আর সব পূজার মতো চার দিন ব্যাপী এ উৎসবে কোনো ঠাকুর বা ব্রাহ্মণের প্রয়োজন হবে না। ভক্তরা নিজেরাই জানাবেন নিজেদের প্রার্থনা।
ঐতিহাসিক কোশী নদী ছাড়াও গঙ্গাসাগর, ধনু সাগর, বিহারকুণ্ড, মহারাজসাগর আর অগ্নিকুণ্ডের মতো বৃহৎ সরোবরগুলোতে তাই বুধবার রাত থেকেই সাজ সাজ রব।
গত মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) কার্তিকের শুক্লা চতুর্থীতে শুরু এই ছট উৎসব শেষ হবে শুক্রবার সপ্তমীতে।
এ উৎসবে জীবনী ও শক্তির উৎস হিসেবে বিবেচিত সূর্য দেবতার কাছে কল্যাণ, সমৃদ্ধি ও উন্নতির প্রার্থনা জানাবেন ভক্তরা। পুণ্যস্নান করবেন নদী বা পুকুরে। নেপাল জুড়ে বছরের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই উৎসবের সবচেয়ে জাঁকালো আয়োজন অবশ্য দক্ষিণের তরাই অঞ্চলে।
উৎসবের প্রথম দিন স্নানের পর শুদ্ধ ঘিয়ে খিচুড়ি আর কুমড়ো রান্না করেছেন ভক্তরা। দ্বিতীয় দিন উপবাস রেখে খেয়েছেন ক্ষীর আর চাপাটি।
তৃতীয় দিন ছট ব্রতীরা উপবাসে থেকে নদীতে দাঁড়িয়ে সূর্যদেবতার উদ্দেশে ফল এবং অন্যান্য অর্ঘ্য উৎসর্গ করার প্রহর গুণছেন। সূর্যাস্তের সময় তারা প্রণাম করবেন অস্তগামী সূর্যকে। চতুর্থ ও শেষ দিন একইভাবে অর্ঘ্য উৎসর্গ করার পরেই উপবাস ভাঙ্গবেন ব্রতীরা।
ছট শব্দটা প্রাকৃত। এসেছে সংস্কৃতের ষষ্ঠ শব্দ থেকে। চার দিন ব্যাপী এ পূজা হলেও সূর্যদেবের মূল পূজা হয় দীপাবলীর ঠিক ৬ দিন পরে কার্তিক মাসের শুক্লা ষষ্ঠীতে। তাই এর নাম ছট পূজা। নেপাল ছাড়াও ভারতের বিহার ও ঝাড়খণ্ডের গুরুত্বপূর্ণ উৎসব হল ছট।
বলা হয়ে থাকে, বৈদিক যুগের আগে থেকেই ছট পূজার চল ছিল। মহাভারতের পঞ্চ পাণ্ডব ও দ্রৌপদী এ উৎসব পালন করতেন। রামায়ণেও রাম-সীতার ছট পূজার কথা উল্লেখ আছে।
ভক্তদের বিশ্বাস, ছটপূজায় সব মনোকামনা পূর্ণ করেন সূর্যদেব। সংসারের মঙ্গল কামনায় গৃহিণীরাই এই পূজা করে থাকেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৭
জেডএম/