ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অফবিট

দুই পায়ে হাঁটা প্রথম মানুষের পদচিহ্ন

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৬
দুই পায়ে হাঁটা প্রথম মানুষের পদচিহ্ন প্রতীকী

এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত জীবাশ্ম প্রমাণ করে যে, শিম্পাঞ্জি জাতীয় আমাদের পূর্বপুরুষেরা অন্তত ৬০ লাখ বছর আগে থেকে দুই পায়ে ঋজু হাঁটা শুরু করেছে। চার পায়ে হামাগুড়ি দিয়ে হাঁটার ভঙ্গিও ছিল তাদের।

এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত জীবাশ্ম প্রমাণ করে যে, শিম্পাঞ্জি জাতীয় আমাদের পূর্বপুরুষেরা অন্তত ৬০ লাখ বছর আগে থেকে দুই পায়ে ঋজু হাঁটা শুরু করেছে। চার পায়ে হামাগুড়ি দিয়ে হাঁটার ভঙ্গিও ছিল তাদের।

কিন্তু বিবর্তনের ধারায় আমরা তা গ্রহণ না করে দুই পায়েই হাঁটছি।

আমাদের নিজের প্রজাতি আধুনিক মানুষ হোমো স্যাপিয়েন্সরা বিবর্তিত হয়েছে হোমো অস্ট্রালোপিথেকাস অ্যাফারেনসিস্ প্রজাতি থেকে (সরাসরি পূর্বপুরুষ হোমো ইরেক্টাস হয়ে)। ৩৬ লাখ ৬০ হাজার বছর আগের এ প্রজাতির পদচিহ্নের জীবাশ্ম পাওয়া গেছে উত্তর তাঞ্জানিয়ার শুকিয়ে যাওয়া নদীগর্ভ লাইটোলিতে থেকে। প্রাগৈতিহাসিক মানবের এ ৭০টি পদচিহ্ন পাওয়া গেছে প্রায় ২৭ মিটার দীর্ঘ পদাঙ্কজুড়ে। লাইটোলি পদচিহ্নের মালিক হোমিনিডিন অস্ট্রালোপিথেকাসদের জীবাশ্মও একই পলল স্তরে পাওয়া গেছে।  

জীবাশ্ম পর্যালোচনা করে বিজ্ঞানীরা বলেন, দু’জন অস্ট্রালোপিথেকাস মানুষ ভেজা আগ্নেয় ছাইয়ের মধ্য দিয়ে পদচারণা শুরু করেছিল, যখন নিকটবর্তী আগ্নেয়গিরি আবার জাগতে থাকে। ছাই পরবর্তী স্তরে আচ্ছাদিত হয়ে তাদের পদচিহ্ন সংরক্ষিত থাকে লাখ লাখ বছর ধরে।  

জীবাশ্মবিদ মেরি লিকির নেতৃত্বে গবেষক দলের সদস্য পল অ্যাবেল ১৯৭৮ সালে পদচিহ্নগুলো খুঁজে পেয়ে জানান, এরাই প্রথম দ্বিপদ মানুষ, যাদের দুই পায়ে হাঁটার অভ্যাস তৈরি হয়। তাদের পায়ে সঙ্গতিপূর্ণ বুড়ো আংগুল ছিল। এর মানে হল যে, এই প্রথম মানুষের পা প্রাগৈতিহাসিক বনমানুষ বা ওরাংওটাংদের মতোই বুড়ো আংগুলের সাহায্যে উঠে দাঁড়াতে ও উচ্চস্থানে আরোহন করতে শিখলো।  

তারাই আমাদের নিকটতম দূরবর্তী পূর্বপুরুষ, যারা চার পা থেকে দ্বিপদ মানুষে বিবর্তিত হয়েছিল। এ মানুষদের চলাফেরার ভঙ্গি ছিল ‘গোড়ালি ধর্মঘট’ (পায়ের গোড়ালি প্রথম এগোনো) "অঙ্গুলী বন্ধ" দ্বারা অনুসৃত (পায়ের আঙ্গুল দীর্ঘ শেষে বন্ধ ধাক্কা) সময়টাতে পথ আধুনিক মানুষের পদব্রজে ভ্রমণ.

পায়ের ছাপগুলোর ঘনিষ্ঠ অবস্থান হাঁটতে শুরুর প্রচেষ্টার প্রমাণ দেয় এবং এজন্যই তাদের পা ছোট ছিল। পরে আদি মানুষগুলোর পা আরও বড় ও প্রসারিত হয়, তারা অধিকতর সক্রিয় ও দ্রুত চলাফেরা করে এবং প্রত্যেক দিন আরো এলাকা প্রদক্ষিণ শেষ করতে থাকে।


পায়ের আকৃতি, দৈর্ঘ্য এবং পায়ের আঙ্গুলের আকৃতি বোঝায় যে, লাইটোলি পদচিহ্ন একটি প্রাগৈতিহাসিক মানব প্রজাতির ছিল। এবং সে সময়ে এ অঞ্চলে একমাত্র প্রাগৈতিহাসিক মানব ছিল আফ্রিকান অ্যাফারেনসিস্। বস্তুত, অ্যাফারেনসিস্‌দের জীবাশ্ম তাদের পদচিহ্নের কাছাকাছি ও একই পলল স্তরে খুঁজে পাওয়া যায়। বিজ্ঞানীরা জানান,  আফ্রিকান অ্যাফারেনসিসের বাঁদিকে পদচিহ্ন ছিল।
 
এসবই প্রমাণ করে, এগুলোই ছিল মানুষের প্রথম পদচিহ্ন।  

বাংলাদেশ সময়: ০০১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৬
এএসআর 
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।