সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হলো- ২৩ বছরের বিবাহিত জীবনে মাত্র ১৫ বার গর্ভধারণ করে এ ৪৪ সন্তানের জননী হন মরিয়ম। অংকটা মেলাতে একটু জটিল পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মিরর জানায়, মরিয়ম যাতে আর বাচ্চা নিতে না পারেন, সে জন্য উগান্ডার চিকিৎসকরা রীতিমত তাকে নিষিদ্ধ করেছেন।
কী করে এ পরিস্থিতি তৈরি হলো, রয়টার্স, আল জাজিরাসহ আন্তর্জাতিক একাধিক সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সে কথা জানিয়েছেন মরিয়ম।
মাত্র ১২ বছর বয়সে বিয়ে দেওয়া হয় তাকে। আর বছর ঘুরতে না ঘুরতেই সন্তানের মা বনে যান তিনি। পরপর দুইবারই জমজ বাচ্চা হওয়ায় চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন তিনি। তখন জানা যায়, তার জরায়ু অস্বাভাবিক আকারে বড়। অন্যদিকে জন্মনিয়ন্ত্রণ, যেমন পিল খাওয়া তার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়াবে।
ফলে, ৩ বছর আগে স্বামী ছেড়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত মরিয়মের ঘরে একের পর এক সন্তান আসতেই থাকে।
এদিকে স্বামী ছেড়ে যাওয়ায় এখন এতোগুলো সন্তান নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন এ মা। একা হাতে তিনি জীবিত ৩৮ সন্তানকে বড় করে তোলার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। মোট ৪৪ সন্তানের জন্ম দিলেও তার ৬টি সন্তান বিভিন্ন সময়ে মারা যায়।
২৩ বছরের বিবাহিত জীবনেও মরিয়ম অনেক দুর্ভোগে কাটিয়েছেন বলে সাক্ষাৎকারে জানান। স্বামী তাকে নানাভাবে অপদস্থ করতেন। এখন এতোগুলো সন্তানের ভরণপোষণের জন্য সামনে যে কাজ পান, তাই করেন তিনি। এ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে হেয়ার ড্রেসিং থেকে শুরু করে, অনুষ্ঠানের সাজসজ্জা, ফেলে দেওয়া লোহালক্কড়ের ব্যবসা, স্থানীয় জিন বানানো ও হার্বাল ওষুধ বিক্রির কাজ করতে হয়েছে তাকে।
তবে, যতোই অভাব থাকুক সন্তানদের পড়ালেখার ব্যাপারে খুবই কঠোর এ মা। এতো বড় পরিবার কেন নিলেন, জানতে চাইলে নিজের বিয়োগান্তক শৈশবের স্মৃতি আওড়ান মরিয়ম। জানান, মাত্র ৩ বছর বয়সেই মা তাদের ছেড়ে চলে যান। ছয় ভাইবোনের মধ্যে তিনিই ছিলেন সবার ছোট। মা যাওয়ার পর তার বাবা আবারও বিয়ে করেন। আর সৎ মা সংসারে এসে বাকি ৫ ভাইবোনকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলেন। সে সময় এক আত্মীয়ের বাড়িতে থাকায় কোনোমতে বেঁচে যান তিনি।
ওই বিয়োগান্তক শৈশবের ফলেই, যেনবা নিজের পরিবার ফিরে পেতে সবসময় ৬টি সন্তান কামনা করতেন মরিয়ম। যদিও তার অস্বাভাবিক শারীরিক বাস্তবতা তাকে এরচেয়ে অনেক অনেক বেশি সন্তানের পরিবার। নিজে কষ্টের শৈশব অতিবাহিত করলেও, এ মা চান তার সন্তানরা যেন আনন্দে বেড়ে উঠতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ০৫১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৯
এইচজে