ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অফবিট

প্রিয়জনের দরদী স্পর্শ কমিয়ে দেয় ব্যথা!

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩২ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০১৭
প্রিয়জনের দরদী স্পর্শ কমিয়ে দেয় ব্যথা! প্রিয়জনের দরদী স্পর্শ কমিয়ে দেয় ব্যথা!

ঢাকা: প্রিয় মানুষ হাত ধরলে কমে যাবে ব্যথা। যুক্তরাষ্ট্রে পরিচালিত এক গবেষণায় উঠে এসেছে এ-তথ্য। এ গবেষণা করেন ইউনিভার্সিটি অফ কলোরাডো বোউলডার-এর ব্যথা নিরাময় বিশেষজ্ঞ ডা.পাবেল গোল্ডস্টাইন। চার বছর আগে তার স্ত্রীর কন্যা সন্তান জন্ম দেবার সময়ে একটি অভিজ্ঞতা তাকে এ গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করে।

তিনি সে অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, আমার স্ত্রীর তখন ব্যথা চলছিল। আমি ভাবছিলাম কিভাবে ঐ মুর্হূতে তাকে সহযোগিতা করতে পারি।

যখন ওর হাত ধরলাম তখন মনে হল যেন তাকে কিছুটা সহায়তা করতে পারলাম।

ডা. গোল্ডস্টাইন বলেন, আমি গবেষণাগারে বিষয়টি নিয়ে পরীক্ষা করতে চাইলাম। কারো স্পর্শ কি আসলেই একজনের ব্যথা কমিয়ে দিতে পারে? যদি তাই হয়, তাহলে তা কিভাবে?

এ বিষয়ের ওপর গবেষণাকারী দলটি জানিয়েছে, যখন কোনো সহানুভূতিশীল সঙ্গী ব্যথা চলাকালীন অবস্থায় তার স্ত্রীর হাত ধরেন তখন দুজনেরই হৃদযন্ত্র ও শ্বাসক্রিয়া বেড়ে যায়। স্ত্রীর ব্যথা তখন কমে সহনীয় হয়ে আসে।

ডা. গোল্ডস্টাইন বলেন, সঙ্গী যত বেশি সহানুভূতিশীল মনের হবে ঠিক তত পরিমাণে ব্যথাও কমে আসবে। আর তারা যখন একে অপরকে স্পর্শ করবে তাদের ভালোবাসার অনুভূতিও তীব্র হবে।

২২ দম্পতির পরস্পরের অনুভূতি বিষয়ে গবেষণা চালিয়েছে গবেষকদল, যেখানে সঙ্গীরা প্রত্যেকে হয়ে ওঠে একে অপরের আয়না। এক্ষেত্রে যে ঘটনাটি লক্ষ্য করা গেছে তা হল, যখন মানুষ হাঁটে তখন তার সঙ্গীর মতো করে পা ফেলতে চায়। অথবা বন্ধুর সঙ্গে কথোপকথনের সময়টার মতো করে চলে।

ব্যথা বা স্পর্শের প্রেক্ষাপটে একে সঙ্গে অপরের অনুভূতি সংক্রান্ত বিষয়ে ডা. গোল্ডস্টাইনই প্রথম এ ধরনের গবেষণা করলেন। যেসব স্বাস্থ্যসেবাদানকারী ব্যথা-মুক্তি নিয়ে কাজ করেন, তাদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করা যেতে পারে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

২৩ থেকে ৩২ বছর বয়সী ২২ জোড়া নারী-পুরুষের ওপর এ গবেষণা চালানো হয়। গর্ভপাতের কক্ষেও একাধিক পরীক্ষামূলক অভিনয়ে দম্পতিরা অংশগ্রহণ করে। তারা একে অপরকে স্পর্শ না করে পাশাপাশি বসেছে, হাত ধরে একসঙ্গেও বসেছে আবার আলাদা কক্ষে আলাদাভাবে বসেছে। সেখানে মহিলারা দুই মিনিট ব্যথার মুহূর্তে ছিল। গবেষণায় দেখা গেছে, যখনই পুরুষসঙ্গী স্ত্রীর হাত ধরছে ঠিক তখনি তাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি বেড়েছে; ব্যথাও ধীরে ধীরে কমে এসেছে।

ডা. গোল্ডস্টাইন বলেন, একে অপরের পাশে থাকার সময়টিতে ব্যথার তীব্রতা কমে। স্পর্শ ব্যথাকে দূরে সরিয়ে দেয়।

তার আগের গবেষণায় দেখা গেছে, পুরুষসঙ্গী তার স্ত্রীর প্রতি যতো বেশি সহানুভূতিশীল হবে তত বেশি ব্যথা লাঘব হবে। শারীরিক উদ্দীপনা যত বেশি একসাথে হবে ব্যথাও তত বেশি কমবে।

তিনি বলেন, এটা প্রমাণ করে যে স্পর্শ সহানুভূতির সহায়ক হিসেবে ভূমিকা রাখে। আর সেটাই ব্যথা কমিয়ে দেয়।

অবশ্য সঙ্গীর স্পর্শ কিভাবে ব্যথা কমিয়ে দেয় তা নিয়ে আরো গবেষণা করতে হবে বলে জানিয়েছে গবেষকদল।

বাংলাদেশ সময়: ০২২২ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০১৭
জিওয়াই/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।