গত ১৩ মার্চ বিএনপির ডাকা অবরোধের ৬৭তম দিনে বিএনপি চেয়ারর্পাসন খালেদা জিয়া তার গুলশান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। নির্ধারণ সময়ের ৪৫ মিনিট পর তিনি প্রায় ৪২ মিনিট বক্তব্য রেখেছেন।
গত ৬ জানুয়ারি থেকে ২০ দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া অবরোধ ডেকেছেন, এর ক’দিন পর এর সাথে যোগ হয় হরতাল। খালেদা জিয়া বলেছেন, যৌক্তিক পরিণতি পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। আরো অনেক অনেক কথা বলেছেন। তার বক্তব্যে স্ববিরোধিতার অনেক উদাহরণ রয়েছে। এসব নিয়ে অনেক ব্যাখ্যা দেয়া যেতে পারে। আওয়ামী লীগ তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এবং বক্তব্য প্রত্যাহারের আহবান ও মিথ্যাচারের নিন্দা জানিয়েছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এক কথায় বলেছেন,‘তিনি যা বলেছেন তা তো 'লাইন বাই লাইন' মিথ্যাচার। যার জবাব দিতে গেলে বহু সময় লাগবে। ’ এই এক বাক্যে আসলে খালেদা জিয়ার পুরো বক্তব্যের সুন্দর ও যথার্থ জবাব হয়ে যায়। আরো বলেছেন, রক্তাক্ত বাংলাদেশে সন্ত্রাসীদের সাথে কোন সংলাপ হবে না। প্রধানমন্ত্রীও একই কথাই বলেছেন।
বেগম খালেদা জিয়া সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্ন নেননি এবং উত্তরও দেননি। শুধু শেষে এক বাক্যে বলেছেন, তিনি জনসমর্থন পেয়েছেন। কিন্তু কথা হ’ল, এর ব্যাখ্যা কি বা কিভাবে তিনি টের পেলেন যে জনগণ তার সাথে রয়েছে। এর কোনো প্রমাণ কেউ কি দেখাতে পারবে? ১৪ মার্চ মানে তার বক্তব্যের পরদিন ২ হাজারের বেশি কলেজের লক্ষাধিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক তবে কেন প্রতিবাদ জানালেন হরতাল অবরোধের বিরুদ্ধে? যদি জনগণের মন পেতেন তবে লক্ষাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী খালেদা জিয়ার বক্তব্যের পরদিন পথে নেমে তাদের শিক্ষার কাযর্ক্রম ব্যাহত হবার প্রতিবাদ জানাতেন না।
লক্ষ্যণীয় ব্যাপার হল, দুই মাসাধিক দিন ধরে চলা বিএনপির অবরোধ-হরতালে বিএনপি জামাতের লক্ষাধিক নেতাকর্মী কিন্তু রাজপথে এক বারের জন্যও নামেনি কিংবা কোনো বড় মিছিল করতে পারেননি। শুধু আরাফাত রহমান কোকোর জানাজায় অংশ নিয়ে আবার লুকিয়ে পড়েছে। বলে রাখা ভাল, গ্রেফতারের ভয়ে কিংবা পুলিশি নির্যাতনের ভয় করলে আন্দোলন সংগ্রাম করা যায় না। আর বিশ্বের কোথাও আন্দোলন সংগ্রামে পুলিশ সহায়তা করে না; বরং দমনই করে, সে আমেরিকা বা ব্রিটেনই হোক। সবার হয়ত মনে আছে ‘অকুপাই ওয়ালস্ট্রিট” মুভমেন্টের সময় কেমন বেধড়ক পিটিয়েছিল মার্কিন পুলিশ আন্দোলনকারীদের। ব্রিটেনে দাঙ্গার সময় দাঙ্গাকারীদের কাউকে ছাড়া হয়নি, মাফ পায়নি মিশরের মুসলিম ব্রাদারহুডের কর্মীরা, তাদের বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে সরকার।
অবরোধ হরতালে সাধারণ মানুষ মারা যাচ্ছে, বাসে ট্রাকে রেলে লঞ্চে আগুন দেয়া হচ্ছে কিন্তু এসবই করা হচ্ছে রাতের অন্ধকারে, চোরাগোপ্তা হামলায়। গণতান্ত্রিক আন্দোলন কখনও রাতের আঁধারে বাসে ট্রাকে পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ বা যানবাহন পোড়ানো হতে পারে না; তেমনি চোরাগোপ্তা হামলাও গণতান্ত্রিক কর্মসূচির মধ্যে পড়ে না। এ নিয়ে দ্বিমত বা ভিন্নমত কিংবা কোলেটেরাল ডেমেজ(collateral damage) বলা গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা নয় বরং নির্জলা মিথ্যাচার। কোথাও রাজপথে বিএনপি জামায়াতের লোকজন নামেনি কিংবা শান্তিপূর্ণ কোনো কর্মসূচি পালন করেনি। তারা লুকিয়ে