ক্যাটাগির ৫ হারিকেনটি আঘাত হানার পর বের হয়ে এসেছে দ্বীপরাষ্ট্রটির কঙ্কালসার জীর্ণশীর্ণ শরীর। একইসঙ্গে সামনে আসতে শুরু করেছে ভুক্তভোগীদের করুণ অর্তনাদও।
আদ্রিয়ান বলেন, বাইরে বাতাসের তীব্র আর্তনাদ। বন্যার পানির উচ্চতা বাড়ছে। সঙ্গে রয়েছে তার শিশু সন্তান। যেভাবে হোক পাঁচ বছর বয়সী আমার সন্তান আদ্রিয়ান জুনিয়রকে বাঁচাতে হবে। এমন সময় বন্যার পানিতে দেখলাম হিংস্র হাঙ্গর। নিশ্চয় তাকে পানি ছুড়ে ফেলা মানে হাঙ্গরের খাদ্যের যোগান দেওয়া। তা না করে তাকে বাড়ি ছাদে ছুড়ে দিলাম তাকে। কিন্তু ভাগ্য আমার পক্ষে ছিল না। তীব্র বাতাস তাকে উড়িয়ে নিলো, খোঁজও পেলাম না। উড়িয়ে নেওয়ার আগে সে বাবা, বাবা বলে চিৎকার করছিল। যা আমাকে পোড়াচ্ছে।
‘আমি এখনো স্মরণ করতে পারছি সে বাবা বলে চিৎকার করার পাশাপাশি আমার কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছিল। ’
তিনি আরও বলেন, আমি মনে করেছিলাম আমার সন্তানকে হাঙ্গর থেকে হয়তো নিরাপদ করতে পেরেছি। কিন্তু হাঙ্গরের হাত থেকে বাঁচাতে পারলেও তীব্র বাতাস তাকে উড়িয়ে নিয়েছে। মুহূর্তের মধ্যেই সে হাওয়া হয়ে গেলো চোখের সামনে থেকে।
‘আমি অনেক চেষ্টা করেও তাকে খুঁজে পেলাম না। এদিকে আমার বউকে লোকজন উদ্ধার করে নিয়ে যায়। তারা আমাকেও দ্রুত বাড়ি ছাড়ার জন্য বলছিল। কিন্তু আমার সন্তানকে ছেড়ে কোনোভাবেই যেতে ইচ্ছে হচ্ছিল না। ’
ক্যাটাগরি ৫ মাত্রার হারিকেন ডোরিয়ান ২২৫ মাইল ঘণ্টায় বাহামার অ্যাবাকো দ্বীপে আঘাত হানে ২ সেপ্টেম্বর। এরপর দেশটির প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন দ্বীপের ৬০ শতাংশ ঘরবাড়ি চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেছে।
বাহামার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে ১ হাজারেরও বেশি নিখোঁজের কথা জানিয়েছেন।
অ্যাবাকো দ্বীপ ঘুরে এসে বাহামার প্রধানমন্ত্রী হুবার্ট মিন্নিস সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, দ্বীপের প্রায় ৬০ শতাংশ ঘরবাড়ি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। একটি ভয়াবহ হারিকেন দ্বীপে আঘাত হেনেছে যা থেকে আত্মরক্ষার সুযোগ ছিল না বললেই চলে।
২০১০ সালে পরিচালিত একটি জরিপ অনুযায়ী, দ্বীপটিতে ১৮ হাজারের মতো মানুষের বসবাস। তখন ঘরবাড়ির সংখ্যা ছিল ৫ হাজার ২০০।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০১৯
এইচএডি/