প্যারিসের সমাধিক্ষেত্রগুলোর বেশিরভাগই গণকবর। এর মধ্যে ১৮ হাজারের বেশি মৃতদেহের একটি গণকবর ছিল সংকীর্ণ জায়গায়।
ভূ-গর্ভস্থ কবরের আধিক্য এসব শহরকে এমনকি জীবিতদের বসবাসের স্থান সংকটেও ফেলে দিচ্ছে। ফলে তারা সুউচ্চ ঊর্ধ্বমুখী কবরস্থান গড়ে মৃতদের সমাধি দেওয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে, যা অনেক বেশি সভ্য।
সবচেয়ে বেশি উচ্চতার কবরস্থান রয়েছে ব্রাজিলের সান্তোসের নেকোপোল ইকাম্যানিকায়। এটি একটি বিস্ময়কর ৩২তলা ভবন, যেখানে ১৪ হাজার মানুষের শেষ ঠিকানা একসঙ্গে গড়া হয়েছে। ১৯৮৩ সালে নির্মিত হওয়ার পর থেকেই সমাধির চাহিদা বাড়তে থাকায় এটি এখন ১০৮ ফুট (৩২ মিটার) উচ্চতায় সম্প্রসারিত হচ্ছে।
জাপানে বৌদ্ধদের সমাহিত করতে গড়া উল্লম্ব সমাধিক্ষেত্রের প্রতিটির সামনে বুদ্ধমূর্তি রাখা হয়েছে।
হংকংয়ের বহুতল ভবনের কলম্বারিয়াম সমাধিক্ষেত্রে অবশ্য স্থান সংকটে বেশি সংখ্যক মৃতকে রাখা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। কবরের একটি ঘনক্ষেত্র বাড়াতে যথেষ্ট স্থান না থাকার পাশাপাশি ফ্ল্যাট তৈরির খরচও বেড়ে যাচ্ছে। ফলে অনেক সময়ই লটারি পদ্ধতির মাধ্যমে জায়গা বরাদ্দ দিতে হচ্ছে।
জায়গা না থাকায় ইস্রায়েলের তেল আবিব নতুন বহির্মুখী কবরগুলো চিরতরে কেনার ওপরই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সেখানকার যেরকন সমাধিক্ষেত্রটিকে বর্তমানে ২ লাখ ৫০ হাজার কবরের জন্য স্থানসহ একটি টাওয়ারের উচ্চতা বাড়ানো হচ্ছে।
সংকট নিরসনে উল্লম্ব কবরস্থানের ভবনগুলোতে মৃতদের বিশ্রামের সময়কাল দীর্ঘ হবে না বলে জানাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ।
২০১১ সালে সহকর্মী ফিলিল রোমেরিকের সঙ্গে প্যারিসের একটি উল্লম্ব কবরস্থানের নকশা তৈরি করেছেন ভালমোরগ্যান। ২৫ মিটার (২৪ ফুট) লম্বা ও ২৫ মিটার প্রশস্ত জায়গাকে স্তরে স্তরে সাজিয়ে প্রায় ১ হাজার ৪৮০ জনের মরদেহ রাখা হবে, যেখানে ভূ-গর্ভস্থ কবরস্থানের সমপরিমাণ জায়গায় ২০০ জনকে কবর দেওয়া সম্ভব। ভবনটির বাইরে প্রত্যেকটি কবরের বাসিন্দাকে শনাক্তকারী কাঠের লাঠি রয়েছে, এটি আশেপাশে তাদের উপস্থিতি দেখানোর একটি উপায়।
সুউচ্চ ভবনের এ সমাধিক্ষেত্রকে ২১ শতকের সংকট নিরসনে অস্বাভাবিক সমাধান বলে মনে করছেন ভালমোরগ্যান।
বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০১৭
এএসআর