ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অফবিট

অন্য বছরের চেয়ে ২ সেকেন্ড বড় ১৯৭২ সাল!

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৮ ঘণ্টা, আগস্ট ৫, ২০২১
অন্য বছরের চেয়ে ২ সেকেন্ড বড় ১৯৭২ সাল!

নিজের অক্ষের চারপাশে ঘুরতে পৃথিবীর সময় লাগে মোটামুটি ২৪ ঘণ্টা এবং সূর্যের চারপাশে ঘুরতে মোটামুটি ৩৬৫ দিন। পৃথিবীর এই ঘোরার ওপর নির্ভর করেই দিনরাত, জোয়ার-ভাটা এবং ঋতু পরিবর্তনের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক বিষয়গুলো ঘটে থাকে।

কখনও পৃথিবীর গতি সামান্য বেড়ে যায় আবার কখনও সামান্য কমেও যায়। জোয়ার-ভাটা, অগ্ন্যুৎপাত এই সমস্ত প্রাকৃতিক ঘটনাবলীই এর জন্য দায়ী।
ছোট থেকেই ভূগোল বইয়ে এগুলোই পড়ে আসছি আমরা। কিন্তু পৃথিবীর গতি সব সময়ই একই থাকে না। পৃথিবীর এই গতি নির্ভর করে অনেকগুলো প্রাকৃতিক বিষয়ের ওপর।

পৃথিবী নিজের অক্ষের চারপাশে একপাক দিতে যে ২৪ ঘণ্টা সময় নিয়ে থাকে তার ওপর ভিত্তি করেই আন্তর্জাতিক সময় নির্ধারণ করা হয়। ২৪ ঘণ্টায় ৮৬ হাজার চারশ’ সেকেন্ড রয়েছে।

দেখা গেছে, পৃথিবীর গতি ধীরে বা দ্রুত হয়ে গিয়ে অনেক সময়ই দু’সেকেন্ডের পার্থক্য হয়ে যায়।

এই দু’সেকেন্ডের পার্থক্যের যদি সঠিক বিন্যাস না করা যায় তাহলে আমাদের স্বাস্থ্যের হয়তো কিছু যায় আসে না কিন্তু দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় অনেক প্রভাব পড়বে। এমন পরিস্থিতিও হয়তো আসতে পারে যখন রাত ১২টায় হয়তো আপনার ঘড়ি সময় দেখাবে দুপুর তিনটা।

পৃথিবীর গতির সঙ্গে আমাদের ব্যবহার করা ঘড়ির সময়ের সামঞ্জস্য আনাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই কিছু সময় অন্তর বিশ্বের সমস্ত ঘড়ির সময়ের বদল করাটাও জরুরি।

বিশ্বজুড়ে ঘড়ির সময় নির্ধারণের মাপকাঠি হিসেবে দু’ধরনের ঘড়ি ব্যবহার করা হয়। একটি হল অ্যাটমিক ঘড়ি এবং অন্যটি হল কোঅর্ডিনেটেট ইউনিভার্সাল টাইম বা ইউটিসি। ইউটিসি-কে গ্রিনিচ গড় সময়ের উত্তরসূরি বলা হয়।

এবার ওই বাড়তি দু’সেকেন্ডকে পৃথিবীর আহ্নিক গতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে বিজ্ঞানীরা জেনে-বুঝেই নির্দিষ্ট সময় অন্তর বছরের কোনো একটি দিনের এক মিনিটে ৬০ সেকেন্ডের সঙ্গে আরও এক সেকেন্ড সময় যোগ করে দিয়েছেন। ফলে সেক্ষেত্রে ওই নির্দিষ্ট মিনিটে ৬০-এর বদলে ৬১টি সেকেন্ড থাকবে।

বছরের এই বাড়তি এক সেকেন্ডকে বলা হয় লিপ সেকেন্ড। কোন বছর লিপ সেকেন্ড ঘড়িতে যোগ করা হবে তা নির্ধারণ করে আন্তর্জাতিক আর্থ রোটেশন অ্যান্ড রেফারেন্স সিস্টেমস সার্ভিস।

১৯৭২ সাল থেকে লিপ সেকেন্ড যোগ করা শুরু হয়। ৩০ জুন এবং ৩১ ডিসেম্বর— এই দুই দিনেই মূলত লিপ সেপেন্ড যোগ করা হয়।

সহজ করে বোঝাতে গেলে এই সময় এক সেকেন্ডের জন্য ঘড়িকে থামিয়ে দেওয়া হয়। যে বছর এই লিপ সেকেন্ড যোগ করা হয় তার অনেক আগে থেকেই ঘোষণা করে দেওয়া হয়।

১৯৭২ সালই একমাত্র বছর যেবার ৩০ জুন এবং ৩১ ডিসেম্বর দু’বার লিপ সেকেন্ড যোগ করা হয়েছিল। ফলে অন্যান্য বছরের তুলনায় দু’সেকেন্ড বেশি ছিল ১৯৭২ সালে।

১৯৭২ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত এখনও মোট ২৭ বার লিপ সেকেন্ড যোগ হয়েছে। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত ৩১ ডিসেম্বরে লিপ সেকেন্ড যোগ করা হয়েছিল।

১৯৮০ সালে কোনও লিপ সেকেন্ড যোগ করা হয়নি। তার পর ১৯৮১ থেকে ১৯৮৩ পর্যন্ত ৩০ জুন যোগ করা হয়। ১৯৮৪ সালে ফের কোনও লিপ সেকেন্ড যোগ করা হয়নি।

এ রকমভাবে ১৯৮৫, ১৯৮৭, ১৯৮৯, ১৯৯০, ১৯৯২, ১৯৯৩, ১৯৯৪, ১৯৯৫, ১৯৯৭, ১৯৯৮-এ একটি করে লিপ সেকেন্ড যোগ করা হয়েছিল। তারপর ২০০৫, ২০০৮, ২০১২, ২০১৫, ২০১৬-এ যোগ করা হয়েছিল।

২০১৬ সালের পর থেকে এখনও পর্যন্ত আর কোনও লিপ সেকেন্ড যোগ করা হয়নি। চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক আর্থ রোটেশন অ্যান্ড রেফারেন্স সিস্টেমস সার্ভিস যদি লিপ সেকেন্ড যোগ করার প্রয়োজন মনে করে তাহলে আগে থেকেই তা ঘোষণা করে জানাবে তারা।


বাংলাদেশ সময়: ১০২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০৫, ২০২১
এসআইএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।