহার করে বেঁচে থাকতে পারে।

এখন এটিই একটি রহস্য যে, কিভাবে গার্ডেনিয়া চরম তাপকে সঙ্গে সঙ্গে কাটিয়ে ওঠে এবং দ্রুত একটি তাপ প্রতিরোধী জিন তাদের মধ্যে সঞ্চারিত হয়। বিজ্ঞানীরা বলেন, এটি বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে দ্রুত আনা হয়।

শ্যাত্তলাগুলো স্কয়েননেকট ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে জিন চুরি করে তার পূর্বপুরুষের চেয়ে পরাশক্তির উত্তরাধিকারের দিকে শক্তিশালী হয়েছে। ব্যাকটেরিয়া বা আর্কিয়া থেকে নেওয়া তাদের ৭৫টি জিন শনাক্তও করেছেন বিজ্ঞানীরা।

সর্বাধিক জীবন্ত প্রাণী যেসব চরম জায়গায় বসবাস করে, সেসব জায়গাই আছে এককোষী অণুজীব ব্যাকটেরিয়া বা আর্কিয়া। সহজ এবং প্রাচীন প্রাণীদের হয়তো আরো পরিশীলিত জীববিদ্যার অভাব রয়েছে। কিন্তু ব্যাকটেরিয়া বা আর্কিয়ার সরলতার একটি সুবিধা হল- এটি ওই প্রাণীদের অনেক চরম অবস্থার সঙ্গে ভালোভাবে মানিয়ে নিতে সক্ষম করে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০১৬

এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।