সবারই কিছু না কিছু একান্ত ব্যক্তিগত বিষয় আশয় থাকে। শিল্পী-গায়ক, কবি সাহিত্যিক থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ের তারকা ও নেতা পর্যন্ত—তাদের প্রতি মানুষের উৎসাহ ও কৌতূহল অনেক।
এক.
বাস্কেটবল খেলায় বিশেষ দক্ষতার জন্য বেশ সুনাম আছে প্রেসিডেন্ট ওবামার। হাইস্কুলে পড়ার সময় বাস্কেটবল খেলায় দারুণ পটু ছিলেন তিনি। ইনফ্যাক্ট ওবামাকে ‘ও’বোম্বার’ নাম দিয়ে ওই হাইস্কুলও সুখ্যাতি অর্জন করেছিল। এমনকি ওবামার দাদির নিকনেমটাও যে ‘বার’ ছিল। অবশ্য এই কারণেই বুঝি রিপাবলিকানরা এসব ‘বার টার’ একদম মুখেও নেয় না।
দুই.
তরুণ বয়সে কিছু দিন ইন্দোনেশিয়ায় কাটিয়েছিলেন ওবামা। সেখানে তার মজার কিছু অভিজ্ঞতাও হয়েছিল। তো একবার তাহার স্বাদ হইল গোশ্ত খাইবেন। এক দুর্লভ রুচি আর শখের বশে তিনি খেয়ে ফেললেন কুকুরের গোশ্ত। তাতে কি! ইহা তো তার এক লোভনীয় অভিজ্ঞতা। শুধু কি তাই! সঙ্গে তিনি সাপের গোশ্তও ভক্ষণ করেছেন। সাপের মাংসটাকে আরো সুস্বাদু করে তুলেছিল ফড়িংয়ের রোস্ট। তবে ওই সময়টায় তার টাটা নামে একখানা তুলতুলে বিড়াল পোষার অভিজ্ঞতাও হয়েছিল।
তিন.
তার কিছু প্রিয় জিনিসও আছে। সাহিত্যের মধ্যে ‘মবি ডিক’ আর ‘দি বাইবেল’। ফিল্মের মধ্যে ‘কাসাব্লাঙ্কা’ এবং ‘ওয়ান ফ্লু ওভার দি কুকো’স নেস্ট’ ওবামার খুব শখের মুভি। আর যদি খাবারের কথা বলেন। তবে স্ত্রী মিশেল ওবামার খাবার বলতেই ওবামা বেহুঁশ। তার খাবার এতই স্বাদের যে জিভরসনা সামলানো মুশকিল হয়ে পড়ে। আসলে সাহিত্য বলতে ওবামার কাছে এখন কমিকসই শেষ কথা। স্পাইডার ম্যান আর বারবারিয়ান কমিকস ছাড়া যেন ওবামা কিচ্ছুটি বোঝেন না। ‘মাশ’ আর ‘দি বিয়ার’ নামের টিভি শোতে অতিরিক্ত মজা পান এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
চার.
একসময় প্রায়ই ওবামা ভিজে ওঠতেন। একটা সময় ওবামার এমনই গেছে যে, গাঁজার নেশায় উতলা হয়ে থাকতেন। তবে বেশিদিন না—ওবামা যেমন স্বীকার করে বলেছেন, কৈশোর আর তরুণ বয়সে কলেজের দিনগুলোতে কোকেন আর গাঁজায় বুঁদ হয়ে থাকতেন। গাঁজা একদম সব সময় তো আর চালানো যেত না, তাই সিগারেট ছিল একেবারে সবসময়ের সঙ্গী। গুজব আছে, প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগ মুহূর্তে স্ত্রী মিশেলেরে কাছে পাক্কা ওয়াদা করেছেন এসবের ধারে কাছেও যাবেন না। অবশ্য ইদানিং মিশেলকে কোনোমতে ম্যানেজ করেছেন এই বলে যে, ঠিক সিগারেট বা গাঁজা খাবেন না, জাস্ট একটু আধটু নিকোটিনের গাম চাবাবেন আর কি!
পাঁচ.
একসময় তার সিনেট অফিসের ডেস্ক ছিল রবার্ট কেনেডির অধীনে। তো ওই ডেস্কের কাঠের খোদাই করা একটি হাতল ছিল। ওবামা সে সময় একটি আস্ত ডিম শুদ্ধু ওই হাতলটা ধরে রাখতেন। মনে করা হয় সেটা ছিল তার কেনিয়ার এক খণ্ড জীবনের প্রতীক।
ছয়.
উফ! ওবামা একজন রক স্টারও বটেন। এই রক স্টার ইতিমধ্যে তার অডিও অ্যালবামের জন্য দুইখানা গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডও পেয়ে গেছেন। উল্লেখ্য রক অ্যালবামগুলো হল তার স্বরচিত গ্রন্থ ‘ড্রিমস ফ্রম মাই ফাদার’ এবং ‘দি অডাসিটি অব হোপ’ এর অডিও ভার্সন।
সাত.
আর দশটি পরিবারের মতো সাধারণ পারিবারিক জীবন ছিল না ওবামার। তার বাবা মায়ের চারখানা বিয়ের কারণে ওবামারা মোটামুটি আট ভাই-বোন। এরপর সবচেয়ে বড় পরিহাস হল, বাবা মায়ের বিচ্ছিন্নতায় নানা অঞ্চলে ছুটে যেতে হয়েছে তাকে। এরপর এসে এক পর্যায়ে ভিড়ল আমেরিকায়। এখন আসলে বলাই বাহুল্য, তার এই আগমন মিশেলের জন্য সৌভাগ্য নাকি আমেরিকার জন্য?
আট.
ওবামার আরো একটি ঘটনা আপনাকে জানতেই হবে। তার চুল কাটার ঘটনা। সপ্তাহে তিনি একবার চুল কাটান। শিকাগোর বার্বার জারিফ নামের একটি সেলুনে চুল কাটায়ে নেন। তাতে প্রতিবার তাকে ২১ ডলার দিতে হয়।
নয়.
সময় পেলেই প্রেসিডেন্ট ওবামা বিরামহীনভাবে স্ক্র্যাবল (অক্ষর নিয়ে বিশেষ ধরনের খেলা) আর তাস খেলেন।
দশ.
ওবামার স্বপ্ন ছিল স্থাপত্য প্রকৌশলী হওয়ার। ভাগ্যচক্রে হয়ে গেলেন রাজনীতিক। শুধু কি তাই! আজ ইনিই হলেন বিশ্বের প্রধান পরাশক্তি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট।
সূত্র: ম্যানএক্সপি
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৪