ব্ল্যাক মার্কেটে বিভিন্ন হাত ঘুরে কংকালটি শেষ পর্যন্ত পৌঁছায় একজন স্প্যানিশ সংগ্রাহকের কাছে। তিনি দাবি করেন এটি একটি এলিয়েন বা ভিনগ্রহবাসীর কংকাল।
এতবছর পর গবেষকরা কংকালটির ডিএনএ বিশ্লেষণ করে জানতে পারলেন এর আসল রহস্য।
জানা যায়, কংকালটি একটি বাচ্চা মেয়ের, যে কিনা বামন ব্যধিতে ভুগছিল। প্রায় ৪০ বছর আগে জন্মের সময়ই মৃত্যু হয় আটার। আর মৃত্যুর সময় পুরোপুরি মানবশিশুতে পরিণত হয়ে উঠতে পারেনি আটা, তার মৃত্যু হয় গর্ভপাতের ফলে। এসব কারণেই আটাকে দেখে ভীনগ্রহবাসী বলে দাবি করে আসছিলেন অনেকে।
গবেষকরা জানান, আটার বেশ কিছু জিনে মিউটেশন পাওয়া গেছে। যেগুলো মানুষের হাড়ের গঠন নিয়ন্ত্রণ করে। আর এসব মিউটেশনের ফলেই কিছু কিছু মানুষ খর্বাকৃতির হয়ে জন্মায়।
ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষক সঞ্চিতা ভট্টাচার্য বলেন, আটার ডিএনএতে ৬৪ ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত জিন পাওয়া গেছে। স্বাভাবিক মানুষের দেহে ১২ জোড়া পাঁজর থাকে। কিন্তু আটার দেহে ১০ জোড়া পাঁজর। এরকমটা হওয়ার জন্য এসব ক্ষতিগ্রস্ত জিন দায়ী।
কংকালটির আকৃতিগত বিকৃতি ছাড়াও এতে ‘কঙ্গিনিটাল ডায়াফ্র্যাগমেটিক হেরিনা’ নামে একটি বিশেষ জেনেটিক অসামঞ্জস্যতা রয়েছিল। এর ফলে মানব ভ্রুণ ঠিকমতো সংগঠিত হতে পারে না। এ কারণে প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে বহু শিশু গর্ভপাতের ফলে মারা যায়।
গবেষক দলের প্রধান গ্যারি নোলান বলেন, আটার ডিএনএর ওপর গবেষণা ভবিষ্যতের চিকিৎসা বিজ্ঞানে কাজে আসবে। এর আগে কেউ এ ধরনের শিশুর ডিএনএ এতো গভীরভাবে বিশ্লেষণ করে দেখেনি। গর্ভাবস্থায়ই শিশুর এ ধরনের শারীরিক বিকৃতি চিহ্নিত করা এবং এ থেকে সেরে ওঠার পদ্ধতি আবিষ্কার করা বর্তমান চিকিৎসা বিজ্ঞানের বড় চ্যালেঞ্জ।
তিনি জানান, আটার পূর্বপুরুষ চিলির স্থানীয় আদি অধিবাসী। কমপক্ষে ৪০ বছর আগে গর্ভপাতের ফলে সে পৃথিবীতে আসে। পরে তাকে কৃত্রিম উপায়ে সংরক্ষণ করা হয় এবং অর্থের লোভে ভিনগ্রহবাসীর কংকাল বলে ব্ল্যাক মার্কেটে বিক্রি করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০৩০২ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০১৮
এনএইচটি/এএ