হাজার হাজার বছর আগে উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের সমতলভূমি ও মরুভূমি এলাকায় চড়ে বেড়াতো বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীরা। বিভিন্ন চিড়িয়াখানায় প্রতিস্থাপিত করে বিপন্ন এসব প্রাণী পুনরুদ্ধারে নানা উদ্যোগ চলছে।
আসলে পুনঃপ্রবর্তনের মাধ্যমে নেকড়ে থেকে শুরু করে ভোঁদর পর্যন্ত ওই প্রাণীদের সংরক্ষণে এ উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা করা হয়েছে। তা বাস্তবায়নে কৌশল নির্ধারণ করছেন প্রকৃতিবিজ্ঞানী ও চিড়িয়াখানার কর্মকর্তারা। বৃহদাকার বন্য অ্যারো, সিংহ, হাতি ও চিতা থেকে বিবর্তিত কমব্যাট ভালুক, হলদে-বাদামি পশমের বন্য বিড়াল লাইনেক্সের মতো ছোট প্রাণীদের নিয়েও উদ্বিগ্ন তারা। চিড়িয়াখানাগুলোর অভয়ারণ্যকে বড় প্রাণীর উত্তরসুরী এসব প্রাণীদের বাসস্থানে পরিণত করার পরিকল্পনা নিয়েও এগোচ্ছেন।
ডেনমার্কের ৠান্ডারস্ চিরহরিৎ চিড়িয়াখানার কিউরেটর ওলে সোমার বাখ জানান, তার প্রতিষ্ঠান প্রায় ১৩ হাজার বছর আগের প্লেইস্টোসিন যুগের উত্তর ডেনমার্কের এশীয় হাতি সংরক্ষণের প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। তিনি বলেন, ‘এখনকার অবশিষ্ট এ হাতি মূলত আফ্রিকা ও এশিয়ায় সীমাবদ্ধ। কিন্তু প্লেইস্টোসিন যুগে প্রত্যেক মহাদেশে বিরাট স্তন্যপায়ীদের সঙ্গে তারা জনবহুল ছিল। হাতির যেসব প্রজাতি উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপে ছিল, অস্ট্রেলিয়ার দৈত্য ওমব্যাট তাদেরই উত্তরসুরী’।
‘প্রাণীগুলো নিজেদের বাসস্থান থেকে দূরে চলে গেছে। কিন্তু বাস্তুতন্ত্র তাদের সঙ্গে প্রসূত আছে। প্লেইস্টোসিন যুগের বিলুপ্তির শেষপ্রান্তে থাকা কিছু প্রাণী এখনো আফ্রিকা ও এশিয়ায় পাওয়া যায়। তাদের বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষায় কার্যকর পুনঃপ্রবর্তন করা হবে অন্যত্র’।
প্লেইস্টোসিন প্রাণীদের পুনরুদ্ধারের এ পরিকল্পনা প্রথম করেন ভূবিজ্ঞানী পল মার্টিন। নিউইয়র্কের ইথাকা কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই গবেষক জোশ ডেনলান ও হ্যারি গ্রিনের নেতৃত্বে একটি দল এক দশক আগে থেকে তাদেরকে বর্তমান ফর্মে সংরক্ষণের কাজ করছেন।
এ প্রক্রিয়ায় মঙ্গোলিয়ার ব্যাকট্রেইন উট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। প্লেইস্টোসিন এ উট ক্যামেলপসের মাঝে বর্তমানে সংরক্ষণ প্রচেষ্টা চলছে। আবার আফ্রিকান সিংহ আমেরিকান সিংহের মাঝে পুনঃস্থাপিত এবং ম্যাস্টডোনস ও হমপোথারস্ হাতি ম্যামথস্ হাতির স্থান দখল করবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৩২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৬
এএসআর