রয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে দুটি রাজনৈতিক দল একসাথে মিলে ১৭ ফেব্রুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করেছে, এমনকি একটি রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের জাতীয় কাউন্সিলও হয়েছে। সেখানে তো কোন বাধা দেয়া হয়নি। অথচ বিএনপি জামায়াতের নেতাকর্মীরা কয়েকজন রাস্তায় নামলেই ককটেল মারে, বোমা ফাটায়। ককটেল, পেট্রোল বোমা মেরে জনগণকে শুধু আতঙ্কিত করা যায় কিন্তু জনগণের আস্থা অর্জন করা যায় না। কেননা এই ঘৃণ্য হরতাল অবরোধের ক্ষতির শিকার হচ্ছে নিরীহ সাধারণ মানুষ। গরীব মানুষ কর্মহীন হচ্ছে, মায়ের কোল খালি হচ্ছে। তাহলে খালেদা জিয়া কিভাবে জনসমর্থন পেলেন? নাকি নিজেকে নিজে মিথ্যে প্রবোধ দিলেন?
বিএনপি জামাতের কোন পর্যায়ের নেতাকর্মী বর্তমানে সক্রিয় তা কেউ জানে না, দলের লোকজনও জানে না, শুধু রাতে কিংবা অন্ধকারে চোরাগোপ্তা হামলা হয়। খালেদা জিয়া মানুষ হত্যার দায় নিজে এড়াতে পারেন না; কিন্তু তিনি সরকারে ওপর দোষ চাপিয়ে বললেন, সরকারই নাকি এসব করছে,। কিন্তু সত্য বলে অন্য কথা। মিডিয়া বলে, দায় বিএনপি-জামায়াতেরই। আসুন তবে পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে পরিসংখ্যান দেখি:
• এ পর্যন্ত বোমা বানাতে গিয়ে ঢাকার নিউমার্কেট থানার ছাত্রদল সভাপতি বাপ্পী ও হাজারীবাগে যুবদল কর্মীসহ ৩ জন নিজের বোমায় আহত হয়ে পরে মারা যায়।
• বোমা বানানোর সময় কিংবা বোমা হামলার সময় বিএনপি জামাতের ৫৪০ জন নেতাকর্মী জনগণ বা পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে।
• বোমা বা ককটেল হামলা কিংবা হামলার চেষ্টাকালে ধৃত হয়ে বিএনপি জামাতের ৬২ জন নেতাকর্মী গণধোলাই ও গণপিটুনির শিকার হয়েছে।
এসব তথ্য যারা নিয়মিত মিডিয়ায় চোখ রাখেন তাদের কারো অজানা নয়।
• আরো কিছু উদাহরণ: রংপুরে বোমা তৈরি করতে গিয়ে বিস্ফোরণে জেলা যুবদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ফিরোজ সরকার বিপ্লবের (২৮) ডান হাতের কবজি উড়ে গেছে। এছাড়া তার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম হয়েছে। (দৈনিক ইত্তেফাক ১১ মার্চ, ২০১৫ ইং)
• গাজীপুরে বোমা বানাতে গিয়ে বিস্ফোরণে শনিবার এক শিবিরকর্মীর হাতের কব্জি উড়ে গেছে। মহানগরের চান্দনা হাই স্কুল এ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষা চলাকালে চকোলেট বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। (দৈনিক জনকন্ঠ, তারিখ: ০১/০৩/২০১৫)
• দেশ অচলের পরিকল্পনার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক এনামুল কবির। (দৈনিক ইত্তেফাক ,২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫)
• বন্দরনগরী চট্টগ্রাম এবং ঢাকায় বিপুল পরিমাণ বোমা ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে পুলিশ। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের দুর্গম পাহাড় থেকে উদ্ধার করা হয় পেট্রোলবোমা, শক্তিশালী ককটেল, এলজি ও গোলাবারুদ। পুলিশী অভিযানে আটক হয়েছে ছাত্রশিবিরের ৩ কর্মী। গভীর রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৩ ছাত্রদল নেতাকে আটক করে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় বিস্ফোরক ভর্তি বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল, ৫৮টি ককটেল, ১টি পাইপবোমা, ৪৮টি পেট্রোলবোমা, ৫০০ গ্রাম সালফার পাউডার এবং নাশকতার কাজে ব্যবহৃত অন্যান্য সরঞ্জাম। (দৈনিক জনকন্ঠ, তারিখ: ০৯/০৩/২০১৫)
