আলো বন্ধ করতে আমরা সুইচ ব্যবহার করতে অথবা শর্ট সার্কিটে পাওয়ার সাপ্লাই বন্ধ হয়ে যাওয়া পর্যন্ত পানির মধ্যে বাল্ব থেকে আলো উৎসারিত করতে পারি। শেষের কৌশলটি অক্টোপাসরা অন্তত দু’টি অ্যাকোয়ারিয়ামের মধ্যে করে দেখিয়েছে।
বিজ্ঞানী পিটার গডফ্রে স্মিথ ব্যাখ্যা করেছেন যে, ‘অক্টোপাসের মস্তিষ্কে বেশ কিছু গোপন নিউরোন ঘনীভূত আছে, তবে এর বেশিরভাগ নিউরোনই হাতগুলোর মধ্যে। এর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ স্পর্শ, গন্ধ ও স্বাধীনভাবে স্বাদ নিতে পারে। এমনকি একটি হাত অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সরানো হলেও সেটির কাছে পৌঁছাতে ও আঁকড়ে ধরে রাখতে পারে’।
অক্টোপাসেরা যে পৃথক মানুষকে চিনতে পারে এর প্রমাণ গডফ্রে স্মিথ পান নিউজিল্যান্ডের একটি ল্যাবে। বিশেষ চিকিৎসার কাজ করেন, এমন একজন কর্মীকে একটি অক্টোপাস আলাদা করতে পেরেছিল। ওই কর্মী যখনই তার পানির ট্যাংকের পেছন দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখনই অক্টোপাসটি পানিকে আন্দোলিত করছিল।
এতেই প্রমাণিত হয় যে, অক্টোপাসরা পৃথক মানুষদের, এমনকি এক ধরনের ইউনিফর্ম পরা থাকলেও চিনতে পারে।
গডফ্রে স্মিথ বলেন, ‘এ ক্ষমতা সামাজিক বা একগামী পশুদের মধ্যে থাকে, যা তাকে জ্ঞানী করে তোলে। কিন্তু অক্টোপাসরা একগামী নয়, তাদের এলোমেলো যৌনজীবন আছে এবং খুব সামাজিক হয় বলে মনে হচ্ছে না’।
অন্য কয়েকটি উপায়েও অক্টোপাসরা অনেকটা মানুষের মতো বলে নিজেদের প্রমাণ করতে পেরেছে। তার গবেষণা দেখাচ্ছে যে, কিছু বস্তুর সঙ্গে খেলার পদ্ধতি নির্ধারণ করে এমনকি বস্তুগুলো তারা খাদ্য নয়, তা বোঝার পরেও। তারা স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিশক্তির প্রমাণ দিয়েছে।
গডফ্রে স্মিথ আরও বলেন, ‘বন্দি অবস্থায় অক্টোপাসরা নিজেদের ঘুমন্তের মতো দেখিয়ে পালাতে চেষ্টা করে। এক্ষেত্রেও চালাক বলা যেতে পারে অক্টোপাসকে’।
তিনি লক্ষ করেছেন, এক মুহূর্ত কেউ তাদের কাছ থেকে সরে গিয়ে আবার ফিরে এলে তারা নির্ভুলভাবে তাকে চিনতে সক্ষম। যদি এতে ব্যর্থ হয়, তাদের অন্য ধারণাও থাকে। ঠিক লাইট বাল্বের আলো ছড়ানোর মতো।
বাংলাদেশ সময়: ০৬৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৭
এএসআর