ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অফবিট

সাপের বিষে ব্যথা নাশ!

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ৫, ২০১৬
সাপের বিষে ব্যথা নাশ!

পৃথিবীর ভয়ঙ্করতম এক প্রজাতির সাপের বিষ ব্যথা উপশম করতে পারে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সাপটির রয়েছে বৃহত্তম বিষগ্রন্থি।

সেটি দিয়ে এখন গবেষকরা ব্যথানাশক ওষুধ তৈরির চিন্তা করছেন।
সাপটি ‘লং গ্লান্ডেড ব্লু কোরাল’ বা লম্বা লালাগ্রন্থির নীল রঙের প্রবাল প্রজাতির। কিং কোবরা সাপের মতোই শিকারে পারদর্শী এটি। সাপটি তার মতোই অন্য বিষধর সাপদেরও খেয়ে ফেলে বলে এটি ‘হত্যাকারীদের হত্যাকারী’ নামেও পরিচিত।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ২ মিটার দীর্ঘ সাপটির বিষ খুব দ্রুতই কাজ করে এবং এর শিকার খিঁচুনি দিয়ে মারা যায়।
‘টক্সিন’ জার্নালে প্রকাশিত নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, এর বিষগ্রন্থি মানুষের ব্যথার চিকিৎসায় ব্যবহার করা যেতে পারে।  
কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে গবেষক ড. ব্রায়ান ফ্রাই বলেন, বেশিরভাগ সাপের বিষই মানবদেহে খুব ধীরে কিন্তু শক্তিশালী চেতনানাশকের মতো কাজ করে। আপনার শরীর ধীরে ধীরে অবশ হয়ে যাবে, আপনার ঘুম পাবে এবং এক সময় আপনি মারা যাবেন। কিন্তু দীর্ঘ বিষগ্রন্থির নীল প্রবাল সাপটির বিষ খুব দ্রুত কাজ করে। কারণ, এটি সাধারণত খুব বিপজ্জনক প্রাণী ও তাদের মতোই অন্য বিষধর সাপদের শিকারে পরিণত করে। ওইসব প্রাণীরা প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার আগেই দ্রুত হত্যা করার প্রয়োজনে এটির বিষ দ্রুত কার্যকরী।  
এটিকে খুনিদের খুনি বলা যেতে পারে।
ড. ফ্লাই বলেন, অমেরুদণ্ডী শঙ্কু শামুক ও কাঁকড়াবিছের বিষ দিয়ে ওষুধ তৈরির জন্য অল্প কিছু গবেষণা করা হয়েছে। তবে মেরুদণ্ডী সাপ বিবর্তনের ধারায় মানুষের ঘনিষ্ঠ। তাই তার বিষ থেকে উন্নতমানের ওষুধ তৈরি ও চিকিৎসায় বেশি কার্যকর হতে পারে।  
‘সাপের বিষ আমাদের সোডিয়াম চ্যানেলকে আক্রান্ত করে, যা ব্যথা সংক্রমণের কেন্দ্র। এটিকে আমরা এমন কিছুতে পরিবর্তিত করতে পারি, যা আমাদের ব্যথা উপশমে সাহায্য করতে পারে। এবং এ ওষুধ আমাদের ওপর ভালো কাজ করতে পারে। ’
‘সাপটির বিষগ্রন্থি তার শরীরের মোট দৈর্ঘ্যের এক-চতুর্থাংশ পর্যন্ত প্রসারিত। এটা বিশ্বের দীর্ঘতম বিষগ্রন্থি। কিন্তু এটি অনেক সুন্দর এবং এ সাপ আমার প্রিয় প্রজাতি’- বলেন ড. ফ্লাই।
তার মতে, সাপই পৃথিবীর প্রথম মেরুদণ্ডী প্রাণী বলে চিহ্নিত হয়, যাদের বিষ আছে।  
কিন্তু এ প্রজাতির সাপ বিরল হয়ে যাচ্ছে। কারণ, তার ৮০ শতাংশের বেশি আবাসস্থল ধ্বংস হয়ে গেছে।
‘তারা সত্যিই বিরল। আমি শুধুমাত্র তাদের দু’টি বন্য সাপকে দেখেছি। পাম চাষের জন্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় তাদের আবাসস্থলের বেশিরভাগই সম্ভবত পরিষ্কার করে ফেলা হয়েছে’- বলেন তিনি।
 
ড. ফ্রাই ও তার দল এখন চীন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সিঙ্গাপুরসহ অন্য দেশগুলোতেও সিঙ্গাপুরের এ সাপের সমগোত্রীয় খুঁজে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
‘তার কোনো আত্মীয় পাওয়া গেলেও বিরল এ সাপের বিকল্প হতে পারে’- বলেন ড. ফ্রাই।
 
বাংলাদেশ সময়: ০০৩৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০১৬
এএসআর/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।