• মহানগর বিএনপির সদস্য নবী উল্লাহ নবীর নির্দেশেই রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোল বোমা ছোড়া হয়। ঘটনার দু'দিন আগে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার অ্যাপোলো হাসপাতালের পাশের একটি বাসায় এক বৈঠকে চূড়ান্ত করা হয় হামলার ছক। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন ও মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল। যাত্রাবাড়ী এলাকার জনি নামে এক ছাত্রদল নেতাকে মাঠ পর্যায়ে হামলার সমন্বয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এনিয়ে বিভিন্ন সভায় সপু, নেওয়াজ, নীরব, সালাহউদ্দিন টুকু, আজিজুল বারী হেলাল, ইসহাক সরকার, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন। দলের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশ আছে, বড় ধরনের কিছু ঘটাতে হবে। ' জনি বলেন, 'বড় ঘটনা ঘটাব, যাতে দেশ কেঁপে ওঠে। ' জনি শহীদুল্লাহকে বলেন, 'তোকে টাকা ও পেট্রোল দিচ্ছি। তুই লোক ঠিক কর। ' এরপর শহীদুল্লাহকে নিয়ে যাত্রাবাড়ীতে ফেরত আসেন জনি। (০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, দৈনিক সমকাল)।
এসব নিয়ে আরো অনেক উদাহরণ দেয়া যাবে এবং তালিকাও দীর্ঘ হবে আর এসবে এই প্রমাণ হয় বিএনপি জামায়াতই সন্ত্রাস সহিংসতা করছে। আরো প্রমাণ হয় বিএনপি-জামায়াত যতোই বলুক তাদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণ তা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। শান্তিপূর্ণ হলে মানুষকে আগুনে পোড়ানো কেন? এমনকি বিশ্ব সম্প্রদায়ও এই সহিংসতার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে এবং খালেদা জিয়াকে সহিংসতার পথ ছাড়তে বারবার অনুরোধ করছে। বিএনপি যদি আন্দোলনই করত তবে সন্ত্রাস সহিংসতা বন্ধের জন্য তাদের অনুরোধ করা হতো না। আজ বাংলাদেশ রক্তাক্ত হতো না। বার্ন ইউনিট মানুষের কান্নায় ভারী হতো না।
পাশাপাশি বিএনপির কর্মসূচীতে যত লোক বাহ্যত অংশগ্রহণ করেছে তার চেয়ে বেশি মানুষ বিএনপি জামায়াতের অবরোধ হরতালের প্রতিবাদে রাজপথে শান্তিপূর্ণভাবে অংশ নিয়েছে-জনগণ সরাসরি ২০ দলীয় জোটের কর্মসূচি বন্ধে রাজপথে প্রতিবাদ জানিয়েছে।
বিএনপি জামাতের নেতারা যে জাতির সাথে প্রতিনিয়ত প্রতারণা করছেন সে বিষয়ে এখানে বলা প্রয়োজন। হরতাল অবরোধ দিয়ে দেশের অর্থনীতির ক্ষতি করলেও নিজেদের ব্যবসা বাণিজ্য ও প্রতিষ্ঠান তারা চালু রেখেছে। বিএনপি জামায়াতের নেতাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান্ একদিনের জন্যও বন্ধ হয়নি, ঠিকই তাদের আয় রোজগার চলছে। উদাহরণ হিসেবে এখানে সংবাদপত্রের খবর অবশ্যই উল্লেখ করতে হয়:
• BNP-Jamaat businesses defying hartal, blockade ( The daily observer, first page, 19 February, 2015, http://www.observerbd.com/2015/02/19/73516.php#sthash.LViZzyOE.dpuf )
• বিএনপি-জামায়াত নেতাদের বাস চলছে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও খোলা। (১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, দৈনিক সমকাল, শেষ পৃষ্ঠা)
• হরতালে সব চালু বিএনপি নেতাদের। (দৈনিক কালের কন্ঠ, ১২ মার্চ, ২০১৫, প্রথম পৃষ্ঠা)
বিএনপি জামায়াত জোট এতদিন ধরে অবরোধ হরতাল দিয়ে কার্যত কোনো সফলতা পায়নি। অনেক মিডিয়া যেগুলো তাদের পন্থী বা ‘সুশীল মিডিয়া’ বলে পরিচিত তারাও খবর প্রচার্ ও প্রকাশে বাধ্য হচ্ছে যে, হরতাল অবরোধ দিয়ে দাবি আদায় সম্ভব নয়। যদিও তাদের দাবির কোনো যৌক্তিকতা নেই। এইসব কর্মসূচি এখন আর কার্যকর নয় বরং অকার্যকর হয়ে গেছে। বিএনপির নেতাকর্মীরাও হতাশ, তারা জানে না কোন পথে হাঁটছে তারা, কোথায় তাদের গন্তব্য! আর জনগণ কখনই বিএনপিকে এসবে সমর্থন করেনি বরং প্রতিবাদই করেছে।
