ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

শাহবাগ উত্তীর্ণ হবেই

আশরাফুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৩
শাহবাগ উত্তীর্ণ হবেই

শাহবাগ গণজাগরণ চত্বর থেকে: বাঙালি ও বাংলার হাজার বছরের সংগ্রামের ইতিহাসের নবদিগন্ত ঐতিহাসিক শাহবাগ গণজাগরণ।

এ গণজাগরণ শুরুর দ্বিতীয় দিনে কোটি পাঠকের প্রিয় অনলাইন সংবাদ মাধ্যম বাংলানিউজের একটি সংবাদের শিরোনাম ছিলো থামছেই না শাহবাগের স্লোগান।



দশমদিনে বৃহস্পতিবারেও এ স্লোগান আরো অনেক বেশি গগণবিদারী-না থামার দৃঢ়তায় উচ্চকণ্ঠ।

স্বাধীনতা বিরোধী ঘৃণিত রাজাকার-আলবদর-আলশামসদের ফাঁসির জন্য বাংলার কোটি মানুষের সুদীর্ঘ আকাঙ্খা, শাহবাগ গণজাগরণে রূপলাভের আগ পর্যন্ত এতোটা প্রবল হতে পারেনি শতসন্দেহ-সংশয়ের ঘেরাটোপে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর বিগত বিয়াল্লিশ বছরে স্বাধীনতা বিরোধী ঘৃণিত এ মানুষগুলো অনেক গভীর পর‌্যন্ত ওদের শেকড় গেড়েছে।

একজন প্রতিথযশা অর্থনীতিবিদ স্বাধীনতা বিরোধীদের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট গবেষণা উপাত্ত তুলে ধরে অনেক আগেই জানিয়েছিলেন, এরা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র, সরকারের বিরুদ্ধে সরকার তৈরি করেছে। গড়ে তুলেছে বিশাল মুলধনের আর্থিক প্রতিষ্ঠান।

তবে এর বিপরীতে সত্য-ধ্রুবসত্য হলো দেশপ্রেমের চেতনাই শেষ পর‌্যন্ত উতরে যাবেই-উত্তীর্ণ হবেই।

এটা কেবল বাংলা নামের বদ্বীপটির হাজার বছরের ইতিহাস নয়, তাবত বিশ্বের সকল স্বাধীনতাকামী রাষ্ট্রগুলোর গৌরবোজ্জ্বল সংগ্রামের ইতিহাস।

ইতিহাসের সে পথ ধরে শাহবাগ গণজাগরণের, আমার মতে আরো গভীর ভাবে যদি বলতে চাই বাঙালির স্বাধীনতা আর দেশপ্রেমের চেতনার এ পুনরুত্থান উত্তীর্ণ হবেই।

‘কেউই অপাপবিদ্ধ জিতেন্দ্রিয় নন’ অন্নদাশঙ্কর রায়ের এ উক্তিকেও বিবেচনায় নিয়ে যদি দেশের বর্তমান রাজনৈতিক দলগুলোকে মাপি-তবুও ‘শাহবাগ’ বিরোধী ও অপপ্রচারকারীদের প্রসন্ন হবার আশা নেই।

বর্তমান ক্ষমতাসীন দল শাহবাগ গণজাগরণে মদদ দিচ্ছে, দাবি উঠলেও সামগ্রিকভাবে গত দশদিন এ জাগরণ চত্বরের উদীপ্ত মানুষগুলোর সঙ্গে নিবিড় ভাবে মিশে, তাদের ভাব-ভাষা-আইডিয়া ধারণ করে যতোটা বুঝতে পেরেছি, তাতে দায়িত্ব নিয়ে নিঃসন্দেহে-নিঃসংকোচে বলতে পারি এ জাগরণ অকৃত্রিম-স্বতঃস্ফূর্ত।

অভূতপূর্ব এ জাগরণে সহযোগিতা যদি কেউ দিয়ে থাকেন, তাকে নৈতিক এবং দেশপ্রেমের দায়বোধই বলতে পারি। ‘নাটক মঞ্চস্থ’ করার চেষ্টা নয়।

আমাদের স্মরণ রাখা উচিত একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধকেও অনেকে ‘গণ্ডগোলের বছর’ আখ্যা দেওয়ার ধৃষ্ঠতা দেখিয়েছেন। দেশে-বিদেশে নানা অপপ্রচার তো ছিলোই-কিন্তু শেষ পর‌্যন্ত টিকেনি।

একাত্তরে জান্তা পাকবাহিনীর সহযোগিতা দিতে সৃষ্টি হয়েছিলো রাজকার-আলবদর-আলশামস বাহিনীর। শাব্দিক ভাবে রাজকার মানে সহযোগীতাকারী-যা ইতিবাচক ভাবেই সবার নেওয়ার কথা। কিন্তু ভূমিকা যেখানে ঘৃণ্য-বর্বরতার-মহাকাল তাকে আস্তাকুড়ে ফেলবেই-গালির গালিচায় অভিষিক্ত করবেই।

বাংলাদেশ সময়: ২৩০৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৩
এআই/এমএমকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।