৬৬ বছর বয়সী চিন্তাহরণের গল্পটা বেশ উদ্ভট। ১৪ বছর বয়সে প্রথম বিয়ে করেন তিনি।
২১ বছর বয়সে পশ্চিমবঙ্গের দিনাজপুরে একটি ইটের ভাটায় কাজ শুরু করেন চিন্তাহরণ। সেসময় সেখানকার দিনমজুরদের খাবারের শস্য কেনার দায়িত্ব দেওয়া হয় তাকে। প্রতিদিন একই দোকান থেকে খাবার কিনতে কিনতে দোকানদারের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়ে যায় তার।
চার বছর পর, ওই বাঙালি দোকানদারের মেয়েকে বিয়ে করেন চিন্তাহরণ। কিন্তু, তার পরিবার কিছুতেই এই বিয়ে মেনে নেয়নি। তাই, দ্বিতীয় স্ত্রীকে বাবার বাড়িতে রেখে নিজের বাড়ি ফিরে যান তিনি।
এমন ব্যবহার মেনে নিতে না পেরে আত্মহত্যা করেন চিন্তাহরণের এই স্ত্রী। এক বছর পর দিনাজপুর গেলে এ খবর জানতে পারেন তিনি।
এদিকে, বাড়ি থেকে আবার বিয়ের জন্য চাপ দেওয়া হয় তাকে। ফলে তৃতীয়বারের মতো বিয়ে করেন জালালপুরের হাউজখাস গ্রামের এ বাসিন্দা। কিন্তু, এর পরপরই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তার আত্মীয়রা একের পর এক মারা যেতে শুরু করেন।
চিন্তাহরণের বাবা রাম জিয়াভান, বড় ভাই চোতাউ, তার স্ত্রী ইন্দ্রাবতী, তাদের দুই ছেলে ও ছোট ভাই বাদাউ মারা যান। ভাইয়ের তিন মেয়ে ও চার ছেলেও সেই মৃত্যুযাত্রায় যোগ দেন।
চিন্তাহরণের মনে হতে থাকে, তার দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করায় এ করুণ পরিণতি হয়েছে তার পরিবারের। রোজ রাতে স্বপ্নে এসে তার ওই স্ত্রী আহাজারি করে কাঁদতো। একদিন চিন্তাহরণ তার কাছে ক্ষমা চেয়ে জানতে চাইলেন, কী করলে তিনি ও তার পরিবার এই অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবেন।
উত্তরে তার বউ জানায়, নববধূর সাজে সেজে চিরদিন তাকে মনে রাখলেই মুক্তি মিলবে চিন্তাহরণের। সেদিনের পর থেকেই নতুন বউয়ের মতো সেজে থাকেন তিনি। আশ্চর্যজনক হলেও এরপর থেকে তার পরিবারের লোকদের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুও বন্ধ হয়ে যায়। তিনি নিজেও ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন।
কয়েক বছর আগে তৃতীয় স্ত্রী মারা গেলেও চিন্তাহরণের দুই ছেলে- রমেশ ও দিনেশ সুস্থ রয়েছেন।
চিন্তাহরণ জানান, প্রথমদিকে তার সাজ দেখে লোকে হাসতো। কিন্তু, ঘটনা জানার পর এখন সবাই তার সমব্যথী।
বাংলাদেশ সময়: ০৯০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০১৯
এফএম/এএ