হাঁটি হাঁটি পা পা করে ‘বাংলানিউজ’ তার স্বর্ণালী পাঁচটি বছর পার করেছে। অপার সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের স্বপ্ন নিয়ে পা রেখেছে ৬ষ্ঠ বছরে।
একজন মফস্বলের সাংবাদিক, তাও আবার একেবারে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের একটি উপজেলা পাথরঘাটার। কি লেখার আছে, একজন মফস্বল সাংবাদিকের কি লেখার থাকে বা কতটুকু লিখতে পারেন? কিন্তু না; দিন পাল্টেছে, সেই সঙ্গে পাল্টেছে লেখার ধরণ। আর সংবাদ লেখায় মফস্বল সাংবাদিকদের মান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে বাংলানিউজ।
সংবাদ-বিনোদন-সারাক্ষণ প্রতিষ্ঠানটির এ স্লোগানের শতভাগ বাস্তবতা উপলব্ধি করে পাঠক নন্দিত হয়েছে বাংলানিউজ। নন্দিত হয়েছি আমিও। বিভিন্ন হাউজ থেকে মফস্বল সাংবাদিকদের সঙ্গে খারাপ আপজরণ করা হয়- এমন কথা শুনলে খারাপ লাগতো, মনে হতো হায় মফস্বল সাংবাদিকতা আসলে কি তাদের কাছে তুচ্ছ? কিন্তু এ ক্ষেত্রে বাংলানিউজ ব্যতিক্রম। বাংলানিউজ খারাপ আচার নয়, শুধু সহযোগিতাই করেন। কারণ তারা জানেন মফস্বল সাংবাদিকদের নিউজ পাঠাতে বেগ পেতে হয়, সমস্যা রয়েছে কিছু কিছু ক্ষেত্রে।
বাংলানিউজ একটি পাঠশালা: ছোট মানুষ হলেও অনেক পত্রিকায় সাংবাদিকতা বা লেখালেখি করার সুযোগ হয়েছে আমার। কিন্তু ওই সব পত্রিকায় (তাদের ছোট করে দেখছি না) নিউজ পাঠালে ছাপানোর যোগ্য হলে ছাপতো। কিন্তু তাদের কাছ থেকে তেমন কিছু প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শিখতে পারিনি। কিন্তু বাংলানিউজ এক্ষেত্রে একবারেই ব্যতিক্রম। আমি বলবো বাংলানিউজ একটি পাঠশালা। যা হাতে খড়ি থেকে শুরু করে হাতে কলমে অবিরাম শিক্ষা দেয়। অফিসে বসে ফোনে, মেইলের মাধ্যমে। প্রতিনিয়ত আপডেট তথ্য বাংলানিউজের মেইল থেকে আমাদের মেইলে আসে। কিভাবে নিউজ দিবেন, নিউজের ধরণ কিভাবে হবে, বেশি বেশি তথ্য দিবেন, ছবিও থাকতে হবে অনেক...।
বাংলানিউজ আমার বন্ধু: বন্ধুতো বন্ধুর মতোই হতে হয়; আচার-আচরণ থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রে। আমি মনে করি বাংলানিউজ তথা ডেস্ক থেকে শুরু করে সব পর্যায় কর্মকর্তা মফস্বল সাংবাদিকদের একমাত্র মফস্বল করেসপন্ডেন্ট হিসেবে ট্রিট করে না, ভাবে তাদের সহকর্মী বন্ধু। সেই হিসেবে মফস্বল সাংবাদিকদের সঙ্গে বন্ধুসুলভ আচরণ করে থাকেন। সম্প্রতি এরকম প্রমাণও পেলাম। এই রোজায় একদিন বাংলানিউজ অফিসে গেলাম। সেখানে একজন সফস্বল প্রতিনিধি হিসেবে কেউ আমাকে না দেখে সহকর্মী হিসেবে গ্রহণ করেছে। সন্ধ্যা সবার সঙ্গে একই রুমে এক টেবিলে ইতফার করলাম। এটিইতো বন্ধুর পরিচয়। একজন মফস্বল সাংবাদিক আর ডেস্কের সাংবাদিকের সঙ্গে এরকমই সম্পর্ক হওয়া উচিত। তাই বলবো বাংলানিউজ আমার বন্ধু।
আমাদের সঙ্গী হোন আপনিও: ‘আমাদের সঙ্গী হোন আপনিও’। ঠিক কথার সঙ্গে কাজের মিল রেখেছে বাংলানিউজ। একটি গণমাধ্যমের প্রতিনিধির নামে একটি নিউজ প্রচার বা প্রকাশ হলে ওই প্রতিনিধির অবশ্যই ভালো লাগে। বাংলাদেশের সব পত্রিকা বা গণমাধ্যমে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর সংখ্যায় বা প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে দেশের বিশিষ্ট শিল্পপতি, শিক্ষানুরাগী, সাংবাদিক, গবেষকসহ স্বনামধন্যদের লেখা প্রচার বা প্রকাশ করা হয়। কিন্তু কোনো প্রতিনিধির লেখা চাওয়া হয়েছে বা প্রচার বা প্রকাশ করা হয়েছে তা হয়তো একটিও নেই। এখানেও বাংলানিউজ ব্যতিক্রম।
বাংলানিউজ পথিকৃত : বর্তমানে শীর্ষে বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। জাতীয় পর্যায়ই নয় এটি এখন মফস্বল সংবাদগুলো দ্রুত প্রকাশ করায় এখন পাঠকের নজরে রয়েছে। কোথাও কিছু ঘটলেই এখন পাঠক সবার আগে বাংলানিউজে চোখ রাখেন। বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকায় উপকূলীয় কেন্দ্রিক নিউজগুলো বাংলানিউজে দেখেই অনেক গণমাধ্যম তা কপি করে প্রচার বা প্রকাশ করে থাকেন।
তাইতো এত নিউজ দিই বলেই আমরা অনলাইন। সব নিউজ দিই বলেই তো আমরা সেরা। কাজ করলে ভুল হবেই, ভুল-শুদ্ধ নিয়েই তো ভাই আমরা সবসময়, শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষায়, শরৎ আর হেমন্তে, রোদ্দুরে আর ঝড়- জ্বলোচ্ছাস, সিডর-আইলা আর মহাসেনের মতো দুর্যোগ উপেক্ষা করে আপনাদের পাশে আছি। ভাই, আমরা বাংলানিউজ, আমরা ভুল হলে স্বীকার করি, কারও প্রাপ্য দিতে কুণ্ঠাবোধ করি না। নিজেকে সত্য প্রকাশ সংবাদমাধ্যম বলে দাবি করব। পথিকৃৎকে অস্বীকার করে উল্লাস করব, এমন সংকীর্ণতায় বাংলানিউজ নেই। আমরা একে অপরের আপন, সুখ দুঃখে এক সঙ্গে এ জন্যইতো বাংলানিউজ আমার প্রাণ আমার বন্ধু!
লেখক: পাথরঘাটা উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, সাংবাদিক ও স্থানীয় সরকার বিষয়ে গবেষক।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৬ ঘণ্টা, জুলাই ০২, ২০১৫
এসএইচ