জনগণ বিএনপি জামায়াতের অযৌক্তিক হরতাল অবরোধের প্রতিবাদ খুব ঠান্ডা ও শান্তিপূর্ণভাবে করছে। স্বাভাবিক কর্মজীবনে অংশ নিচ্ছে, ঢাকাসহ বড় বড় শহরগুলোতে গাড়ি ও যানবাহনের যানজট হচ্ছে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখছে। আতংকগ্রস্ততা কাটিয়ে দূরপাল্লার যানবাহনে চড়ে প্রয়োজনীয় গন্তব্যে যাচ্ছে। সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে, আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে।
বিএনপি জামায়াতের এত প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি শক্তিশালী রয়েছে। রাজস্ব আদায়, রফতানি আয় ও রেমিটেন্স বেড়েছে, কমেছে সরকারি ব্যয় ও মূল্যস্ফীতিও। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের হারও বেড়েছে প্রায় ১০ শতাংশ; তবে এটা সত্য, আমাদের আমদানিব্যয় কিছুটা বেড়েছে যার জন্য বিএনপি- জামায়াতই দায়ী। বিভিন্ন গণমাধ্যম (সূত্র- দৈনিক সংবাদ ৯ মার্চ ২০১৫) ও সরকারি সূত্র থেকে জানা যায়, বিএনপি-জামায়াত জোটের লাগাতার অবরোধ ও হরতালের মধ্যেও দেশের রপ্তানিপণ্য গত বছরের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। এ মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে গত বছরের জানুয়ারি চেয়ে প্রায় ৫ শতাংশ বেশি রপ্তানি আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের রপ্তানি কনটেইনার হ্যান্ডলিং গত বছরের তুলনায় ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি গত দুই মাসে রাজনৈতিক অস্থিরতা মধ্যে রপ্তানি পণ্য জাহাজীকরণ বেড়েছে ৪ শতাংশ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি), আইসিডি ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের হিসাবে এই তথ্য জানা গেছে। সহিংসতা ও আতঙ্ক না থাকলে এ সময় রপ্তানি আয় আরও বেশি বৃদ্ধি পেত বলে মনে করছেন রপ্তানিকারক ও অর্থনীতিবিদরা।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সংস্থাটি সম্প্রতি জানিয়েছে,’চলতি অর্থবছর শেষে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশ অর্জন হতে পারে। ‘ আইএমএফ প্রতিনিধি আরো বলেন, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশের পরিবহন ও সেবাসহ বিভিন্ন খাত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগ ও উন্নয়ন প্রবৃদ্ধির জন্যও এটা বড় বাধা। (দৈনিক ইত্তেফাক রিপোর্ট ১১ মার্চ, ২০১৫ ইং)। বিএনপি জামায়াতের হরতাল অবরোধ থাকলেও আমাদের সামষ্টিক প্রবৃদ্ধি অর্জন হতে পারে ৬ শতাংশের বেশি।
বাংলাদেশের জনগণ এই অযৌক্তিক অবরোধ হরতাল উপেক্ষা করেই সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটকে এই অর্থনীতির ক্ষতি করা, মানুষ পোড়ানো, নারী-শিশু পোড়ানো, বাসে ট্রাকে রেলে লঞ্চে আগুন দেয়ার মত ঘৃণ্য কর্মের জন্য অবশ্যই নেতিবাচক ফল ভোগ করতে হবে। বিএনপি যদি সত্যিই জনগণের জন্য রাজনীতি করে তবে অচিরেই এসব থেকে বেরিয়ে এসে শান্তিপূর্ণ সভা সমাবেশের করার প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। সহিংসতা ছাড়তে হবে। এটাই হতে পারে তাদের যৌক্তিক উত্তরণের পথ। নয়তো ইতিহাস তাদের কোথায় নিয়ে ফেলবে তা তারা কল্পনাও করতে পারবে না।
আশরাফ সিদ্দিকী বিটু, পরিচালক সিআরআই ও রাজনৈতিক কর্মী।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০১৫