স্বাধীনতার পর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমাদের যা কিছু অর্জন- এর মাঝে ক্রিকেটকে প্রথম দিকেই রাখতে হবে। সেই আইসিসি চ্যাম্পিয়ন হওয়া থেকে শুরু করে বিশ্বকাপে খেলা, আইসিসির পূর্ণ সদস্য হওয়া, টেস্ট খেলা-এ সবই আমাদের অর্জন।
এসব অর্জনকে আমাদের ক্রিকেটাররা আরো সাফল্যমণ্ডিত করেছে নানান সময়ে বিভিন্ন দল গুলোকে হারিয়ে। যেমন নিউজিল্যান্ড ও জিম্বাবুয়েকে বাংলাওয়াশ করে, ওয়েস্টইন্ডিজে গিয়ে তাদেরকে টেস্ট ও ওয়ানডেতে হারিয়ে দিয়ে এবং এর সর্বশেষ সংযোজন ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ও বিদায় করে দিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ক্রিকেটের কোয়ার্টারফাইনালে জায়গা করে নিয়ে।
এই বিশ্বকাপে বাংলাদেশ কতদূর যাবে সেটা হয়তো ১৯ মার্চ জানা যাবে। তবে ইংল্যান্ডের সাথে খেলায় জেতার পর পুরো দেশে যে আনন্দ মিছিল হয়েছে সেটি কিন্তু চোখে পড়ার মতো।
এই ক্রিকেট খেলাটিই কিন্তু নানান সময়ে পুরো দেশবাসীকে একত্র করেছে। হরতাল, ধর্মঘট, রাজনৈতিক অস্থিরতা এর কোনটিই ক্রিকেট এবং এর দর্শকদের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। একটা খেলা কি করে পুরো একটি দেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারে সেটি আমাদের ক্রিকেট বিজয় না দেখলে বুঝা যেতো না।
কিন্তু আক্ষেপের বিষয় হচ্ছে, আমাদের দেশের ক্রিকেট কিংবা খেলার জন্য তেমন কোন আলাদা চ্যানেল নেই। একটা চ্যানেল হওয়ার কথা ছিল শুনেছি, কিন্তু বাস্তবে আর সেটি দেখা যাচ্ছে না। দেশে খবর, বিনোদনের চ্যানেলের অভাব নেই। অথচ সব ধরনের খেলার জন্য একটা চ্যানেলও নেই!
স্পোর্টস এর জন্য যদি আলাদা একটা চ্যানেল থাকে তাহলে নানান দিক থেকে সেটি খেলোয়াড়দের জন্যও মঙ্গলজনক। বিশেষ করে স্থানীয় পর্যায়ে যে সব খেলা হয় সেগুলোকে চ্যানেলে উঠিয়ে নিয়ে এসে দর্শকদের কাছে যেমন হাজির করা যায়, তেমনি খেলোয়াড়রাও উৎসাহিত হয় ভালো খেলার জন্য। এছাড়া নানান সময়ে বিশ্লেষণমূলক আলোচনা যেমন হতে পারে, ঠিক তেমনি খেলার চ্যানেলে অনেকেই যে কোন খেলার বেসিকগুলোও শিখে নিতে পারে নানান অনুষ্ঠানের মাধ্যমে।
নিজেদের একটা চ্যানেল থাকলে নিজেদের ধারাভাষ্যকার, বিশ্লেষকসহ অনেক দিকেই আমরা আরো মানুষ পাবো এবং বর্তমান খেলোয়াড় যারা এখন খেলছে তারা খেলা ছেড়ে দেয়ার পর স্পোর্টস চ্যানেলে নানা সময় ভূমিকাও রাখতে পারেন, তাদের কাজেরও একটি ক্ষেত্র তৈরি হবে, আর আমাদের বর্তমান প্রজন্মও খেলাধুলার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠবে।
আমিনুল ইসলাম: গবেষক, tutul_ruk@yahoo.com
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩২ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০১৫