গত বছরের নভেম্বর মাসের কথা। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এইচএম মাহমুদ আলীর সঙ্গে নয়াদিল্লিতে একান্ত সাক্ষাতে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা করেছেন বঙ্গবন্ধু।
এবার বাংলাদেশ সফরে আসার ঠিক পূর্ব মুহূর্তে নরেন্দ্র মোদি তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দক্ষিণ এশিয়ার শক্তি এবং গণতন্ত্রের স্তম্ভ হিসেবে অভিহিত করেন।
লেখার সঙ্গে সংযুক্ত ছবিটি ভালো করে লক্ষ্য করে দেখুন, একটা বিষয় খুব সহজেই বোঝা যাচ্ছে যে, মোদিজি মাথা নিচু করে পরম ভক্তিভরে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাচ্ছেন বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে।
আমাকে যদি প্রশ্ন করা হয়, কেন এই ভক্তি সহকারে শ্রদ্ধাঞ্জলি? আমি আমার দৃষ্টিকোণ থেকে বলতে পারি, বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলাদেশের নেতা নন। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা বিশ্বের সকল নিপীড়িত মানুষের মুক্তির সনদ। পৃথিবীর ইতিহাসে যারা একটি দেশ একটি জাতিকে এককভাবে নেতৃত্বের গুণ দিয়ে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু তাদের মধ্যে শীর্ষস্থানীয়।
বাংলাদেশিরা তাই আজও হাটে, ঘাটে-মাঠে বজ্রকণ্ঠে উচ্চারণ করে যান, ‘এক নেতার এক দেশ, মুজিবের বাংলাদেশ’।
আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতের রাজনৈতিক দল-মত নির্বিশেষে সবাই তাদের জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীকে সম্মান করেন। এরই ধারাবাহিকতায় দেখেছি, ভারতবাসী বঙ্গবন্ধুকে বাংলাদেশের জাতির জনক হিসেবে জানেন এবং বাংলাদেশের জন্য মহাত্মা গান্ধীর পর্যায়ের নেতা হিসেবেই শ্রদ্ধা করেন।
আক্ষেপ এটাই যে, আমার দেশের কিছু বিপথগামী মানুষ হিরা পেয়েও চিনতে পারছে না! যে মোদির সাক্ষাৎ পাওয়ার জন্য খালেদা জিয়ার এতো চেষ্টা, প্রচেষ্টা, এতো আক্ষেপ- সেই মোদি বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে অবনত মস্তিষ্কে শ্রদ্ধা জানিয়ে যান। আর বিপরীতে খালেদা জিয়া ১৫ আগস্টের কালো দিনে ভুয়া জন্মদিন পালন করেন!
নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদির কাছে আমার অনুরোধ, আপনি খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতে বলে যাবেন, তিনি যেন ১৫ আগস্ট ভুয়া জন্মদিন পালন থেকে বিরত থাকেন এবং কেক কেটে জাতির পিতাকে অসম্মান করার সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসেন।
আমি কামনা করি, রাজনৈতিক এ শিষ্টাচারগুলোর ব্যাপারে যেন খালেদা জিয়া আপনার কাছ থেকেই দীক্ষা নেন। তাহলে, আমাদের দেশের রাজনীতির গুণগত মান কিছুটা হলেও পরিবর্তিত হবে বলে আমার বিশ্বাস।
মোদিজি, বাংলাদেশের মানুষের শ্রদ্ধার আসনেই আপনার স্থান। কারণ, যিনি বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসেন আমার দেশের মানুষও তাকে ভালোবাসেন। যিনি বঙ্গবন্ধুকে সম্মান করেন, শ্রদ্ধা করেন, আমার দেশের মানুষও তাকে সম্মান করেন, শ্রদ্ধা করেন।
এইচ এম আল-আমিন আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ
বাংলাদেশ সময়: ১২১৯ ঘণ্টা, জুন ০৭, ২০১৫
এএসআর/