ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

হতাশা ছড়িয়ে পড়েছে মানুষে মানুষে

মনোয়ার রুবেল, অতিথি লেখক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৩
হতাশা ছড়িয়ে পড়েছে মানুষে মানুষে

রায় দিয়েছেন কোর্ট। আর সব দোষ গিয়ে পড়লো আওয়ামী লীগ, তথা সরকারের ওপর।

ফেসবুক, টুইটারে, ব্লগে দেদারসে গালি দেওয়া হচ্ছে আওয়ামী লীগকে। কেউ বলছে, দরকষাকষির রায়। কেউ বলছে, ভয় পাইছে সরকার। কেউ বলছে- কত লোককে হত্যা করলে ফাসিঁ হয়, অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরও কেন ফাঁসি নয়, বাচ্চুর ফাঁসি হলে কাদের মোল্লার কেন নয়.. ইত্যাদি। ফেসবুকে আমার হোমপেজে সবচেয়ে বেশি লিখিত শব্দটি ছিল- “শেম আওয়ামী লীগ, শেম”। এই শেম দেওয়া হচ্ছে আদালত কাদের মোল্লাকে ফাসিঁ না দেওয়াতে।

কসাই খ্যাত কাদের মোল্লার ফাঁসির রায়-ই ছিল প্রত্যাশিত। তাই রায় ঘোষণার পর হতাশা চায়ের আড্ডায়, হতাশা ফেসবুকের দেয়ালে, হতাশা অনলাইন পত্রিকাগুলোর প্রচ্ছদে, হতাশা ছড়িয়ে পড়েছে হৃদয় থেকে হদয়ে। অন্য সবার মতো আমিও হতাশ। এর আগে কোন বিচারের রায়ে পুরো জাতি সামগ্রিকভাবে এতো হতাশ হয়নি কখনো। এই মুহূর্তে পুরো জাতি এক সামগ্রিক হতাশায় ডুবে আছে।

মানুষ বেশি হতাশ হয়ে গেলে তার স্রষ্টাকে গালি দেয়, জন্মদাতাকে গালি দেয়। বেশি হতাশ হলে গালি দেয় নিজেকে। আমরা এখন আছি সরকারকে গালি দেওয়ার স্টেজে। গালি দিতে হলে একটা প্লট দাঁড় করাতে হয়। যে যার মতো একেকটা প্লট দাঁড় করিয়ে গালি দিচ্ছে সরকারকে। সরকার শিবিরকে ঠাণ্ডা রাখতে একটি শীতল রায় দিয়েছে, সরকার জামায়াতের সঙ্গে আপোষরফা করার চেষ্টা করছে, জামায়াত টাকা দিয়ে সরকারকে কিনে নিয়েছে,  আওয়ামী লীগ কখনোই বিচার চায়নি সবই ভাওতাবাজি, রাজনৈতিক স্ট্যান্টবাজি... ইত্যাদি বহুবিধ সমালোচনা চলছে। অবস্থা এমন, আগামীকাল নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ পাবে শূন্য আসন।

আমরা আইন বুঝি না। আবেগ বুঝি। আবেগে চলি, আবেগে বলি। আবেগ বলছে, তাই সরকারকে গালি দিচ্ছে। আবেগের স্রোতে আমরা সাধারণ কথাও ভুলে যাই। মনে রাখতে হবে, রায় দিয়েছেন আদালত। আদালত অবশ্যই দলিল, প্রামাণাদি দেখে এ রায় দিয়েছেন। আদালত সেই রায়টিই দিয়েছেন, যা তাঁরা শতভাগ ন্যায় বলে বিশ্বাস করেছেন তা-ই। এখন সরকারকে গালি দেওয়া মানে আদালতের উপর সরকারের হস্তক্ষেপ আছে, এমন কিছু বিশ্বাস করা। সরকার আদালতকে প্রভাবিত করছে- এমন কিছু অনৈতিক কিছু মনে করা।

রায় পছ্ন্দ না হতে পারে, পক্ষে নাও যেতে পারে। রায়ে হতাশা থাকতে পারে, ক্ষোভ থাকতে পারে। কিন্তু হতাশার বশবর্তী হয়ে আমরা এমন কিছু যদি বলি, যাতে এই আদালত এবং এই বিচার কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ হয়, তাহলে লাভটা কার হলো?

একটু ভেবে দেখা খুব জরুরি।

মনোয়ার রুবেল: ব্লগার ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট,
ইমেইল : monowarrubel@yahoo.com

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৩
আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।